৪ শ্রাবণ, ১৪৩২ - ২০ জুলাই, ২০২৫ - 20 July, 2025

রংপুরে জামিনে এসে মামলার আলামত গায়েব করার অভিযোগ আসামীদের বিরুদ্ধে

আমাদের প্রতিদিন
8 months ago
200


নিজস্ব প্রতিবেদক:

জামিনে এসে বাদিকর হুমকি দিয়ে মামলার আলামত নষ্ট করার অভিযোগ আসামিদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় মামলার বাদী নিরাপত্তা চেয়ে আসামিদের হুমকি বিরুদ্ধে বদরগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

আজ বুধবার ২৩ অক্টোবর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বদরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ তদন্ত নুরুল আমিন জানান, গত ৪ ও ৫ আগস্ট বদরগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের পক্ষের লোকজন কর্তৃক ছাত্র জনতার উপর হামলা, লুটপাট অগ্নিসংযোগ এবং নাশকতার ঘটনায় দৈনিক ইনকিলাবের বদরগঞ্জ উপজেলা সংবাদদাতা ও এশিয়ান টেলিভিশনের রংপুর বিভাগীয় ব্যুরো চিফ এবং বৈষম্য বিরোধী নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাদশাহ ওসমানী বাদী হয়ে বদরগঞ্জ তারাগঞ্জ আসনের সাবেক এমপি ডিউক চৌধুরী ও পৌর মেয়র টুটুল চৌধুরীসহ ১৬৩ জনের নামে গত মাসের ১৬ তারিখে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।বিজ্ঞ আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে  নিতে  বদরগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দেয়। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত চলছে।

তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় পুলিশের অজান্তেই কিছু আসামী বিজ্ঞ আদালতে এসে জামিন নিলেও ১৫ জন আসামি রংপুর জেল হাজতে রয়েছে। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের পদধারী ১৪ জন আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে আলামত উদ্ধার ও বাকি আসামিদের সনাক্ত করতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের জন্য  রিমান্ড চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিজ্ঞ আদালত আটক আসামিদের রিমান্ড না দেওয়ায় মামলাটি তদন্ত করতে এবং গায়েব আলামত উদ্ধারে সমস্যা হয়ে গেলো। বিচারক যদি আসামীদের বিরুদ্ধে রিমান্ড দিতেন তাহলে মামলাটির জন্য উপকার হতো। এই মামলায় যে কয়েকজন আসামী জামিা নিয়েছেন তারা এখন মামলার বাদিকে হুমকির পাশাপাশি আলামত গায়েব করছেন।

এ বিষয়ে মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট বায়েজীদ ওসমানী জানান, মামলাটি সঠিক তদন্তের জন্য আটক আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড না দেয়া মামলার জন্য বড় ক্ষতি। কারণ যে আসামী গুলো জামিন নিয়েছেন তারা শুধু মামলার আলামত গায়েব নয় বরং তারা বাদিকেও প্রকাশ্য এবং বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য ভয় ভীতি দেখাচ্ছেন। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে দিলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মামলাটির সঠিক তথ্য উপস্থাপন করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সবকিছু করতে পারতেন।

তিনি আরও বলেন আওয়ামী লীগের আমলে এর চেয়েও দুর্বল মামলায় বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের লোকজনদের ইচ্ছেমতো রিমান্ডে নিতেন। কখনো তাদের জামিন মঞ্জুর করতেন না। আর এত বড় একটি নাশকতা মামলায় সিনিয়র জুডিশিয়াল আমলী আদালতের বিচারক আসামিদের রিমান্ড না দিয়ে এবং কিছু আসামিকে জামিন দিয়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সফলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। বিচারক ইচ্ছা করলেই আসামিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে দিতে পারতেন।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন আইনজীবী জানান,  এখনো বিচারাঙ্গনে কিছু বিচারক আওয়ামী লীগের দোসর রয়েছেন। তাদেন কারণে আওয়ামী লীগের পদধারি নেতারা জামিন পাচ্ছেন। অনেককে রিমান্ড না দিয়ে জামিনও দিচ্ছেন। রংপুর চীফ জুডিশিয়াল আদালতের (সিজিএম কোর্টে) ও এমন দোসর বিচারক রয়েছেন বলে তারা জানান।

এ বিষয়ে মামলার বাদী সাংবাদিক বাদশাহ ওসমানী জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার উপর হামলা, মারপিট, ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি এবং লুটপাট, ভাংচুর অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার কারণে বদরগঞ্জের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ডিউক চৌধুরী আওয়ামী লীগ নেতা পৌর মেয়র টুটুল চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগের ১৬৩ নেতা কর্মীর নামে সিনিয়র জুডিশিয়াল আমলী আদালতে মামলা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের পদধারী বেশ কয়েকজন নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করেছিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। কিন্তু বিজ্ঞ বিচারক তাদের রিমান্ড ও জামিন আবেদন নাম মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।

বাদী আরো জানান, ইতিপূর্বে যারা জামিন নিয়েছেন তাদের মধ্যে সেকেন্দার মেকার চপল রায়হান ও আব্দুর রাজ্জাক আলাল সহ বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগের দোসর ও মেয়ের টুটুলের বডিগার্ড এবং মামলার আলামত গায়েব কারীরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদিকে প্রকাশ্যে নানান ভাবে হুমকি দেওয়ায় বাদী মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর রাতে বদরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। যাহার নম্বর ১০৮৮। ঢালাওভাবে আসামীদেন জামিন দেওয়া হলে তারা মামলার বাদিসহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সাধারণ মানুষের এবং শিক্ষার্থীদের প্রাণ নাশসহ যেকোনো ধরনের ক্ষতি করতে পারেন বলে মামলার বাদি আরো জানান।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth