৮ দফা দাবিতে সনাতন জাগরণ জোটের রংপুর বিভাগীয় মহাসমাবেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ জোটের আয়োজনে ৮ দফা দাবিতে রংপুর মহানগরীর মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে আজ (২২ নভেম্বর) শুক্রবার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিভাগীয় মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে।
উক্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ জোটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শ্রীমৎ কুশল বরণ। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় ইসকনের সাংগঠনিক সম্পাদক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। বক্তব্য রাখেন, ফরিদপুরের রাধাগোবিন্দ মন্দিরের ব্রহ্মচারী শ্রীপাদ গোপীনাথ, চট্টগ্রামের ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের ব্রহ্মচারী লীলারাজ গৌর দাস, স্বামী বিদ্যানন্দ, স্বামী ওমেষানন্দ, লীলা রাজ প্রভু, রণনাথ মহারাজ, রবি স্বরানন্দ পুরী মহারাজ, সুজন দত্ত, প্রদীপ কান্তি দে, নিহার হালদার,টিটু শীল, রুবেল সাহা, অলোক নাথ, দিপু রায়, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ জোট রংপুরের সমন্বয়ক দিপকংর ভট্রাচার্য্য প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মালম্বীদের প্রতি দেশজুড়ে নানা অত্যাচার ও সহিংস ঘটনায় অনেকেই হতাহত হচ্ছেন, অনেকেই ভয়ভীতির মধ্যে জীবন যাপন করছেন এই অভিযোগ তুলে সরকারের কাছে এসব বন্ধের দাবি জানানো হয়। অন্যথায় এসবের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ জোট ও এর অঙ্গ সংগঠন তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
সমাবেশের মঞ্চ থেকে আরও অভিযোগ করা হয়, তাদের আজকেই এই সমাবেশে আসার পথে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় মহাসড়কে তাদের পরিবহনের ওপর হামলা চালানো হয়। এই হামলায় প্রায় ২০জন আহত হয়েছেন। তিনজনকে গুরুতর অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে বলে সভা থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
সমাবেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান, ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে ‘হিন্দু ফাউন্ডেশনে’ উন্নীত করাসহ বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মীয় ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে রূপান্তর, ‘দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন’ প্রণয়ন এবং ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পন আইন’র যথাযথ বাস্তবায়ন, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলোতে সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ ও প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনা কক্ষ বরাদ্দ করা, ‘সংস্কৃত ও পালি শিক্ষাবোর্ড’ আধুনিকায়ন ও দুর্গাপূজায় ৫ দিন ছুটিসহ প্রতিটি স¤প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবে প্রয়োজনীয় ছুটির দাবি জানানো হয়।
এর আগে শুক্রবার সকাল থেকে রংপুর বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বাস, ট্রেন, মাইক্রো, পিকআপ, ট্রাক, অটোসহ বিভিন্ন যানবাহনে হিন্দু ধর্মালম্বীরা সমাবেশ স্থলে আসতে শুরু করেন। অনেকেই মিছিল সহকারে আসেন।