ভোদল হত্যাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে- রংপুর পুলিশ সুপার
মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন বলেছেন, ভোদল হত্যাকান্ডের ঘটনা অতন্ত্য দুঃখজনক। আমরা ইতিমধ্যেই ভোদলকে হত্যার ঘটনায় মূল মাষ্টার মাইন্ডসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। হত্যাকারীদের দেয়া তথ্যমতে পুলিশ ভোদল হত্যাকান্ডের পর তার চুরি হওয়া মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেছে। এসময় তিনি স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের সন্তানরা কখন কি করছে সেটার বিষয়ে নিয়মিত খোঁজ খবর নিবেন। জুয়া, মদ, নেশাসহ প্রেমঘটিত বিষয়ে জড়িয়ে পড়ছে কি-না সেদিকে একটু বিশেষ নজর দিবেন এবং তাদের মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং দেশপ্রেমের সৃষ্টি করবেন। যেকোনো অপরাধ প্রবনতা কমাতে তিনি মিঠাপুকুর থানা পুলিশের সহযোগিতা সহ প্রয়োজনে তার কাছে যোগাযোগের পরামর্শ প্রদান করেন।
একই সঙ্গে তিনি স্থানীয় লোকজনকে বলেন, রংপুর জেলায় পুলিশ বাহিনীতে যত পুলিশ সদস্য আছে তাঁরা আপনাদের এখন থেকে নিয়মিত ছালাম প্রদান করবে। আপনারা যদি দেখেন কোনো পুলিশ সদস্য আপনাদের ছালাম দিচ্ছেনা তাহলে থানা সংশ্লিষ্ট হলে ওসিকে এবং জেলা সংশ্লিষ্ট হলে আমাকে জানাবেন। তিনি আরও বলেন, পুলিশ আপনাদেরই সন্তান, আপনাদের ভাই। মানুষের জানমাল এবং দেশে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের বিকল্প আর কিছুই নেই।
রংপুরের মিঠাপুকুরে চাঞ্চল্যকর মোক্তারুল ইসলাম ভোদল হত্যাকান্ডের ঘটনায় ভোদলের বাড়ি মিঠাপুকুরের পায়রাবন্দ ইউনিয়নের অভিরাম নুরপুরে পরিবারের সঙ্গে দেখা করে রংপুর জেলা পুলিশ সুপার মোঃ শরীফ উদ্দিন এসব কথা বলেন।
এসময় তার সঙ্গে ছিলেন মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ সহ মিঠাপুকুর থানার পুলিশ সদস্যরা। ভ্যাপসা গরম আর উত্তপ্ত কড়া রোদে প্রায় ঘন্টাব্যাপী মৃত ভোদলের বাড়িতে অবস্থান নিয়ে মৃতের পরিবার এবং স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন পুলিশ সুপার।
এরপূর্বে সকাল আনুমানিক ৯ টার সময় যেখানে ভোদলকে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে এবং জবাই করে হত্যা করা হয়েছিলো সেই স্থান পরিদর্শন শেষ ৯টা ২০ মিনিটে তিনি মৃত মোক্তারুল ইসলাম ভোদলের বাড়িতে উপস্থিত হন। সেখানে তিনি এক উঠান বৈঠকে ভোদল হত্যাকান্ডের ঘটনা সম্পর্কে ব্রিফ করেন এবং সামাজিক অপরাধ প্রবণতা বাড়ার সম্ভাব্য বিষয় সমূহ নিয়ে স্থানীয়দের বিভিন্ন বিষয়ে মতামত প্রদাণ করেন। একই সঙ্গে ওই এলাকায় অপরাধ সংঘটিত হবার সম্ভাব্য কারন সমূহ চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন।
মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, আপনারা সকলে একটু এগিয়ে আসুন। আপনারা সবাই এগিয়ে আসলে আমরা আপনাদের এলাকায় মাদক,জুয়া,ছিনতাই বন্ধ করতে পারবো। আপনাদের যখন যা অভিযোগ আর আইনি সহযোগিতা লাগবে,সরাসরি আমাদের জানান।
উল্লেখ্য যে, গত ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর রাত আনুমানিক সাড়ে এগারোটার সময় মিঠাপুকুর উপজেলার বলদিপুকুর পল্লী বিদ্যুৎ সংলগ্ন ভোদলের জবাই করা মরদেহ উদ্ধার করে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ভোদলের খালাত ভাই তহিদুল ইসলাম এবং মামাত ভাই আল-আমিনকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে ভোদলের ব্যবহৃত পালসার মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে,সুদের টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে ভোদলকে জবাই করে হত্যা করে অভিযুক্তরা। এদিকে ভোদল নিখোঁজের একঘন্টা পরেই থানায় জিডি থেকে রাস্তার ধারে মরদেহ দেখা সহ দাফনে অংশ নিয়ে নাটক করে নিজেদের আড়াল করে রেখেছিল খুনিরা।