১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ - ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ - 04 December, 2024

রাস উৎসব উপলক্ষে ঐতিহাসিক কান্তজিউ মন্দির প্রাঙ্গনে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী রাস মেলা

আমাদের প্রতিদিন
2 weeks ago
95


ভক্ত ও পূণ্যার্থীর ভীড়ে মুখরিত কান্তজীউ মন্দির প্রাঙ্গন

দিনাজপুর প্রতিনিধি:

হাজারো ভক্ত, পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থীর ভীড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে দিনাজপুরের ঐতিহাসিক কান্তজিউ  মন্দির প্রাঙ্গন। মন্দিরের চারিদিকে ভজন, কীর্তন আর ধর্মীয় সঙ্গীতের ধ্বনীতে অন্যরকম এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে ঐতিহাসিক এই মন্দির ঘিরে।

শ্রী কৃষ্ণের রাসলীলা উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে পুর্ণিমা তিথিতে রাস উৎসবে দেশ-বিদেশ থেকে আগত এসব ভক্ত, পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থী ভীড় জমায় প্রাচীন স্থাপত্য শৈলীর নিদর্শন দিনাজপুরের ঐতিহাসিক কান্তজীউ মন্দির প্রাঙ্গনে।গতকাল  শুক্রবার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কান্তজীউ মন্দির প্রাঙ্গনে আসতে শুরু করে ভক্ত, পুণ্যার্থী ও ভক্তরা। সন্ধ্যা হতে না হতেই ভর্তি হয়ে যায় কান্তজিউ মন্দির ও এর আশপাশ এলাকা। রাত যতই গভীর হয়-ততই ভীড় বাড়তে থাকে মানুষের।

কেউ এসেছেন মনোবাসনা পুরনে, কেউ এসেছেন মনোবাসনা পুরনের পর কৃতজ্ঞতা স্বরূপ মন্দিরে প্রনাম করতে, কেউ এসেছেন ঐতিহাসিক এই মন্দির দর্শনে, আবার কেউ কেউ এসেছেন রাস উৎসব স্বচক্ষে অবলোকন করতে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা থেকে আগত ভক্ত নলনী কান্ত রায় জানালেন, তিনি প্রথম বারের মতো এসেছেন এই রাস উৎসবে। বহুদিন থেকে শুনেছেন ঐতিহাসিক এই মন্দিরে রাস উৎসব সম্পর্কে। কিন্তু আসা হয়নি। তাই শেষ বয়সে এসেছেন পরকালের শান্তি কামনায়। একই জেলার উজ্জল চন্দ্র দাস জানালেন, তিনি এ বছর ধরে চারবার আসলেন এই রাস উৎসবে। প্রথমবার আসার পর তিনি এখানে মানত করেছিলেন। তার সেই মনোবাসনা পুরন হয়েছে। তাই যতদিন বেচে থাকবেন ততদিন এই রাস উৎসবে আসার ইচ্ছা আছে তার।

রংপুর থেকে আসা রাধা রানী জানালেন, তিনি শুনেছেন-এখানে এসে কেউ কিছু চাইলে তা বিফলে যায়না। তাই তিনি এসেছেন মনোবাসনা পুরনে। ভগবান শ্রী কৃষ্ণ তার ইচ্ছা পুরন করবেন এমন আশা তার। এ ধরনের অনেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন মনোবাসনা পুরন, কৃতজ্ঞতা আর দর্শনের ইচ্ছা নিয়ে।

শুধু দিনাজপুর ও এর আশেপাশের এলাকা ও দেশের বিভিন্ন থেকে প্রান্ত ভক্ত, পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীরা বাস, মাইক্রোবাস এবং অন্যান্য যানবাহনযোগে আসেন মন্দির প্রাঙ্গনে। উৎসবের আয়োজক দিনাজপুর রাজ দেবোত্তর এস্টেট-এর পক্ষে ডাঃ ডি.সি রায় জানালেন, ১৭৫২ সাল থেকে চলে আসছে এই রাস উৎসব।

এদিকে রাসপুর্ণিমা উপলক্ষে কান্তজিউ মন্দির প্রাঙ্গনে আয়োজন করা হয়েছে মাসব্যাপী রাস মেলার। শুক্রবার দিবাগত রাতে মাস ব্যাপী এই রাস মেলার উদ্বোধন করা হয়। মেলায় ধর্মীয় কীর্ত্তনগান ছাড়াও হিন্দু ধর্মীয় বই-পুস্তক, শাঁখা-সিদুর, শঙ্খ, বালা, চুড়িসহ নানান পণ্যের পসরা সমৃদ্ধ দোকান মেলায় শোভা পেয়েছে।

উল্লেখ্য, ঐতিহাসিক কান্তজিউ মন্দির ১৭০৪ সালে মহারাজা প্রাণনাথ নির্মান কাজ শুরু করে। তিনি মারা গেলে তার ছেলে রাজা রামনাথ ১৭৫২ সালে নির্মান কাজ সম্পন্ন করে। সেই থেকে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে কান্তজিউ রাস মেলা।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth