পলাশবাড়ীতে ফলের বাজারে আগুন, দাম শুনে চলে যাচ্ছে ক্রেতা

বায়েজীদ পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা):
ফল মানুষের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির জন্য বিশেষ চাহিদা পূরণ করে। ফল খেতে ভাল বাসে না এমন মানুষ খুব একটা চোখে পড়ে না। সাধ্য থাকুক বা না থাকুক সকলেই চান পরিবারের সদস্যদের মুখে একটু হলেও ফল তুলে দিতে। পলাশবাড়ী চৌমাথায় ও গাইবান্ধা স্ট্যান্ডে যাওয়া মাত্রই নজর কাড়ে রংবেরঙ এর বাহারি ফল। মনে হয় ক্রেতাদের অপেক্ষায় বাগান সাজিয়ে বসে আছেন ফল ব্যবসায়ীরা। সাধের বাহিরে দাম হওয়ায় ফল ক্রয় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্রেতাদের। অপরদিকে ফলের চড়া দামে বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি কম থাকায় হতাশায় ফল ব্যবসায়ীরা।
পলাশবাড়ী চৌমাথা, গাইবান্ধা ষ্টান, উপজেলা গেট, জনতা ব্যাংক মোড়, কালিবাড়ি বাজারের ফলের প্রতিটি দোকানে শোভা পাচ্ছে দেশি-বিদেশি বাহারি রকমের ফল। সপ্তাহের ব্যবধানে ও বিদেশি ফলের দাম পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। হাত বদলেই বেড়েছে দেশীয় ফলের দাম। আমদানি কম থাকায় দাম নাগালের বাহিরে বলে মনে করেন ফল ব্যবসায়ীরা।
বাজারে দেশীয় ফল জলপাই বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা ধরে, দেশি মালটা ৮০ টাকা, পেয়ারা ৭০ টাকা, পেঁপে ৬০ থেকে ১২০ টাকা, জাম্বুরা আকার ভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, আনারস ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আমলকি প্রতি কেজি ৪০০ টাকা আমড়া ৮০ টাকা। ড্রাগন বিদেশি ফল হলেও দেশি উৎপাদন হচ্ছে। প্রতি কেজি ড্রাগন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা।
ঐ দিকে আবার বিদেশি ফলের মধ্যে ছোট আপেল ২৭০ টাকা, ঘুঘু আপেল ৩০০ টাকা, মাল্টা ৩২০ টাকা, আনার ৬২০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা, কমলা ৩৪০ টাকা, সাদা আঙ্গুর ৬০০ টাকা, লাল আঙ্গুর ৪৬০ টাকা।
পলাশবাড়ী চৌমাথায় ফল কিনতে আশা কামরুনাহার বলেন, বাচ্চাদের পুষ্টি চাহিদা পূরণে ফল কিনতে হয়। ফলের বাজারে আগুন ১ কেজি আপেল কিনতে পারি না, ২ পিছ আনার নিয়ে যাচ্ছি। আপেল, আঙ্গুর, কমলা এগুলোতে হাত দেওয়াই যায় না।
আবু নোমান রুসাফি বলেন, দেশীয় ফলের দামও অনেক বেশি। মধ্যবিত্ত মানুষের আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সমন্বয় করা খুবই কঠিন। ফল যেন বিলাসবহুল পন্য হয়ে গেছে।
সুজিত কুমার ডন পরিবারের জন্য ফল কিনতে এসে বলেন, বাজারে হাত বদল হলেই দাম বাড়ে। বাজার মনিটরিং জোরদার করলে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
ফলের বাড়তি দাম নিয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, আগে মালটার কাটুন ছিল ৩০০০ টাকা এখন ৪২০০ টাকা। গত সপ্তাহের লাল আঙ্গুর বিক্রি হয়েছে ৩২০ এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা। চাহিদার অর্ধেক আমদানি হচ্ছে এজন্য দাম বাড়তি। ক্রেতাদের উপস্থিতি কম থাকায় আমাদের বেচাকেনা অনেক কমে গেছে।
ক্রেতা কম থাকায় পচনশীল ফল দোকানে মজুদ করতেই সাহস পাই না। আগে চাহিদা অনুযায়ী বেশি ক্যারেট ফল মজুদ রাখতাম। এখন দাম বেশি চাহিদা কম, ফল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এদিকে পাইকারি বাজারে দাম বেশি। অনেকক্ষেত্রে লোকসান হচ্ছে।
দেশীয় ফলের এক আড়তদার বলেন, আগে দৈনিক ৫০ থেকে ৬০ ক্যারেট ফল বিক্রয় হতো। এখন বিক্রয় হয় ১০ থেকে ১৫ ক্যারেট। ২/৩ মাস আগেও দৈনিক ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকার ফল বিক্রয় করে বেশ ভালো ব্যবসা হতো।