গঙ্গাচড়ায় অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীদের তান্ডবে কমছে কৃষিজমি
নির্মল রায়,গঙ্গাচড়া (রংপুর):
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার শত শত বিঘা পতিত ও আবাদী জমি থেকে অপরিকল্পিতভাবে মাটি কেটে বিক্রি করছেন অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীরা।
তারা খননযন্ত্র দিয়ে তিন ফসলি জমির উর্বর মাটির ওপর থেকে এক থেকে দেড় হাত (টপ সয়েল) তুলে নিয়ে অবৈধ ট্রলি গাড়িতে করে ইটভাটা,বসতবাড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় মাটি বিক্রি করছেন।
কোনো ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এসব মাটিখেকোদের। ফলে একদিকে জমি হারাচ্ছে তার উর্বরতা অন্যদিকে কমে যাচ্ছে মোট কৃষি জমির পরিমাণ। সম্প্রতি উপজেলার কয়েকটি স্থানে গিয়ে দেখা যায়, অপরিকল্পিতভাবে পতিত ও ফসলী জমিতে পুকুর খনন করা হচ্ছে।
কোনো কোনো জমির উর্বর অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত খনন যন্ত্র দিয়ে ফসলি জমির এসব মাটি কেটে ট্রলি গাড়ি ও ড্যাম ট্রাকের সাহায্যে বিভিন্ন ইটভাটা ও বসত বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে সড়কগুলোয় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শতশত ফিটনেসবিহীন অবৈধ ট্রলি গাড়ি। এসব গাড়ির অবাধ চলাচলের কারণে নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ কাচা ও পাকা সড়ক।
ট্রলিতে বহন করা মাটি সড়কের ওপরে পড়ে থাকছে। আবার অনেক সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ফলে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেকে।
স্থানীয়রা বলছেন, ফসলি জমি ধ্বংসের জন্য শুধু মাটি ব্যবসায়ীরাই দায়ী নয়, জমির মালিকরাও দায়ী। কারণ মাটিখেকোদের নগদ টাকার লোভে পড়ে থাকেন জমির মালিকরা। এই সুযোগে কৌশলে জমির মালিকদের নগদ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ফসলি জমির মাটি কিনে নেয় মাটি ব্যবসায়ীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা জুড়েই মাটি ব্যবসায়ীরা ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে অবাধে ইটভাটা,বসতবাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে।
অভিযোগ রয়েছে, একটি প্রভাবশালী মহল এসব মাটিখেকোদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে মাটি বাণিজ্য করার সুযোগ করে দিচ্ছেন। যে কারণে মাটি কাটা ও বিক্রি বন্ধ হচ্ছে না।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, মাটি কাটার খবর পেলেই সেখানে অভিযান চালানো হয়। সেটা দিন হোক আর রাত হোক। যেসব জায়গায় মাটি কাটা হচ্ছে খোঁজখবর নিয়ে সেখানে অভিযান চালানো হবে।