রংপুর সিটি‘র অস্থায়ী কর্মচারীদের আত্তীকরণ করে স্থায়ীভাবে নিয়োগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদন সকল অস্থায়ী মাষ্টাররোল, চুক্তিভিত্তিক ও দৈনিক মজুরী কর্মচারীদের চাকুরী আত্তীকরণ করে স্থায়ীভাবে নিয়োগের দাবি বাস্তবায়নে রংপুর সিটি কর্পোরেশন চত্তরে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন সমাবেশ করেছে রংপুর সিটি কর্পোরেশন কর্মচারী ঐক্য পরিষদ ।
শনিবার বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান রংপুর সিটি কর্পোরেশন কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন।
তিনি বলেন ২০১২ সালের ২৮ জুন রংপুর পৌরসভা থেকে সিটি কর্পোরেশনে উন্নিত হয়। যার আয়তন বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম সিটি ২০৫.৭০ বর্গ কিঃমিঃ। জনসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরপরই সাংগঠনিক কাঠামোতে ৫০৭ টি পদ সৃজনের প্রস্তাব স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। দীর্ঘসূত্রিতা এবং অনুমোদন প্রক্রিয়ায় জটিলতা ও কালক্ষেপন করে ১২ বছরেও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাংগঠনিক কাঠামো অদ্যাবধি অনুমোদন দেয়া হয়নি অথচ অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন রংপুর এর পরে স্থাপিত হয়েও তাদের সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে রংপুর সিটি কর্পোরেশন সবচেয়ে বেশি বৈষম্যেও শিকার হয়েছে ।
বাজেট বৈষম্যসহ অন্যান্য প্রশাসনিক উন্নীতকরন সকল কার্যক্রমে অনেক পিছিয়ে পড়েছে। অধুনালুপ্ত রংপুর পৌরসভার অতি অল্প সংখ্যক জনবল এবং মাস্টাররোল, চুক্তিভিত্তিক ও দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক কর্মচারী দ্বারা দীর্ঘ ১২ বছর ধরে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। আমরা অনেকেই কমপক্ষে ৫-১৫ বছর ধরে অস্থায়ী (মাস্টাররোল, চুক্তিভিত্তিক ও দৈনিক মজুরী) হিসাবে কর্মরত আছি। যেখানে বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫ নং অনুচ্ছেদে নাগরিকদের যুক্তিসংগত মজুরীর বিনিময়ে কর্মসংস্থান নিশ্চয়তার বিষয়টি রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে বলা হয়েছে সেখানে আমাদেরকে অত্যান্ত কম বেতন ৩৫০-৪৫০ মাত্র টাকা দৈনিক মজুরী প্রদান করা হয়ে থাকে। অথচ আমরাই সিটি কর্পোরেশনের সমুদয় রাজস্ব আহরণ থেকে শুরু করে কর্পোরেশনের প্রত্যেক বিভাগ/শাখায় প্রায় সকল দাপ্তরিক গুরুত্বপূর্ণ কাজই করে থাকি। একজন (মাষ্টার্স/সমমান) কর্মচারীর পরিবারে ৬ জন সদস্য বিবেচনায় আমাদের মাসিক বেতন/মজুরী (শুক্র, শনি এবং সরকারি কোন গেজেটেড ছুটিতে মজুরী প্রদান করা হয়না ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায় ৩ বেলা খাবার, মাথা গোজার ঠাঁই, চিকিৎসা, সন্তানের শিক্ষা ইত্যাদি ব্যয় মিটিয়ে মানবিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক মর্যাদা নিয়ে জীবনধারণ করা দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। আমরা রংপুর সিটি কর্পোরেশনের অস্থায়ী কর্মচারীরা চরম বৈষম্য ও প্রহসনের শিকার। আমরা আপনার নিকট অত্যন্ত কৃতজ্ঞ যে, একটি নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থার যুগ-সন্ধিক্ষণে বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, অধিকারের সুরক্ষা ও সুবিচার সুপ্রতিষ্ঠার জন্য আপনি অক্লান্ত চেষ্টা ও পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায়, আপনার সানুগ্রহ সহানুভূতি ও মানবিক মহানুভবতায় বিবেচনা করে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাংগঠনিক কাঠামো অবিলম্বে অনুমোদন পূর্বক ঐক্য পরিষদের আওতাধীন সকল অস্থায়ী কর্মচারীগণের দাবি বাস্তবায়ন তথা আমাদের চাকুরী আত্তীকরণ করে স্থায়ীভাবে নিয়োগের প্রয়োজনীয় আদেশ প্রদানের
জন্য অনুরোধ জানান।
এর আগে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার ও রংপুর সিটি প্রশাসক মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয় ।
এদিকে সিটি কর্পোরেশনের সামনে মানববন্ধন সমাবেশে চলাকালে বক্তব্য দেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশন কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মোঃ রবিউল ইসলাম (সুমন), সাধারণ সম্পাদক মোঃ বেলাল হোসেন, সিনিঃ সহঃ সভাপতি মোঃ মাসুদ আলম, সহঃ সভাপতি শিহাব উল করিম, সাংগঠনিক সম্পাদক রেজওয়ান আহমেদ সৌধ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তার সহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গণজাগরণে আত্মদানকারী প্রত্যেক শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আমাদের এই গণ অভ্যুত্থানের সময় অসংখ্য শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ আহত ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তাদের সবার দ্রুত নিরাময় ও সুস্থতা কামনা করছি। আমরা শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করছি আমাদের আবু সাঈদ, মীর মাহবুবুর রহমান মুগ্ধ, ওয়াসিম আকরামসহ আরও অসংখ্য শহীদদের।