তিস্তার পানি বিপদসীমার নিচে, ভাঙ্গন আতঙ্কে পাড়ের বাসিন্দারা
নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
উজানের ঢল আর টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে তিস্তার পানি বেড়ে এখন বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় বন্যা ও ভাঙ্গনের আতংকে আছেন তিস্তা পাড়ের মানুষ।পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের সবকটি জলকপাট খুলে রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় ডালিয়া তিস্তা পয়েন্টের পানি প্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ১২ সেন্টিমিটার যা বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচে। পানির বিপদসীমা ৫২দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।এরআগে গতকাল রাত সাড়ে ১১ টায় পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ১৭ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার দশমিক ২ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছিলো।
নীলফামারীর ডিমলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ডিমলা উপজেলার গয়াবাড়ী, পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রাম ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে । এলাকায় প্রায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বেশ কিছু স্থানে তিস্তার বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানির নিচে ডুবে গেছে চর ও নিম্নাঞ্চলের আমন ধান, আগাম শীতকালীন সবজির ক্ষেত ও চলাচলের সড়ক। ভেসে গেছে মাছের পুকুর-খামার। অনেকে গবাদিপশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন। এছাড়াও টানা বৃষ্টিপাতে পানি বাড়ার ফলে সব নদ-নদীর পানির পাশাপাশি বিলের পানি বৃদ্ধিও অব্যাহত আছে। এতে রাস্তাঘাট ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। সেই সাথে ফসলি জমিতে পানি ওঠায় নষ্ট হচ্ছে আগাম শীতকালীন শাকসবজি, বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল।
আজ ( রবিবার) সকাল থেকে ঘর বাড়ি ও বিভিন্ন জায়গায় পানি নেমে যেতে শুরু করেছে। পানি নেমে যাওয়ায় নতুন করে ভাঙ্গন দেখা দিচ্ছে। এতে আতংকে আছেন তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা।
ডিমলার খালাসি চাপনী এলাকার বাসিন্দা হাসাম আলী বলেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। আজ সকাল থেকে পানি নেমে যাওয়া শুরু করেছে এতে করে আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
আরেক বাসিন্দা মমতা বেগম বলেন, আজ সকাল থেকে ঘর বাড়ির পানি নেমে যেতে শুরু করেছে। পানি নেমে যাওয়ায় বাড়ির আশপাশের জায়গা গাছপালা নদীতে ভেঙ্গে যাচ্ছে।খুব ভয়ে আছি কখন যে ঘরবাড়ি পানিতে ভেঙে যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার উপ-প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ১১ টার দিকে পানি বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। আজ বেলা ১২ টার দিকে পানি নেমে বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি নেমে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গন দেখা যাচ্ছে।