১১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ - ২৫ মে, ২০২৫ - 25 May, 2025

মিছিল-মিটিং করলে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ব্যবস্থা: রংপুরে আইজিপি

আমাদের প্রতিদিন
6 months ago
263


‘অতীত অন্যায়-অপকর্মের কারণে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে,

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশ পুলিশের মহা-পরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম বলেছেন, ‘অতীত অন্যায়-অপকর্মের কারণে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কোথাও মিছিল-মিটিং করতে পারবে না। কোথাও মিছিল করলে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ছাত্রলীগের মিকার জন্য নিষিদ্ধ করা হয়নি। তাদের দীর্ঘদিনের অন্যায়-অপকর্মের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই ছাত্রলীগের কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের অধিকার নেই।

শনিবার দুপুরে রংপুরে এক সুধী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। রংপুর মহানগর পুলিশের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রংপুর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের কাঙ্খিত সেবা দিতে পারেনি। পুলিশ স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। করোনার সময় পুলিশের মানবিক কার্যক্রম প্রশংসিত হয়েছিল। বর্তমানে আমরা জনগণের আকাঙ্খাত বাস্তবায়ন করতে পারিনি। তাই আমরা জনগণের আকাঙ্খার পুলিশ গঠন করতে চাই। পুলিশের তাদের দায়িত্ব অনুযায়ী কাজ করবে। আমি পুলিশকে বলতে চাই, আপনারা কোন রাজনৈতিক দলের নেতাদের মাধ্যমে ব্যবহার হবেন না, আর রাজনীতিবীদদের বলতে চাই আপনারা দলীয় কাজে পুলিশকে ব্যবহার করবেন না। 

আইজিপি বলেন, ‘নতুন করে অস্ত্র নীতিমালা করা হচ্ছে। গত ১৫ বছরে যাদের অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার কথা ছিল না, তারা অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছিলেন এবং এই অস্ত্র গণ-অভ্যুত্থানে নিরীহ জনগণের বুকে ব্যবহার করা হয়। বিগত সরকারের ফ্যাসিস্টরা বৈধ অস্ত্র নিয়ে অবৈধভাবে জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে। এই অস্ত্রে অসংখ্য ছাত্র-জনতা আহত শহীদ হয়েছেন। অনেকে দীর্ঘস্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।

আবু সাঈদ হত্যাকাÐের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটির তদন্ত করছে। মামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জুলাই হত্যাকাÐের বিভিন্ন ঘটনায় পুলিশের কতিপয় বিপথগামী কর্মকর্তা জড়িত ছিল। গণ-অভ্যুত্থানের আগে নেতৃত্ব পর্যায়ের গুটিকয়েক বিপথগামী কর্মকর্তার কারণে পুলিশ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছিল।

আইজিপি বলেন, ‘এখন আমরা জনগণের আস্থার পুলিশ তৈরি করতে চাই। পুলিশ সুপার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদে ধারাবাহিকভাবে বদলি করা হচ্ছে। এই পদে যারা যোগ্য তাদের আনা হচ্ছে।

সুধী সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলম।

তিনি বলেন, ‘অনেক পুলিশ সদস্য অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ না করে কোনো কোনো দলের হয়ে নিজেদের উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছে। এক দল ক্ষমতায় এসে বাকি দলকে শোষণ করবে এমন বাংলাদেশ আমরা চাই না।’  সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম।

আবু সাঈদসহ অন্যান্য মামলার বিষয়ে আইজিপি বলেন, গণঅভ্যূত্থানে ছাত্র-জনতা আহত-নিহতের ঘটনার দায়ের করা মামলাগুলো আমরা সুষ্ঠুভাবে তদন্তের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আবু সাঈদের মামলাটি পিবিআইয়ের এসপি পদ মর্যাদার একজন কর্মকর্তা তদন্ত করছে। মামলায় দুই পুলিশসহ ২১ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ আব্দুল মজিদের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, রংপুরের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আজমল হোসেন, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট বাসুদেব বণিক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, জেলা পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন, সেনা কর্মকর্তা লেঃ কর্ণেল মাসুদ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম, রংপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক সামসুজ্জামান সামু, কেন্দ্রীয় জামায়াত ইসলামীর শুরা সদস্য মাহবুবার রহমান বেলালবৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুরের সমন্বয়ক ডাঃ জামিল হোসেন, ইমরান আহমেদ, আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন প্রমুখ। সুধী সমাবেশ শেষে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত-নিহত পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth