পীরগঞ্জে গ্রামীণ অবকাঠামোর ব্যহাল দশা মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে
আজাদুল ইসলাম আজাদ, পীরগঞ্জ রংপুর:
সামান্য বৃষ্টিতে চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায় পীরগঞ্জ উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নের বেশ কিছু কাঁচা রাস্তা । টানা বর্ষণের ফলে গ্রামীণ রাস্তার বেশির ভাগই খানা-খন্দে ভরে গেছে। এর ফলে গ্রামীণ জনপদ প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
শনিবার সরেজমিনে কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, গ্রাম পল্লীর কাচা রাস্তাগুলোর বেশি ভাগই খানা-খন্দে ভরে গেছে। পাকা সড়কেরও অনেক জায়গার পিচ উঠে মাটি ও বৃষ্টির পানির সাথে মিশিয়ে কাদায় পরিণত হয়েছে। খানা-খন্দের মধ্যেই চলছে যানবাহন ও পথচারী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার গ্রামীণ জনপদের প্রায় কাঁচা রাস্তাগুলোই খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রী, পথচারী এবং চাকরিজীবীর লোকজন। জনপদে চাকরিজীবী থেকে শুরু করে স্কুলগামী ছাত্র ছাত্রীদের অনেকটাই পথ হয়রানি হতে হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব রাস্তার বেহাল দশার কারনে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানাযায় গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হয়েছে বিগত সরকারের সময়
নেতাকর্মীদের মুখ চেয়ে। যে গ্রামের লোকজন রাজনৈতিক দলের সাথে ভালো সম্পর্ক ছিল সেই এলাকার উন্নয়ন ঘটেছে। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায়গুলোতে শুধু মাটি কেটে মেরামত ছাড়া পাকার মুখ দেখছেনা।
কাবিলপুর ইউনিয়নের হলদি বাড়ি গ্রামের ভ্যান চালক আব্দুর রশিদ মিয়া বলেন, হলদি বাড়ি থেকে ঘনসামপুর এবং হলদি বাড়ি থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত গ্রামীণ জনপদের বারোটা বেজে গেছে। ১ বার বৃষ্টি হলেই রাস্তাগুলোর যায়গা ভেবে কাদামাটির কারনেই গর্তের সৃষ্টি হয়। এর ফলে খালি ভ্যান পারাপারের জন্য ২ জন মানুষ লাগে। এ অবস্থায় এলাকাবাসী ও পথচারীদের যাতায়াতের চরম দূরভোগ দেখা দিয়েছে।
মদনখালী ইউনিয়ন বাসিন্দা মনজুরুল ইসলাম জানান, আমাদের ইউনিয়নে কাঠাল মাটির রাস্তা জুতা পায়ে দিয়ে হাটা যায়না। শহীদ আবু সাঈদ আমাদের ভাই আমাদের একটাই দাবি পীরগঞ্জের গ্রামীণ রাস্তা গুলোর উন্নয়ন চাই।
বড় ভগবানপুর গ্রামের লোকনাথ জানান, খালাশপীর টু চতরা রোডের অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বা আশ্রয়ণ কেন্দ্র হয়ে বড় ভগবানপুর পর্যন্ত ১ কিলোমিটার রাস্তার বর্ষা মৌসুমে কাঁদা পানির কারনে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। এর ফলে চতরাহাট বন্দরে যাতায়াতের সমস্যা দেখা দেয়।
শানেরহাট ইউনিয়নের মেষ্টা গ্রামের রিজু মিয়া জানান, বর্ষা মৌসুমে গ্রামীণ রাস্তার কাদামাটির গড়াগড়ি অনেক সময় ছাত্র ছাত্রী সময়মতো স্কুলে যেতে পারে না। গ্রামের রাস্তা গুলো জরুরি ভাবে উন্নয়ন করা দরকার।
টুকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, তরফ মৌজার মমিন ষ্টোর হইতে জয়েন্তিপুর ঘাট পর্যন্ত ৩.৫০০, কিলোমিটার যাহার আইডি নং ১৮৫৭৬৫২৩৬, হরণাথপুর হইতে আটিয়া বাড়ি পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার আইডি নং ১৮৫৭৬৫০১২, বিসনা ঈদগাহ মাঠ হইতে কাদেরের ঘাট পর্যন্ত
৩ কিলোমিটার আইডি নং ১৮৫৭৬৫০৩৩, ছাতুয়া হইতে সতের ঘাট ৫ কিলোমিটার আইডি নং ১৮৫৭৬৫২৪২, কুমরসই হইতে মোনাইল পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার আইডি নং ১৮৫৭৬৪০৪৩ সহ মোট ২১ টি রাস্তা ৬৬ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা বর্ষা মৌসুম এলেই অচল হয়ে পড়ে। অতিবৃষ্টি হালচাষে পাওয়ার টিলার, মহেন্দ্রসহ সকল যানবাহনে কারনে যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই অচল হয়ে পড়ে। যে কারনে কৃষি কাজসহ পথচারীদের যাতায়াতের দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। এর ফলে প্রায়ই গাড়ি ঘোড়ার দুর্ঘটনা ঘটে। অসুস্থ কোনো ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যেতে অনেকটাই পথ হয়রানি হয়ে যেতে হয়।
তিনি আরও বলেন, গ্রামীণ জনপদ গুলো পাকা করনের জন্য আমরা উপজেলা প্রকৌশলী অফিসে আবেদন করেছি। উপজেলা প্রকৌশল অফিসের লোকজন মাপ যোগ করে প্রতিটি রাস্তার আইডি তৈরি করে। বিগত সরকারের সময় টুকুরিয়া ইউনিয়নের অবকাঠামোর উন্নয়ন কম হয়েছে। আমাদের ইউনিয়নটি বন্যাকবলিত এলাকা সেই কারনে গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন করা প্রয়োজন।
উপজেলা প্রকৌশলী মশিউর রহমান এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমরা গ্রামের প্রতিটি রাস্তার খোঁজখবর নিয়ে আই ডি তৈরি করেছি। ইতিপূর্বে কিছু রাস্তা টেন্ডার হয়েছে। বেশ কিছু রাস্তার টেন্ডার প্রক্রিয়াধীনে রয়েছে। পর্যাক্রামে রাস্তাগুলোর কাজ হবে বলে তিনি জানান।