রৌমারীতে বসতঘর ভাংচুর করে কবরস্থানের জমি উদ্ধার করল গ্রামবাসী
সাখাওয়াত হোসেন, রৌমারী (কুড়িগ্রাম):
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে এক কবরস্থানের বেদখল হওয়া ১৮ শতাংশ জমি উদ্ধার করল দুই গ্রামবাসী। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের টাপুরচরগ্রাম—বালুরগ্রাম কবরস্থানের জবর দখল হওয়া জমি উদ্ধার করেন গ্রামবাসী। এদিন সকালে টাপুরচরগ্রাম—বালুগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গ্রামবাসীরা জমি উদ্ধারের বিষয়ে আলোচনা সভা করেন। ওই সভায় কবরস্থানের জমি বেদখলকারী মাহফুজল হক কে ডাকেন গ্রামবাসী। কিন্তু তিনি (মাহফুজল হক) আলোচনা সভায় উপস্থিত না হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে গ্রামবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে কবরস্থানের অবৈধ ভাবে দখল হওয়া জমির ওপরে বসতঘরগুলো ভাংচুর করেন। এছাড়াও গাছ, বাঁশ কেটে জমি উদ্ধার করেন। এদিকে ঘটনার সংবাদ পেয়ে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। পরে গ্রামবাসীর অভিযোগ শুনার পর ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ফেরত যায়।
গ্রামবাসী জানায়, উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের টাপুরচরগ্রাম—বালুরগ্রাম কবরস্থানের নামে ১ একর ৭১ শতাংশ জমি রেকর্ড রয়েছে। এ সম্পতির মধ্যে ১৮ শতাংশ জমি খাস দেখিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে অর্থ দিয়ে নিজ নামে বন্দোবস্ত করে নেন মাহফুজলসহ তাঁর অন্য ভাইয়েরা। তাদের দীর্ঘদিন ধরে জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন গ্রামবাসী ও কবরস্থান কতৃর্পক্ষ। কিন্তু কবরস্থানের জমি ছেড়ে দেননি মাহফুজল হকসহ তার অন্য ভাইয়েরা। পরে স্থানীয় তহশিলদার ও এসিল্যান্ডকে জমি উদ্ধারের বিষয়ে লিখিত ভাবে অভিযোগ দেন গ্রামবাসী ও কবরস্থান কতৃর্পক্ষ।
গ্রামবাসী মো. সাইদুল ইসলাম স্বাধীন, মোখলেছুর রহমান, আশরাফুল ইসলাম মিঠু ও মো. এনামুল হক অভিযোগ করে বলেন, জমি উদ্ধারের বিষয় অভিযোগ তদন্ত করলেও তারা গোপনে ওই ভূমিদুস্য মাহফুজল হকের কাছে বড় অংকের টাকা নেন। পরে এ বিষয়ে তাদের কিছুই করার নেই বলে গ্রামবাসী এবং কবরস্থান কতৃর্পক্ষে জানিয়ে দেন। পরে শনিবার দুই গ্রামের মানুষকে মাইকিং করে ডেকে এনে জমি উদ্ধার করা হয়।
এদিকে দখলকারীর পবিরার মাহফুজল হক, সহিদুর রহমান, হাসনা বানু, সাহিদা পারভীন বলছেন অন্যায় ভাবে আমাদের ঘরবাড়ি, গাছপালাসহ ভাংচুর করছেন। কবরস্থানের জমি সীমানার চেয়ে ভিতরে ঢুকে তারা ভাংচুর চালায়। থানাপুলিশের কাছেও অভিযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ এসে কিছু না বলে চলে যান। পরে আমাদের ঘরবাড়িগুলো ভাংচুর করেন গ্রামবাসী।
এ বিষয়ে রৌমারী সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. রাসেল আহমেদ মুঠোফোনে বলেন, ঘরবাড়ি ভাংচুরের বিষয় আমি জানিনা। কেউ এ বিষয়ে বলেননি। তবে টাপুরচর—বালুরগ্রাম কবরস্থানের জমি বেদখল বিষয়ে তদন্ত করে বন্দোবস্ত বাতিলের জন্য জেলায় প্রেরণ করা হয়েছে। তবে উচ্ছেদের নামে ঘরবাড়ি ভাংচুর করা ঠিক হয়নি।
রৌমারী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আল হেলাল মাহমুদ মুঠোফোনে জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রামবাসীদের ঘরবাড়িতে ভাংচুর চালাতে নিষেধ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভাংচুর করছে কি না তা জানিনা।