জীবনযুদ্ধে বৃদ্ধা বয়সে চোখ হারিয়েও থেমে নেই জীবিকা

বায়েজীদ,পলাশবাড়ী, গাইবান্ধা :
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ৫নং মহদিপুর ইউনিয়নের জ্বালাগাড়ী গ্রামের কামারপাড়ার বাসিন্দা কালিপদ কর্মকার। সংসারে পাঁচজনের জীবিকা নির্বাহ করতে দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে কালিপদ কর্মকার। দেশ স্বাধীন হওয়ার নয় বছর আগে থেকে বাবার সাথে কাজ করতেন কালিপদ কর্মকার (৬৫)। কাজ করতে গিয়ে আগুনের সিসা থেকে জ্বলন্ত লোহার টুকড়ো ছিটকে গিয়ে এক চোখ অন্ধ হয় কালীপদ কর্মকারের। জীবন যুদ্ধে হার না মেনে দা, কুড়াল, বটি, ছুরি সহ লোহা পিটিয়ে যাবতীয় সরঞ্জামাদি তৈরি করেন পলিথিনের ঝুঁপড়ি ঘরে বসে। কাজের দক্ষতা ও মান নির্ণয়ের দিক দিয়ে অন্যান্য কর্মকারদের তুলনায় বেশ সুনাম যুগিয়েছে কালিপদ কর্মকার।
কালিপদ সরকার জানায়, বংশ পরস্পরায় আমার এ জীবিকা নির্বাহ। কাজ করতে গিয়ে একটি চোখ হারানোর পর প্রতিবন্ধী হিসেবে আখ্যায়িত হওয়ার কারণে সরকার আমাকে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। প্রতিদিন ২, ৪, ৫ শত টাকা ইনকাম করার পরেও সরকারি ভাতা দিয়ে কোনোমতে পাঁচ জনার সংসার চলে যায়। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে অন্যান্যদের তুলনায় আমার কাজের অর্ডার কম। কামার পট্রিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও এখনো পুরোনো আমলের ভাতি টেনে কাজ করতে হয় আমাকে। যা অনেক কষ্টসাধ্য। কালের বিবর্তনে এখন সবাই বৈদ্যুতিক সংযোগের মাধ্যমে মোটর ব্যবহার করে কয়লা পুড়িয়ে কাজ করে। বর্ষা মৌসুমে অন্যান্য ১০ জন কাজ করলেও আমাকে ঘরে বসে থাকতে হয়। পলিথিনের দেয়া ঝুঁপড়ি ঘরে একটু বৃষ্টিতেই পানি পড়ে হালকা বাতাসে উড়ে যায় আমার দোকান ঘড়ের পলিথিনে মোড়া ছাউনি।যে কারণে বর্ষা মৌসুমে দিনযাপন খুব অতসাধ্য হয়ে পড়ে কালিপদ কর্মকারের।
একারনে কালিপদ কর্মকার সাংবাদিকদের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা প্রশাসন সহ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের হস্তক্ষেপ কামনা করে তার এ ঝুঁপরি ঘরটি মেরামত করে দেয়ার জন্য সহযোগিতা কামনা করছেন।