৪ চিকিৎসক দিয়ে চলছে বেরোবির মেডিকেল সেন্টার ; নেই কোনো স্পেশালিষ্ট
বেরোবি প্রতিনিধি :
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চারজন ডাক্তার, একজন করে নার্স, ইসিজি টেকনিশিয়ান, প্যাথলজি টেকনিশিয়ান, স্টোরকিপার, অফিস সহকারী, মাস্টার রোল, ও তিনজন এম.এল.এস.এস সহ মোট ১৩জন স্টাফ দিয়ে চলছে মেডিকেল সেন্টার।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৮,০০০ জন । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর সাধারণ নির্দেশিকা অনুসারে, প্রতি ১,০০০ জন মানুষের জন্য কমপক্ষে ১ জন ডাক্তারের প্রয়োজন। সেই হিসেবে, ৮,০০০ শিক্ষার্থীর জন্য প্রয়োজন হবে ৮ জন ডাক্তার। জরুরি সেবাদানের জন্যে ২৪/৭ ডাক্তার প্রয়োজন ১ থেকে ২জন।
সাপ্তাহিক ছুটি (শুক্রবার ও শনিবার) ও সরকারী ছুটি ব্যাতিত প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সেবাদান করে মেডিকেল সেন্টারটি। বিকেল ৫টার পর কোন শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে জরুরি সেবা গ্রহণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের এম্বুলেন্স ব্যবহার করতে তাকে পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। প্রথমে জানাতে হয় চিফ মেডিকেল অফিসারকে, সেখান থেকে অনুমতি মিললে এম্বুলেন্স ড্রাইভারকে জানানোর পর গুনতে হয় প্রহর, কখন পৌছাবে আট কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের একমাত্র ভরসা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। নানা ঝামেলা শেষ করে চিকিৎসা নেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরতে হলে গুনতে হবে চার থেকে পাঁচশত টাকা। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের এম্বুলেন্স শুধু পৌঁছে দেয়, ফেরত নিয়ে আসার এখতিয়ার তার নেই।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের সেবার মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সময়ে সময়ে দেখা যায় নানা প্রতিক্রিয়া।
ফুটবল খেলতে গিয়ে আহত হওয়া এক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেন ”মেডিকেল সেন্টারের সেবা পেতে হলে শুক্র-শনিবার ও বিকাল ৫টার পর আমাদের অসুস্থ হওয়া নিষেধ।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী মো. ওবায়দুর রহমান শিশির সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুকে লিখেছেন, “বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এটা কি মেডিকেল নাকি সার্কাস? এখানে কোনো প্রয়োজনীয় ওষুধ নেই। চারটা প্রেসক্রাইব করলে দুটাই থাকে না। তাহলে এই সার্কাস চালানোর মানে কি?”
এ বিষয়ে চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. শাহরিয়ার বলেন , "জরুরি সেবা হলেও লোকবল কম থাকায় ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা সম্ভব নয়।"
ঔষধ সংকট এবং ইসিজির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, "প্রাইমারি ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়। তাই কমন ডিজিজগুলো মাথায় রেখে ওষুধ সংরক্ষণ করা হয় এবং ইসিজি মেশিন আছে তবে কার্ডিওলজিস্ট না থাকায় প্রেসক্রাইব করা সম্ভব হচ্ছে না।"
৩০ অক্টোবর ২০১৯ সালে আধুনিকীকৃত মেডিকেল সেন্টার হিসেবে এর উদ্বোধন করেন সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিবেন বলে শিক্ষার্থীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী আশ্বস্ত করেন।