কদর রয়েছে গালভরা তরকারি মুলা’র
আজাদুল ইসলাম আজাদ, পীরগঞ্জ রংপুর:
গালভরা তরকারি মুলা’র কদর রয়েছে এবছর । চাষাবাদের উপর নির্ভর করে এই সবজি চাহিদা। আবাদ একটু বেশি হলেই গ্রামগঞ্জে বা হাটবাজারের অলিতে-গলিতে মুলার ঢলাঢলি হয়ে থাকে। অনেক সময় চাষিরা নদীতে ভাসিয়ে দেয় এই তরকারি মুলা। বর্ষা মৌসুমের শেষ পর্যায়ে অতিবৃষ্টি এবং বন্যার কারনে হাটবাজারে প্রচুর চাহিদা বেড়েছে এই মুলা’র। বর্তমানে চাষিদের পকেট গরম করছে এই সবজি মুলা। আনন্দের সাথে চাষিরা মুলার চাষ করছে।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদীর বালু চর ঘুরে কথা হয় মুলা চাষিদের সাথে। চাষিরা বলছেন, এবছর মুলা’র আবাদ কম হয়েছে গতবছর আবাদ বেশি করা হয়েছিল তাই মুলা নদীতে ভেসে দেয়া হয়েছে। সেই কারনে এবছর এই তরকারির আবাদ কম করা হয়েছে। মুলা পানি জাতীয় সবজি ৪ থেকে ৬ টি মুলা এক কেজি হয়, আর ৪০ কেজিতে ১ মন। বর্তমানে ১২ শ টাকা দরে প্রতি মন মুলা বিক্রি করা হচ্ছে তাও আবার জমি থেকে। এই সবজি এবার চাষিদের পকেট গরম করে দিচ্ছে।
মুলা চাষি কুয়াতপুর হামিদপুর গ্রামের মুর্তুজা মিয়া জানান, কেউ বুঝতে পারেনি এবার মুলার দাম বেশি হবে। গত বছরে ঢলাঢলি ছিল সেই কারনে আবাদ কম করা হয়েছে। করতোয়া নদীর বালু চরে প্রতিটি সবজির আবাদ ভালোই হয়। এছাড়াও এখানে মুলা সাথী ফসল হিসেবেও জমিতে চাষ করা হয়। মরিচ,টমেটো, আলু,মিষ্টি কদুসহ অনেক সবজির সাথে এই মুলা’র চাষ করা হয়। বিশেষ করে এই বালু চরে সবজি মুলার ফলন ভালো হয়ে থাকে। এখানে যতজন কৃষক মুলার চাষ করছে তারা সকলেই লাভবান হয়েছে।
একই এলাকার শামীম মিয়া বলেন, নদীর তীরে মুলার আবাদ করে অনেক সুবিধা। পাইকাররা প্রতিদিন নদীর তীরে এসে মুলা কিনছে। এতে সময় বাঁচে এবং হাটবাজারে যেতে হয় না। মুলা কেটে নদীর পানিতে পরিস্কার করে ওজন দিলেই ঝামেলা শেষ। এখান থেকে পাইকাররা ট্রাক যোগে ঢাকাসহ বিভিন্ন মোকামে আমদানি করে এই মুলা।
পাইকার হাফিজার রহমান জানান, হাটে মুলা যে দরে বিক্রি করা হয় তার চেয়ে ১ শত টাকা কমে এখানে কেনা হয়। এতে সকলের সুবিধা কৃষকের হয়রানি কমছে, এখানে মুলা ওজন করে দিয়ে তারা খেত খামারে কাজ করছে বাড়তি সময় লাগে না। তাই এলাকার চাষিরা আমার কাছে মুলা বিক্রি করে থাকে। এ এলাকায় কয়েকজন মুলার পাইকার রয়েছে। আমি মুলা কিনে ক্যারেটের মাধ্যমে ঢাকায় নিয়ে যাই। প্রতিটি ক্যারেটে ২০ কেজি হারে মুলা থাকে। এতে করে সবজির আঘাত পায় না এবং সবজি সুস্থ বা কালার ভালো থাকে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। পাইকারি আরোদে এই সবজির চাহিদা প্রচুর এবং দামেও বেশি পাওয়া যায়। তবে এ ব্যবসায় এখন পর্যন্ত আমি লাভে আছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার জানান, উপজেলায় প্রায় ৫৬ হেক্টর জমিতে মুলা’র চাষ করা হয়েছে। আগাম জাতের মুলা চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে । মুলা চাষে খরচ কম আর এটি অল্প দিনের আবাদ এবং এই মুলা সাথী ফসল হিসেবে চাষ করা যায়।