উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি দুর্ভোগে মানুষ, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে
মো. হাবিবুল হাসান হাবিব, ডিমলা (নীলফামারী):
নীলফামারীর ডিমলায় উজানের ঢল আর টানা বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর তীরবর্তী উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার বসত ভিটায় পানি প্রবেশ করায় দূর্ভোগে পড়েছে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ ভোগান্তির শেষ নেই।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ছয়টায় তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে তিস্তা ব্রীজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার দুই সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে সকাল ৯টায় ৩ সেন্টমিটার কমে বর্তমানে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্রীজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে দিয়েছে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, গত শনিবার সকাল ৯ টায় তিস্তা পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর বেলা ১২টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও রাতে ১২টায় বিপদসীমা অতিক্রম করে আজ সকাল ছয়টা পর্যন্ত বিপদসীমার দুই সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। তবে রবিবার সকাল ৯টায় পানি তিন সেন্টিমিটার কমে বর্তমানে বিপদসীমার এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের নীলফামারী ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানির বিপদসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার।
এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে নদীর তীরবর্তী উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্বছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, খগাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে পানি প্রবেশ করে। পরিবার গুলোর বসতভিটায় পানি প্রবেশ করায় ভোগান্তির শঙ্কায় রয়েছেন এসব নিম্নাঞ্চলের প্রায় পাঁচ সহস্ত্রাধিক মানুষজন। এছাড়াও এসব গ্রামের জমির আমন ধান ক্ষেত বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। তবে বর্তমানে পানি হ্রাস পাওয়ায় সেই শঙ্কা কাটবে বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আতিকুর রহমান বলেন, গত চার দিন ধরে টানা মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত শনিবার বেলা ১২টার পর থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার পাঁচ সেণ্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও রাতে ১২টায় তা বিপদসীমা অতিক্রম করে সকাল ৬টায় পর্যন্ত বিপদসীমার দুই সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর সকাল ৯টায় কমে বর্তমানে বিপদসীমার এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্রীজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা সতর্কাবস্থায় রয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত নদীর পানি ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে।
ডিমলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মেজবাহুর রহমান বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যানদেরকে বন্যা কবলিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরির কথা বলা হয়েছে। আগামীকাল ত্রাণ প্রাপ্তি সাপেক্ষে বিতরণ করা হবে।