গঙ্গাচড়ায় সর্বোচ্চ আলুর কেজি ৭০ টাকা
নির্মল রায়,গঙ্গাচড়া (রংপুর):
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় এ বছর সর্বোচ্চ দামে আলুর কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদন মৌসুমে যে আলুর কেজি ১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে সেই আলু বর্তমানে হিমাগারের কারসাজিতে কেজি ৭০ টাকায় পৌঁছেছে বলছেন বিক্রেতারা। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, যখন প্রথম আলু তুলে বিক্রি করেন, তখন এক কেজি আলুর দাম থাকে ১৪ থেকে ১৫ টাকা। কিন্তু বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে শুরু করে জুন মাস থেকেই, আর অক্টোবরের মধ্যে আলুর দাম ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় গিয়ে পৌঁছায়। আলুর দাম গত সপ্তাহের চেয়ে ৫ টাকা এবং দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে। যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ কেজি টাকা দরে। আলুর এ দাম চলতি বছরের সর্বোচ্চ। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর এই সময়েই আলুর দাম বাড়ে। এর মূল কারণ হলো হিমাগার মালিক, আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের বাজার নিয়ন্ত্রণের কারসাজি। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত আলু মৌসুম শুরুর দিকে কম দামে বিক্রি করলেও আলু মজুতকারী ব্যবসায়ীরা সেই আলু বাজারে বিক্রি করতে ধীর গতিতে চলেন, ফলে দাম বাড়তে থাকে। খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ দাম বেড়ে যাওয়ার এই বিষয়টি কাকতালীয় নয়, বরং এক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পিত কারসাজির ফল। খুচরা বাজারের বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত রবিবার গঙ্গাচড়ার বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি আলু ৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তার আগের সপ্তাহে আরো পাঁচ টাকা কম ছিল। অর্থাৎ দুই সপ্তাহ আগে আলুর দাম ছিল ৬০ টাকার মধ্যে। পাইকারি বিক্রেতারা জানান, এখন পাইকারিতেই প্রতি কেজি আলু ৬২-৬৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা এক সপ্তাহ আগে ৫৮-৬০ টাকা ছিল।
বাজারে সংকট তৈরি হওয়ার কারণ হলো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ। ব্যবসায়ীরা ধীর গতিতে আলু বিক্রি করেন, আর দাম বেড়ে যায় প্রতি কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা। গঙ্গাচড়ার মন্থনা বাজারে সবজি কিনতে আসা মিন্টু মিয়া নামের এক ক্রেতা জানান, দুই সপ্তাহ আগে অন্য সবজির দাম বেশি থাকলেও আলুর দাম কম ছিল। তখন আলুই বেশি দিয়ে সবজির চাহিদা মেটানো হয়েছে। আজকে কেজি ৭০ টাকা দরে ৩৫০ টাকা দিয়ে ৫ কেজি আলু কিনলাম। বাজারে আলুর দাম এ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এভাবে বাড়তে থাকলে আমরা নিম্নবিত্তরা চলবো কীভাবে। আলুর দামের বিষয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, আলুর মৌসুম এখন শেষের দিকে। প্রতি বছর এ সময় দাম বাড়ে। তবে এ বছর শুরু থেকে আলু চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এরপর এখন বেড়ে আরো অস্থিতিশীল হয়েছে।
গঙ্গাচড়া বাজারের ব্যবসায়ী আলমগীর বলেন, নতুন আলু না আসা পর্যন্ত দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এ বছর অতিবৃষ্টি ও বন্যায় দুই দফায় আলুর বীজ নষ্ট হওয়ায় সারা বছর আলুর দামে ছিল অস্থিতিশীলতা। বর্তমানে বছরের সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে আলু।