৭ আষাঢ়, ১৪৩২ - ২২ জুন, ২০২৫ - 22 June, 2025

সপ্তাহের মধ্যে বাজারে আসছে  নতুন পিঁয়াজ

আমাদের প্রতিদিন
7 months ago
144


আজাদুল ইসলাম আজাদ, পীরগঞ্জ (রংপুর):

মসলা জাতীয় ফসল পিঁয়াজ । রান্নার স্বাদ বাড়াতে এর জুড়ি নেই। উপজেলার  কৃষি পল্লীতে পিয়াজ চাষে ঝুঁকছে হাজারো কৃষক। পিয়াজ চাষের শুরু থেকেই আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় কিছুটা সময় পিছিয়ে গেলো নতুন পিয়াজের আমদানি।  প্রতিবছর কয়েকটি জেলা থেকে পাইকাররা আগ্রহের সাথে আসে নতুন পিয়াজ কিনতে। তাদের মাধ্যমে সবার ঘরে ঘরে পৌঁছে যায় নতুন পিয়াজের ঝাঁঝ। চাষিদের অক্লান্ত পরিশ্রমে মসলা জাতীয় ফসল পিয়াজ বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে এখানকার চাষীরা অধীর আগ্রহের সাথে চাষাবাদে ঝুকে পড়ে। মসলা জাতীয় পিয়াজ যেমন তরকারির রাজা তেমনি আগাম ফসল বিক্রি করেও  চাষিদের পকেট ভরা টাকা। কৃষকের টাটকা এবং গরম টাকার নেশায় মনের আনন্দে আগাম জাতের সবজি চাষে ঝুঁকে পড়ে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাযায় উপজেলায় ১৮ শ হেক্টর জমিতে পিয়াজের চাষ করা হয়েছে। সম্ভব লক্ষমাত্রা নির্ধারন ধরা হয়েছে পার হেক্টর জমিতে পাতা পিয়াজ ২০ টন সবমিলিয়ে, প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন পিয়াজ উৎপাদন করা

হবে। কৃষক বিভাগ জানান, নতুন  পিয়াজ সপ্তাহের মধ্যেই হাটেবাজারে আমদানি করা হবে আগাম জাতের কন্দ বা (মুড়ি)  পিয়াজ।

পীরগঞ্জ পৌরসভা এলাকার পিয়াজ চাষি মতিয়ার রহমান জানান, আমাদের এলাকার আগাম জাতের পিয়াজ দেশের বাজার কিছুটা কমিয়ে দেবে। এখান থেকে ট্রাক যোগে ঢাকাসহ সকল জেলায় আমদানি করা হবে। পিয়াজ ব্যবসায়ীরা মেবাইল ফোনে যোগাযোগ করে পিয়াজের খবর নিচ্ছেন। অনেকেই মাঠ পর্যায়ে এসে পিয়াজের জমি ঘুরেফিরে যাচ্ছে চাষিদের সাথে কথা বলছেন।

কেশবপুর গ্রামের রাজা মিয়া জানান, আমি ১৮ কাঠা জমিতে পিয়াজের চাষ করছি। এই আবাদে অনেক খরচ হয়েছে, পিয়াজ আবাদের চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছে ফলন এবং বাজার আমাদের পক্ষে থাকবে। তিনি আরও বলেন আবাদি জমিগুলোতে উপ-সহকারী কৃষি অফিসারদের দেখা মিলছে না। এমনকি আমাদের এলাকায় কোন অফিসার রয়েছে তাও তিনি জানেন না।

চাষি আকরাম আলী জানান, প্রচন্ড তাপমাত্রার শেষে ঘন বৃষ্টি বাদলের কারনে এলাকার চাষিদের কোমর ভেঙে দিয়েছে। জমিতে রোপণকৃত পিয়াজ বৃষ্টির পানির কারনে পচন ধরেছে। একই জমি ১ থেকে ৩ বার করে খোসা দিয়ে আবাদ করা হচ্ছে।

বিগত বছরের চেয়ে এবছর ক্ষতির সংখ্যাই বেশি হয়েছে। তার পরেও আসা করেছি আগাম পিয়াজ খতি পুষিয়ে দেবে।

পিয়াজ চাষি কামরুল ইসলাম, বলছেন, সবজি উৎপাদনের কারখানা পীরগঞ্জ। এখানে সকল প্রকার সবজির চাষ করা হয়। বর্তমানে সার কীটনাশকের বাজার চড়া  তার পরেও কৃষক বসে নেই। এলাকার পিয়াজ বাজারে নেমে আসলে বাজার কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আসবে।

পৌর এলাকার আরেক চাষি আফজাল হোসেন জানান, এলাকায় সবজি উৎপাদনের শামিল হয়েছেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে সবজির মাঠে কয়েকটি পাতকুয়া স্থাপনের মাধ্যমে আমরা কিছুটা স্বস্থি পেয়েছি। সবজির খেতের জন্য পাতকুয়ায় অনেক সুবিধা। সবজির জমিতে  হালকা-পাতলা সেচের জন্য পাতকুয়া নীরবে তার ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। গভীর নলকূপ বা স্যালো মেশিন দিয়ে সবজির চাষ করলে সবজি সমান ভাবে পাওয়া যায় না এবং ফসল উঁচু নিচু হয়। সেচের পানির স্পিড বেশি যে কারনে পানি সামলাতে গড়িমসি হয়। আর পাতকুয়া থেকে হালকা সেচ অতি সহজেই দেয়া যায়। সেই কারনে সবজির  ফলাফলও বেশি পাওয়া যায়।

বিএমডিএ'র রংপুর সার্কেল এর প্রকল্প পরিচালক হাবিবুর রহমান খান এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ভূ-উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহার ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে বৃহত্তম রংপুর জেলা সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পের অধীনে সবজি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে পীরগঞ্জে কৃষি পল্লীতে ৯ টি পাতকূয়া স্থাপন করা হয়েছে। পাতকূয়া থেকে চাষিরা প্রয়োজন অনুযায়ী ফসলের জমিতে পানি সেচ দিতে পারে। এগুলো স্থাপনের পর থেকেই কৃষিতে ফসলের উৎপাদন বেড়েছে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth