২৬ কার্তিক, ১৪৩১ - ১০ নভেম্বর, ২০২৪ - 10 November, 2024

কুড়িগ্রামে ১৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড, দুর্ভোগে মানুষজন

আমাদের প্রতিদিন
1 month ago
64


কুড়িগ্রামে ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ফের বাড়ছে নদ নদীর পানি : বন্যার আশংকা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :

কুড়িগ্রামে গতকাল শুক্রবার থেকে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে খেটে খাওয়া ও দিনমজুর শ্রেণীর মানুষজন। ভারি বর্ষনের কারণে ব্যাহত হয়ে পরেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দেখা দিয়েছে বন্যার আশংকা।

শনিবার (৫ অক্টোবর) কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে গত ২৪ ঘন্টায় কুড়িগ্রামে ১৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা আগামী আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে।

বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় কুড়িগ্রাম শহরের বিভিন্ন রাস্তা ও অফিস চত্বরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ সমস্ত রাস্তা দিয়ে হাঁটু পানি উপেক্ষা করে চলাচল করছে মানুষ। এছাড়াও শহরে অনেক দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাড়ি থেকে বাহির হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতি বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া ও দিনমজুর শ্রেণীর মানুষগুলো। অন্যদিকে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় নদ নদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কুড়িগ্রাম পৌর শহরের  রিক্সা চালক আপেল  বলেন, গতকাল বিকেল থেকে প্রচুর বৃষ্টি। ঘরে থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। রাস্তায় যাত্রী নেই,বৃষ্টিতে রিকশা চালানো যাচ্ছে না। সকাল থেকে বসে আছি রাস্তায় কোন মানুষের দেখা নেই।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, শনিবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় ১৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

যা আগামী ৯ অক্টোবর পর্যন্ত থেমে থেমে অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।  কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রাকিবুল হাসান বলেন, টানা বৃষ্টিপাতের কারনে জেলার সবগুলো নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তবে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মুপুত্রের পানি বাড়ছে ধীর গতিতে বাড়লেও তিস্তার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে।

ভারি বৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রাম শহরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর, ফায়ার সার্ভিস চত্বর, টাপু ভেলাকোপা, চর হরিকেশ, হাটিরপাড়,  তালতলা  ও রৌমারীপাড়াহ কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। 

পাহাড়ি ঢলে সীমান্তবর্তী জিঞ্জিরাম নদীর পানি দুকুল ছাপিয়ে রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলার ১০টি গ্রামের নিচু এলাকার আমন ও বাদাম ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এরমধ্যে রৌমারী উপজেলার চর লাঠিয়াল, চান্দারচর,ভন্দুরচর, বড়াইবাড়ী এবং রাজীবপুর উপজেলার বালিয়ামারি, শিবেরডাঙি ও নয়ারচর রয়েছে।

গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে তিস্তা ও ধরলার নিচু এলাকায় প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির আমন ক্ষেত তলিয়ে থাকায় ক্ষেত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মদাজালফাড়া গ্রামের কৃষক বাচ্চু মিয়া বলেন, ২০ শতক জমি আবাদ করছি। সেই ধান পানির নিচোত পড়ি আছে। এখন বউ বাচ্চা নিয়া খামো কী?’

এদিকে পানি হ্রাস বৃদ্ধির মধ্যে থেমে নেই নদ-নদীর ভাঙন। তিস্তার ভাঙনে রাজারহাটের গতিয়াশাম, চর গতিয়াশাম ও ধরলার ভাঙনে বেগমগঞ্জ, সারডোবসহ কয়েকটি এলাকায় বেড়েছে নদীর ভাঙন। গত এক সপ্তাহে এসব এলাকায় গৃহহীন হয়েছে অন্তত ৩ শতাধিক পরিবার। বেগমগঞ্জে ভাঙনে বিলীন হয়েছে একটি কমিনিটি ক্লিনিক ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র। ঝুঁকিতে পড়েছে একটি হাইস্কুল।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth