টেস্টে তাইজুলের ২০০ উইকেটের মাইলফলক
ফাইল ফটো
আমাদের ডেস্কঃ
মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনে দ্বিতীয় সেশনের অর্ধেক না যেতেই ১০৬ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। তবে বোলারদের ডাপটে প্রথম ইনিংসে স্বল্প সংগ্রহ নিয়েও ম্যাচটা হাতের নাগালেই থেকেছে বাংলাদেশের। প্রথম টেস্ট দেখতে গ্যালারিতে গুটিকয়েক দর্শক উপস্থিত হয়েছেন, বাংলাদেশে ব্যাটিংয়ে খুব একটা উল্লাস করার সুযোগ পাননি তারা।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে এক পেসার নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। মিরপুরের উইকেটের চরিত্র ও এ মাঠের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বিবেচনায় বাংলাদেশের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ খুব একটা নেই। কিন্তু টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকান পেসাররা যেভাবে দাপট দেখালেন, তাতে একটু হলেও আক্ষেপ জাগার কথা বাংলাদেশি সমর্থকদের। প্রোটিয়া বোলিং তোপে দিনের অর্ধেক না যেতেই ৪০.১ ওভারে ১০৬ রানে গুটিয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত-লিটন দাসরা।
দিনের শেষভাগে অবশ্য বাংলাদেশের সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতার প্রমাণ দিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি এ স্পিনার একাই ৪৯ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন। এতে প্রথম ইনিংসে স্বল্প সংগ্রহ নিয়েও ম্যাচটা হাতের নাগালেই থেকেছে বাংলাদেশের। মিরপুরে আলোক স্বল্পতায় প্রায় ১৭ মিনিট বাকি থাকতেই দিনের খেলার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে ৪০ ওভার ব্যাটিং করে ৬ উইকেটে ১৪০ রানে দিন শেষ করেছে প্রোটিয়ারা। প্রথম দিন শেষে ৩৪ রানে এগিয়ে আছে সফরকারীরা।
তবে দুই দলের ব্যাটিং দিনজুড়ে যেমন দেখা গেছে, তাতে মিরপুরের কালো পিচের ভূমিকা তো আছেই, তবু সেটা মাথায় রেখেও বলতে হয় যেন বাজে ব্যাটিংয়ে কারা এগিয়ে, সেই লড়াই-ই করেছে দুই দল।
ব্যাট হাতে আরেকটি বাজে দিন কাটানোর পর বোলিংয়ে শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছিল বাংলাদেশের। প্রথম ওভারের শেষ বলে দারুণ এক লেংথ ডেলিভারিতে এইডেন মার্করামের (৭ রান) স্টাম্প ভাঙেন হাসান মাহমুদ। শুরুতে উইকেট হারিয়েও ম্যাচে দারুণভাবে টিকে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। আরেক ওপেনার টনি ডি জর্জির সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪১ রান তোলেন স্টাবস। তবে শান্তর দারুণ এক সিদ্ধান্তে জুটি ভাঙে দক্ষিণ আফ্রিকার। মিরাজকে রিপ্লেস করে ইনিংসের ১০ম ওভারে তাইজুলের হাতে বল তুলে দেন বাংলাদেশি অধিনায়ক। বল হাতে ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারেই স্টাবসকে স্লিপে দাঁড়ানো সাদমানের হাতে ক্যাচে পরিণত করেন তাইজুল। প্রোটিয়াদের স্কোরবোর্ডে তখন ৫০ রানে ২ উইকেট।
একপ্রান্তে তাইজুলকে দিয়ে টানা ওভার করিয়ে যান শান্ত। এর মধ্যে ইনিংসের ১৮তম ওভারে স্লিপে বেডিংহ্যামের ক্যাচ ফেলেন সাদমান। সে আক্ষেপ দীর্ঘ করতে দেননি বাংলাদেশি স্পিনার। তাইজুলের পরের ওভারে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েই ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন বেডিংহ্যাম (১১ রান)।
গ্যালারি থেকে তখন থেমে থেমে তাইজুলের নামে স্লোগান আসা শুরু হয়েছে। তাইজুল সে স্লোগানের মাত্রা আরও বাড়িয়েছেন ইনিংসের ২৮তম ওভারে। একই ওভারে তাইজুলের শিকার হন প্রোটিয়া ওপেনার জর্জি (৭২ বলে ৩০ রান) ও ম্যাথিউ ব্রেটজ (০)। তাইজুলের পরপর ৪ উইকেটে একটা সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর দাঁড়ায় ৯৯/৫। ওই ৪ উইকেট নিয়েই সাকিব আল হাসানের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে ২০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন ৩২ বছর বয়সী তাইজুল।
চা বিরতি থেকে ফিরে তাইজুল উইকেট নিয়েছেন আরও একটি। ক্যারিয়ারে ৪৮তম টেস্ট খেলতে নামা তাইজুল এ নিয়ে ১৩বার ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেন। হয়তো তাইজুলের উইকেট সংখ্যা আজ আরও বাড়তে পারত। কিন্তু মিরপুরে আলো কমে যাওয়ায় ৬ ওভার বাকি থাকতেই সমাপ্তি ঘোষণা করেন আম্পায়ার। আজকের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগামীকাল ১৫ মিনিট আগে শুরু হবে দ্বিতীয় দিনের খেলা।