২৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ - ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ - 07 December, 2024

নারী উদ্যোক্তার বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ

আমাদের প্রতিদিন
1 month ago
374


আজাদুল ইসলাম আজাদ, পীরগঞ্জ রংপুর:  

বিবাহের আগ থেকেই অসহায় বেকার মহিলাদের পাশে দাঁড়াতেন এবং নিজের অর্থ ব্যায় করে দরিদ্র মানুষ কে আশার আলোর পথ দেখাতে আগ্রহী। গ্রাম পল্লীর অসহায় বেকার মহিলাদের কে আলোর মুখ দেখাতে অলসতা নেই তার মাঝে। নিজের বাড়িতে কয়েকটি সেলাই মেশিন কিনে বিনামূল্যে সকল বয়সের মহিলাকে সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে গত ১৫ বছর থেকে। তার কাছথেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকেই এখন নিজের পায়ে দাড়িয়েছে।

রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা চতরা ইউনিয়ন বাসিন্দা আছমা বেগম। মানুষের ভালোবাসা নিয়ে এবং সেলাই মেশিন দিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে তিনি বর্তমানে চতরা ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা ভাইস সদস্য।

প্রশিক্ষণের বিষয় নিয়ে কথা হয় আছমা বেগম এর সাথে তিনি বলেন,  এলাকার গরীব অসহায় বেকার নারীদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলার প্রচেষ্টায় ধাপে ধাপে বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়ে আশার আলো দেখাচ্ছেন তিনি। এতে করে  তৈরি হচ্ছে কর্মহীন নারীদের কর্মসংস্থান। সেলাই ট্রেনিং সেন্টারে কর্মহীন নারীদের সেলাই, নকশীকাথাঁ ও হাতের কাজের উপর বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষন দিয়ে আসছেন গত ১৫ বছর থেকে । তারা ট্রেনিং সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বেশ কিছু মহিলা তাদের বাড়িতে সেলাই এর কাজ করে উপার্জনের টাকা দিয়ে সংসারের হাল ধরছেন।

তিনি আরও বলেন, আত্মশক্তিতে বলিয়ান ব্যক্তি কখনো দরিদ্র থাকতে পারে না। শক্তি সাহস রয়েছে এমন মহিলাদের কে আমি বিনামূল্যে আমার বাড়িতে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি কাজের ফাঁকে ফাঁকে। কেউ যদি প্রশিক্ষণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে আমি তাকে নিজের খরচে তাদের বাড়িতে গিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকি। ঈদের মৌসুমে আমার বাড়িতে নতুন নতুন ডিজাইনের টুপি তৈরি করে দেশের বিভিন্ন মোকামে আমদানি করে থাকি। সেই কাজে অর্ধশতাধিক মহিলা টুপি তৈরির কাজে জড়িয়ে পরে। এতে করে সবার সংসার চলে। এখন আমার ট্রেনিং সেন্টারে স্কুল পড়ুয়া মেয়েদের কে শুক্রবার এবং শনিবার সকালে ট্রেনিং দিয়ে আসছি। আর এ দলটি অল্প দিনের মধ্যেই তাদের শিখনির কাজ শেষ করতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।

মায়া গাড়ি গ্রামের রফিকুল ইসলামের কন্যা চতরা গালর্স স্কুলের ৮ ম শ্রেণির ছাত্রী পড়ুয়া ছাত্রী  সেতু আক্তার বলেন, আমি লেখাপড়া করছি এবং স্কুল বন্ধের দিনে সেলাই এর কাজ শিখতে আসি আছমা আপার বাসায়। গত এক মাস থেকে কাজ শিখতে আছি। এখানে আমরা ১০ জন স্কুল পড়ুয়া মেয়ে এক সাথে কাজ শিখছি।

কাঙ্গুর পাড়া গ্রামের জিন্নাত আরা জানান, সংসারে অনাটন অভাব দেখে আমি সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়ে একটি মেশিন কিনে বাড়িতে কাজ করছি। কাজ শেখার পরে আমার সংসারের কিছুটা কষ্ট দূর হয়েছে। টুকিটাকি কাজ করে ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা খরচ এবং নিজেদের জামাকাপড়ের সমস্যা সমাধান মিলছে।

শিবটারি গ্রামের একই পরিবারের মাও মেয়ে কাজ শিখে তারা বাড়িতে কাজ করে যাচ্ছে। দুলালী বেগম বলেন, দরিদ্র সংসারের হাল ধরতে সেলাইয়ের কাজ আগ্রহের সাথে শিখেছি। আমার মেয়েও প্রশিক্ষণ নিয়ে মেশিন কিনে জামাইয়ের বাড়িতে কাজ করছে। হাতের কাজ যেটাই করা যায় সেটাই সংসারের জন্য মঙ্গল।আমরা পিছিয়ে থাকতে চাইনা। পুরুষের পাশাপাশি আমরাও আয় করে সংসারের হাল ধরতে চাই।

চতরা এলাকার সচেতন মহলের লোকজন বলছেন, আছমা বেগম অনেক দিন থেকে এলাকার মহিলাদের কে সেলাইয়ের কাজ শিখিয়ে আসছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের কোন সহযোগিতা পেলে এলাকার বেকারত্ব দূর হতো এবং অদক্ষদের প্রশিক্ষিত করে দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তরিত করতে আরো অনেক বড় অবদান রাখতে পারতো। তবে সে এখন পর্যন্ত অনেক মহিলা কে কর্মজিবী করে তুলেছেন।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth