২৮ আশ্বিন, ১৪৩১ - ১৩ অক্টোবর, ২০২৪ - 13 October, 2024

ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে

আমাদের প্রতিদিন
1 week ago
50


আব্দুল আজিজ মজনু, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম):    

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সটির প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসকসহ অন্যান্য জনবল ও পরিছন্নতা কর্মি না থাকায় সেটি এখন নিজেই অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে স্বাস্থ্য সেবা। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির ওয়ার্ড দুর্গন্ধযুক্ত থাকায় কর্মরত চিকিৎসক রোগীকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেছে। এ অবস্থায় প্রতিদিন অসুস্থ্য লোকজন হাসপাতালে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে চিকিৎসক ও অন্যান্য পদে দ্রুত পদায়নের জন্য উর্দ্ধতন কতৃর্পক্ষের প্রতি দাবি করেছেন এলাকাবাসীসহ উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

 

ধরলা নদী দ্বারা বেষ্ঠিত ১৯৮৩/৮৪ সালে ৬ একর ৪৪ শতাংশ জমির উপর নির্মাণ করা হয় স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সটি। পর্যায়ক্রমে এ উপজেলায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা তালিজোড়া দিয়ে আসার এক পর্যায়ে ৩১ শয্যার স্বাস্থ্য কমপে¬ক্স টিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করন করা হয়। কিন্তু কাগজ কলমে ৫০ শয্যায় উন্নীত করন করা হলেও চিকিৎসক পর্যাপ্ত না থাকায় চিকিৎসা সেবা নেই সেখানে। এছাড়াও নেই সেখানে অন্যান্য প্রয়োজনীয় জনবল। ফলে কাঙ্খিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। স্টাফ প্যাটান অনুযায়ী জুনিয়র কলসাটেন্ট পদে ১২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ৩ জন। এরমধ্যে ১ জন যোগদান করার পর থেকে আর কর্মস্থলে ফিরে আসেন নাই। আবার মেডিকেল অফিসারের পদ ১৪ টি হলেও রয়েছেন মাত্র ২ জন। স্বাস্থ্য পরিদর্শক,সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীর পদ ৩২ টি থাকলেও কর্মরত রয়েছেন ১৮ জন। পরিছন্নতা কর্মি ৫ জনের মধ্যে ৩ জন কর্মরত থাকলেও মামলার কারণে ১জন পলাতক। এরমধ্যে কাজ করেন আবার ১জন।

ল্যাট্রিন ও প্রসাব খানা গুলোর ভিতরে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা আবর্জনায় ভরা। এরই মধ্যে রোগীর বেডের পাশে পায়খানা থাকায় কর্মরত চিকিৎসককে বিষয়টি বলায় ওই চিকিৎসক রোগীকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেছে। রোগীরা সঠিকভাবে ডাক্তার, ঔষধ এবং পথ্যসেবা পাচ্ছেন না। শুধুমাত্র উপ—সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারেরা যতটুকু পাচ্ছেন তারাই চিকিৎসা প্রদান করছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানাগেছে, বর্তমানে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাঃ সুমন কান্তি সাহা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসাবে রয়েছেন ডাঃ বাইজীদ হাসান বাধন, জুনিয়র কনসালট্যান্ট এ্যানেসথিয়ায় ডাঃ দেব দুলাল, জুনিয়র কনসাট্যান্ট গাইনিতে রয়েছেন ডাঃ রোজিনা আক্তার, শুধুমাত্র মেডিকেল অফিসার হিসাবে কর্মরত রয়েছেন হোমায়রা পারভীন। বর্তমানে আর কোন চিকিৎসক সেখানে কর্মরত নেই। এদিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় প্রতিদিন আউটডোরে প্রায় ২ থেকে আড়াই শত রোগীকে চিকিৎসা প্রদান করা মারাত্বক ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। অন্যদিকে ইনডোরে ভর্তিকৃত রোগীদের সরকারী ঔষধ সরবরাহের ক্ষেত্রে নানা রকম জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এমনও অভিযোগ করেছেন রোগীর স্বজনেরা। ফলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের রোগীরা তাদের জটিল রোগের চিকিৎসা করতে মোটা অংকের টাকা খরচ করে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও রংপুর যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

গ্রামীণ জনগোষ্টির স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে উপ—স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র চালু করা হলেও সেখানকার উপ—স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলোতে কোন সহকারী সার্জন বা চিকিৎসক নেই।

মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোছাঃ হোমায়রা পারভীন জানান, আমরা দু’জন মেডিকেল স্থানীয় হওয়ায় আমাদের প্রায়দিন ২৪ ঘন্টা ডিউটি করতে হয়। এঅবস্থায় দ্রুত মেডিকেল অফিসার পদায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুমন কান্তি সাহা যুগান্তরকে জানান, চিকিৎসকসহ অন্যান্য জনবল চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও ব্যবস্থা হয়নি।

 

  

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth