অবৈধভাবে করতোয়া নদীর বালু লুট
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মহা উৎসবে করতোয়া নদীর বালু উত্তোলন আর এই বালু প্রকাশে বিক্রি করা হচ্ছে। এ কাজে সামনের সারিতে রয়েছেন কতিপয় মানুষ। মামলা মেশিন জব্দ এবং বালু বোঝাই গাড়ি আট করেও বন্ধ হচ্ছে না বালু খেকদের বালু উত্তোলনের কাজ। প্রশাসনের অভিযান কেও তোয়াক্কা করছেনা বালু মহাজনেরা এলাকাবাসীর অভিযোগ।
রোববার এবং সোমবার রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদী ঘুরে দেখা যায় নদীর কিনারে ৯ টি স্থানে ড্রেজার ও স্যালো মেশিন বসিয়ে পাইপ দিয়ে টানা হচ্ছে বালু। ইটের গাথনির কাজে মেটা বালু এবং মাটি যুক্ত বা (ভিট) বালু ভরাট কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে গ্রামীণ জনপদের খানাখন্দের সৃষ্টিসহ নাজেহাল হয়ে পরছে পাকা সড়ক।
উপজেলার ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া সেতু উত্তর পাশে সাজেদুল ইসলাম তার পাশেই কাচদহ্ ঘাটে মুক্তার মিয়া মেশিন দিয়ে বালু টানছে। মহেন্দ্র যোগে দিনরাত রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের সাথে কথা বলে জানাযায়, প্রশাসনের চাপ রয়েছে বালুর পয়েন্টর উপর, তার পরেও এই ব্যবসা চালিয়ে নিতে হবে।
সেতুর দক্ষিণ পাশে সুজারকুটি করতোয়া নদীতে আনোয়ার মিয়া, আমিনুল ইসলাম এবং কিনাসহ ৩ টি স্যালো মেশিন বসিয়ে বালুর ব্যবসা করে আসছেন কয়েকবছর থেকে। তাদের সাথে বলে জানাযায়, মাঝেমধ্যে প্রশাসন বালু পয়েন্টে গিয়ে পাই কেটে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এতে তাদের ক্ষতির পরিমাণ বেশি বলে দাবি করেন। এখানে মোটা বালু নেই মাটি যুক্ত বা (ভিট) বালু তাদের ৩ টি পয়েন্টে উত্তোলন করা হয়। মোটা বালু তাদের এলাকায় নেই সেই কারনে তারা এই ব্যবসায় পুষিয়ে উঠতে পারছে না।
খালাশপীর বাজার থেকে ২ কিলোমিটার দক্ষিণে বাশপুকুরিয়া বড় ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন গ্রামের লোকজন এবং তাদের পার্টনার রয়েছে প্রায় ৫০ জন। পয়েন্টের লোকজন বলছেন, পয়েন্ট থেকে দিনাজপুর এলাকার ২ কিলোমিটার দূরে পাইব দিয়ে বালু টানা হচ্ছে। তাদের পয়েন্টে মোটা বালুর চাহিদা প্রচুর সেই কারনে একটি ভেকু দিনরাত গাড়ি লোডের কাজে ব্যস্ত থাকে। এখানে থেকে প্রতিদিন শতাধিক গাড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নেয়া হয় বালু। আর এটি এলাকার মধ্যে বড় পয়েন্ট। তাছাড়া মাঝেমাঝে এলাকার লোকজন চাপ দেয় পয়েন্ট বন্ধের জন্য। আবার কাউকে টাকা দিয়ে দমিয়ে রাখা হয়।
পত্নীর বাজার থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে রামনাথপুর করতোয়া নদীর বানুর ঘাট এখানেও স্যালো মেশিন দিয়ে বিপ্লবসহ গ্রামের অর্ধশতাধিক পার্টনার ব্যবসার সাথে জড়িত।
গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, গ্রামের রাস্তা অচল করে বালুর ব্যবসা করা হয় সেই কারনে পয়েন্ট বন্ধের জন্য লোকজন চাপ দেয়। যে কারনে গ্রামের প্রায় ৫০ জন মাথা তোলা ব্যক্তি কে নিয়ে চলে বালুর ব্যবসা। পয়েন্টে কখনো প্রশাসনের লোকজন বা সাংবাদিক ঢুকলে মেশিন চালকে বা লেবাদের কে গ্রামের লোকজন আগে থেকেই সিগনাল দেয়। সিগনাল পেয়ে সাথে সাথেই লোকজন বালুর পয়েন্ট থেকে লুকিয়ে পড়ে।
কাঞ্চন বা (গড়ের) বাজার থেকে পশ্চিমে হোসেনপুর হয়ে ২ কিলোমিটার দূরে করতোয়া নদীর কুলানন্দপুর ঘাট। সেখানে দিনাজপুর জেলার ঘোরাঘাট উপজেলার কুলানন্দপুর গ্রামের শামীমসহ পীরগঞ্জের হোসেনপুর গ্রামের প্রায় ১৪ জন পার্টনার রয়েছে এ ব্যবসার সাথে। তাদের লোকজন জানান, প্রতিটি গাড়ি থেকে ৭ শত টাকা পান তারা। দুঃখের বিষয় গত ১ সপ্তাহ আগে কুলানন্দপুর গ্রামে বিদেশি লোকজন তাবলীগ করতে আসে। সকালে তাদের বালুর পয়েন্টের কাছাকাছি নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে দিনাজপুরের ফায়ারসার্ভিসের লোকজন এসে বিদেশি মানুষের লাশ উদ্ধার করে। সেই কারনে ৫ দিন পয়েন্ট বন্ধ ছিল। এতে তাদের ক্ষতির পরিমাণ অনেক। পয়েন্টের লোকজন আমাদের প্রতিবেদকে বলেন, সাংবাদিক ভাই আজকে কেবল চালু করলাম বালুর পয়েন্ট দূর থেকে এসেছেন ২ শ টাকা নিয়ে গাড়িতে তেল তোলেন।
চতরা ইউনিয়ন পরিষদ হইতে পশ্চিমে ৫ কিলোমিটার দূরে কুয়াতপুর হামিদপুর বিহারি পাড়া। বর্তমান ইউপি সদস্য নুর মোহাম্মদ গোল্লাসহ কমপক্ষে ১৫ জন সদস্য নিয়ে গঠিত বিহারি পাড়া বালুর পয়েন্ট। করতোয়া নদী শাসন ব্যবস্থা জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্লকের কাজ করেছেন অথচ ব্লকের পাশে থেকে দিদারছে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, বিহারি পাড়া পীরগঞ্জ থানার ভিতর হলেও নদীর পশ্চিম পারে প্রশাসনের লোকজন আসে কম। কারন ১০ কিলোমিটার পথ ঘুরে এখানে আসতে হয়। যে কারনে প্রশাসনের লোকজন এখানে আসে না। তবে চতরা ইউপি সদস্য নূর মোহাম্মদ গোল্লা মিয়ার এই পয়েন্ট থেকে মহাযজ্ঞ। বিশেষ করে এই পয়েন্টের বালু সবসময় দিনাজপুর এলাকায় বিক্রি করে থাকে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ বালুর গাড়ি এলাকার কাঁচাপাকা রাস্তাঘাট নষ্ট করে দাপটের সাথে যাতায়াত করে। এইসব গাড়ির দাপটে গ্রামের মহিলা মানুষ এবং স্কুল পড়ুয়া ছেলে-মেয়ে সবসময় আতংকের মধ্যে থাকতে হয়। এছাড়াও গরুছাগল, হাস মুরগী, নিয়ে বড় বিপদে তারা। বালুর গাড়ির সাথে প্রায়ই দূর ঘটনা ঘটেছে। এসব অবৈধ বালুর পয়েন্ট বন্ধের দাবি জানান তারা।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা বেগম এর সাথে কথা হলে, উপজেলার অনেক এলাকায় অভিযন চলছে। বালুর পয়েন্ট গুলোতেও মোবাইল কোর্ড পরিচালনা করা হবে।