গঙ্গাচড়ায় অধিক লাভের আশায় আগাম আলু চাষে ব্যস্ত কৃষক
নির্মল রায় গঙ্গাচড়া (রংপুর):
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় শুরু হয়েছে আগাম আলু চাষ। কিন্তু আলুর বীজ, সার কিটনাশক ও মজুরের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার আগাম আলু চাষে ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। চাষে ব্যয় বাড়লেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় স্বল্পমেয়াদি আগাম আমন ধান ঘরে তুলে সে জমিতেই আলুর জন্য হালচাষ, পরিচর্যা, সার প্রয়োগ, বীজ সংগ্রহ ও রোপণে ব্যস্ত চাষিরা।
বাজারে আলুর দাম কমছে না, বরং বাড়ছে। আর এরই মধ্যে অধিক লাভের আশায় এ উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে কমবেশি আগাম আলু চাষে মাঠে নেমেছেন চাষিরা।
এখনও রোপা আমন ধান কাটা-মাড়াই শেষ না হলেও অতিরিক্ত মুনাফার আশায় চাষিরা তিস্তা চরাঞ্চল ও সবজি আবাদি জমিগুলো ফেলে না রেখে আগেভাগেই আলু চাষ শুরু করে দিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আগাম জাতের অ্যাস্টেরিক ও কার্টিনাল, লাল পাকড়ি, রোমানা,ডয়িমন্ড, আলু রোপণের ৫৫ থেকে ৬০ দিনের মাথায় তা বিক্রির উপযোগী হয়। এ আলু চাষে কিছুটা তুলনামূলক কম সময় লাগায় এ আলু চাষ করে লাভবান হওয়া যায় সহজেই।
তাই গতবারের মতো এবারও আগাম আলু চাষে নেমেছেন চাষিরা। আলু চাষের জন্য বেলে ও দোঁআশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী।
আগাম জাতের অ্যাস্টেরিক ও কার্ডিনাল আলুতে অতিরিক্ত মুনাফা হওয়ায় চাষিরা বেশ আকৃষ্ট হয়েছেন। ইতোমধ্যে উপজেলার আলু চাষিরা প্রস্তুতকৃত জমিতে আলুর বীজ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের ছালাপাক গ্রামের চাঁন মিয়া (৪৫), শাহিন (৪৮), তহিজারসহ (৪২) একাধিক চাষি জানান
গত কয়েক বছর ভালো দাম পাওয়ায় এখন আলু চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন তারা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আলুর বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন তারা। কিন্তু আলুর বীজ সার কিটনাশক ও মজুরের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার আগাম আলু চাষে ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে আলু চাষের প্রশিক্ষণ ও উৎপাদিত আলু সরকার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করলে তারা বেশি লাভবান হওয়ার পাশাপাশি আলু চাষে আরও আগ্রহী হবেন বলেও জানান চাষিরা। তারা আরও জানান, চলতি বছর তাদের দ্বিগুণ দামে আলুর বীজ কিনতে হচ্ছে। বর্তমানে বাজার থেকে তারা লাল পাকরি আলুর বীজ কিনছেন প্রতি কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। তবুও সবমিলিয়ে আলুতে অধিক লাভের আশায় বুক বেধেছেন তারা।
একই এলাকার আইয়ুব (৫৫), জাহাঙ্গীর (৫০) জানান, প্রতি বছর অতিরিক্ত মুনাফার লক্ষ্যে তাদের মতো অনেকেই আগাম আলু চাষ করেন। তবে চলতি বছর আলুর বীজের দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। এতে শঙ্কিত তারা। বীজ কিনতে অনেকেই হিমশিম খাচ্ছেন বলেও জানান চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম জানান, এবছর উপজেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৬৩৭০ হেক্টর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার থেকেও অধিক আলু চাষের সম্ভাবনা দেখছেন তিনি