সাবেক এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপালসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা
দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুরের বীরগঞ্জে সালাউদ্দিন ও আসাদুল নামে দুই কিশোরকে হত্যার অভিযোগে দিনাজপুর—১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপালসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলায় অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে ৯০ থেকে ১’শ জনকে। গত রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বীরগঞ্জ থানায় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন নিহত সালাউদ্দীনের মা জহুরা খাতুন।
নিহত সালাদ্দিন (১৬) দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ভগিরপাড়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে এবং আসাদুল (১৫) একই উপজেলার সাহাডুবি (উত্তরপাড়া) গ্রামের আলিমউদ্দীনের ছেলে।
মামলার এজাহারে সালাউদ্দিনের মা জহুরা খাতুন উল্লেখ করেন, গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে দিনাজপুর—১ আসনে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন মনোরঞ্জন শীল গোপাল। ২০ দলীয় জোট ওই নির্বাচন বর্জন করে। নির্বাচন যাতে ভন্ডুল করতে না পারে এজন্য জামায়াাত, শিবির ও বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতা—কর্মীদেরকে দেখা মাত্রই হত্যা ও গুম করার হুকুম ও নির্দেশ দেন মনোরঞ্জন শীল গোপাল। এমন পরিস্থিতিতে ৫ জানুয়ারী দুপুর ১টায় আমার ছেলে সালাউদ্দিন ও তার বন্ধু আসাদুলসহ খালার বাড়ী থেকে আসার পথে বীরগঞ্জ উপজেলার ভেলাপুকুর (বাবুরহাট) নামক স্থানে পৌছলে এজাহারনামীয় আসামীরা শিবির শিবির বলে চিৎকার শুরু করে এবং লাঠি—সোঠা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের (সালাউদ্দিন ও আসাদুল) উপর মারধর ও হামলা চালায়। এক পর্যায়ে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় সালাউদ্দিন ও আসাদুলকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। তাদের মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরবর্তীতে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ৫ জানুয়ারী বিকেল সোয়া ৫টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আসাদুলের মুত্যু ঘটে। একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন ৬ জানুয়ারী সকাল ৭টা ২০ মিনিটে মারা যায় আসাদুল। এই ঘটনায় কোতয়ালী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয় এবং ময়না তদন্ত শেষে লাশ দাফন করা হয়।
এজাহারে জহুরা খাতুন উল্লেখ করেন, ঘটনার সময় আসামীরা ক্ষমতায় থাকায় ন্যায় বিচার পাওয়া কিংবা মামলা করার মতো অনুকুল পরিবেশ ছিলো না। এছাড়াও আসামীরা প্রতিনিয়ত জীবন নাশের হুমকী দেয়ার কারনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারেন নাই। এ কারনে মামলা করতে বিলম্ব হলো।
বীরগঞ্জ থানার ওসি মজিবুর রহমান মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বলেন, মামলা নং—২৩, তারিখ—২৯/০৯/২০২৪ইং। ধারা—১৪৩/৩৪১/৩২৬/৩০২/৫০৬(২)/১১৪/৩৪। তিনি বলেন, মামলার তদন্তভার এসআই আশরাফুল ইসলামকে দেয়া হয়েছে।