নির্বিচারে পাখি শিকার
আজাদুল ইসলাম আজাদ, পীরগঞ্জ রংপুর:
গ্রাম পল্লীর খাল বিলে নির্বিচারে শিকারিদের হাতে ধরা পরছে বিভিন্ন জাতের পাখি। কলা ও বেতের পাতা এবং বাঁশের বাতি মূল অস্ত্র বানিয়ে পাখি শিকারের নেমেছে শিকারিরা । আটককৃত পাখিদের মধ্যে ধরা পরছে বক ও অতিথি পাখি। স্থানীয়রা বলছেন পাখি শিকার করছে কতিপয় লোকজন।
রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন খালবিল এবং নদী নালায় ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি আহারে আসছে। শিকারি
নির্বিচারে এসব পাখি শিকার করছে। কোনো কিছুই তোয়াক্কা না করে শিকারিরা ভোর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত জলমহালে অতিথি পাখি ও বক শিকার করছে।
টুকুরিয়া এলাকার আমিনুল ইসলাম জানান, মানুষ ঘুম থেকে উঠার আগে নদী নালা এবং খাল-বিলে বিভিন্ন ধরনের পাখি শিকার করছে কতিপয় মানুষ। বেত আর কলাপাতা দিয়ে বানানো হয়েছে পাখি শিকারের ঘর। ঘরের ভিতর লুকিয়ে থাকেন শিকারি। আর শিকারিদের হাতে একটা শিকারি বক রয়েছে সেই বকের পায়ের সুতা ধরে টান দিলে তাদের বক লাফালাফি করে। আহারকৃত পাখিরা শিকারি পাখির
বিপদ দেখে উদ্ধার করতে এসে পড়ছে ঘরে উপর। শিকারি ভিতর থেকে হাত দিয়ে আটক করে বক। প্রতিদিন এভাবেই এলাকার খাল-বিলে জুড়ে অভিনব কায়দায় নির্বিচারে পাখি শিকার করছেন এক শ্রেণির অসাধু শিকারি।
কাবিলপুর এলাকার সায়েব আলী বলছেন, খাল বিলের পানি কমে যাচ্ছে। অল্প পানিতে ছোট-বড় নানা প্রজাতির মাছ দেখা যাচ্ছে। এসব মাছ খেতেই ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে বকসহ নানা প্রজাতির অতিথি পাখি। বিল জলাশয়ে পাখির এমন অবাধ বিচরণে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কতিপয় অসাধু শিকারি।
জাহাঙ্গীরাবাদ এলাকার সামাদ আলী বলেন, শিকারিরা অনেক কৌশলে বক শিকার করে বিক্রি করে। এক থেকে দেড় শত টাকায় বিক্রি করছে বক। দিবালোকে আদিবাসীদের লোকজন প্রায়ই সবধরনের পাখি বোন জঙ্গলে বাটুল এবং তীর-ধনুক দিয়ে শিকার করছে। অনেক জাতের পাখি আমাদের আবাদি জমির জন্য উপকার করে থাকে। মাটিতে থাকা পোকা এবং ধানের গাছের পোকা ধরে ধরে খায় এরা আমাদের উপকারী পাখি। সেই পাখি ঝাঁকে ঝাঁকে বসছে বাঁশ ঝারে। এসব পাখি শিকার করে কমিয়ে ফেলছে শিকারি, এদের দমাতে প্রশাসন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
খালাশপীর এলাকার রফিকুল ইসলাম জানান, শীত মৌসুমের শুরুতেই বাহির থেকে আমাদের দেশে অনেক অতিথি পাখি শীতের কারনে ছুটে আসে। এলাকার অসাধু লোকজন বিভিন্ন কৌশলে আটক করছে এসব অতিথি পাখি। এদের কারনে আমাদের দেশে আগের মতোন আর অতিথি পাখি আসে না। অসাধু পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে আইনগত ভাবে ব্যবস্থার দাবি জানান তিনি।
পাখি শিকারিদের সাথে কথা বলে, তাদের নাম ঠিকানা জানাতে চাইলে তারা সঠিক ঠিকানা বা নাম বলতে রাজি নন। অধিকাংশ শিকারি বলছেন, আমাদেরকে তো কেউ পাখি শিকার করতে নিষেধ করেননি। মন চাইলে আমরা মাঝেমধ্যে কিছু পাখি শিকার করি প্রতিদিন নয়। অনেকে শিকারি আছে তারা নিয়মিত ভাবে পাখি শিকার করে থাকে।
পাখি শিকারের বিষয়ে উপজেলা বোন কর্মকর্তা মিঠু তালুকদারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, পাখি শিকারিরের বিষয়ে আমাদেরকে কেউ অবগত করেননি। তবে এবিষয়ে যদি আমরা অভিযোগ পাই তাহলে অসাধু পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।