৫ মাঘ, ১৪৩১ - ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫ - 18 January, 2025

কাউয়িায় ফসলি জমি দখলে আছে: অতপর বে-দখলের আশঙ্কা

আমাদের প্রতিদিন
3 weeks ago
52


কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি:

রংপুরের কাউনিয়ায় রামচন্দ্রপুর গ্রামে ফসলি জমি দখলে আছে, অত:পর প্রতিপক্ষের ভুয়া দলিলে বে-দখল হওয়ার আশঙ্কা করছে মালিকপক্ষ। ভুয়া দলিলে নামজারি বাতিলের জন্য উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) বরাবরে লিখিত আবেদনও করেছে ক্রয়কৃত জমির মালিকের ছেলে গোলাম মাওলা।

কাউনিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) বরাবরে আবেদন সুত্রে জানা গেছে, রংপুর মহানগরের বাসিন্দা আব্দুল ছাত্তারের স্ত্রী লবুদা খাতুন কাউনিয়ার জে.এল.নং-২০, রামচন্দ্রপুর মৌজার এসএ খতিয়ান নং-১৯২ এর ১৯৬৬ সালের ২০ জুন ৩০২৪০ নং দলিলমুলে ৪ দশমিক ৫৭৫০ একর ও ১৯৬৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ৩৬০৬৬ নং দলিলমুলে ১ দশমিক ৪৪ একর এবং ১৯৭০ সালের ৫ জানুয়ারী ৫৫০ নং দলিলমুলে ১ দশমিক ৩৩৫০ একর তিন দলিলে মোট ৭ দশমিক ৩৭ একর জমি সাবকবলা মুলে নেছাবী বেওয়া, আছিরন বেওয়া, ছেরাবন বেওয়া ও ছফর আলীর কাছে ক্রয় করেন। জমির মালিক লবুদা খাতুন ক্রয়কৃত সম্পত্তির ভুমিকর প্রদানে ১৯৮২-৮৩ অর্থবছরে খারিজ নং-১৯২ খারিজ কেস নং-৯৩৫ হোল্ডিং নং-৪০৪ নিজ নামে নামজারি করেন। এরপর তিনি তার ক্রয় করা ভোগদখলকৃত সম্পত্তি হতে রামচন্দ্রপুর জামে মসজিদের নামে ১২ শতাংশ জমি দান করেন। পরবর্তিতে ক্রয়কৃত জমির মালিক লবুদা খাতুনের নামে ৭ দশমিক ২৫ একর জমি  ৪০৩ নং আর.এস খতিয়ান প্রস্তুত হয়েছে এবং ভুমি উন্নয়ন কম পরিশোধের হোল্ডিং নং-৪০৪। কিন্তু ুলবুদার সাবকবলা মুলে ক্রয় করা ভোগদখলীও একই দাগের জমি রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা মোজাহার আলী ১৯৯০ সালের ১১ অক্টোবর ৫৫৩৯ নং দলিলে ৮৮ শতাংশ ও একই তারিখের ৫৫৪০ নং দলিলে ৪৭ শতাংশ এবং ৫৫৪১ নং দলিলে ১৯ শতাংশ নিজের সম্পত্তি দাবী করেন। পরে মোজাহার আলী ৪০৩ নাম্বার আরএস খতিয়ান নিজ নামে তৈরী করে ১৯৯৭ সালের ৬ জুলাই ২৯৩০ নং দলিলে ১২৬, ১২৭  ও ১৩৯ আরএস দাগে ১ দশমিক ১০ একর জমি রাসুলপুর মোজাহারীয়া দাখিল মাদ্রাসার কাছে বিক্রি করেন। পরে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষে ভুমি উন্নয়ন কর প্রদানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৯৩০ নং দলিলমুলে ১ দশমিক ১০ একর জমি সহকারি কমিশনার (ভুমি) কার্যালয়ে নামজারি করে (যার খারিজ খতিয়ান নং-৭৭৫ ও হোল্ডিং নং-২৫১/১)। এছাড়া লবুদার নামে প্রস্তুত হওয়া আরএস রেকর্ড সংশোধনের জন্য মোজাহার আলী ২০১৩ সালে ল্যান্ড সার্ভে আদালতে আবেদন করেন (যার নং-৪৭/১৩ইং। উভয়পক্ষের ক্রয়করা জমির দলিল পর্যবেক্ষন করে মোজাহার আলীর দায়ের করা মামলাটি ২০১৫ সালে খারিজ করে দেয় আদালতের বিচারক। তবে বর্তমানে আদালতে ভাগবটয়ারা মামলা চলমান রয়েছে।

লবুদা খাতুনের ছেলে গোলাম মাওলা বলেন, তার মায়ের ক্রয়কৃত জমির উপর রাসুলপুর মোজাহারীয়া দাখিল মাদ্রাসা চারতলা ভবন নির্মাণ করেছে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের নামে হওয়া নামজারি বাতিলের জন্য গত ৩ নভেম্বর সহকারি কমিশনার (ভুমি) কার্যালয়ে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। গোলাম মাওলা বলেন, মায়ের নামে ১৯৬৬ ও ১৯৭০ সালে সাবকবলা মুলে ক্রয়কৃত জমি বর্তমানে ৬ দশমিক ৬৫ একর জমি আমাদের ভোগদখলে আছে। যাহা ওই এলাকার লোকজন বর্গা নিয়ে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করছে। তবে কতিপয় অসাধু লোকজন ভুয়া দলিলে আমাদের ভোগদখলকৃত জমি দখল করার পায়তারা করছে।

সোমবার সরজমিনে রামচন্দ্রপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, লবুদা খাতুনের ক্রয়কৃত সম্পত্তি ওই গ্রামের নছিমুদ্দিন, কছিমুদ্দিন ও আব্দুর রহমান নামে তিন ব্যক্তি বর্গা নিয়ে জমি চাষাবাদ করছেন। বর্গাচাষী নছিমুদ্দিন বলেন, তার দীর্ঘদিন লবুদা খাতুনের ক্রয়কৃত জমি আবাদ করে আসছেন। তবে সম্প্রতি কিছু অসাধু ব্যক্তি বর্গা নেওয়া জমি নিজেদের দাবী করছে।

এদিকে রাসুলপুর মোজাহারীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার জানান, প্রতিষ্টানের নামে ক্রয়কৃত জমি দখলে আছে, তবে জমির কিছু অংশ প্রতিষ্ঠানের বাউন্ডারী ওয়ালের বাহিরে রয়েছে। সম্প্রতি জমি মাপযোগ হয়েছে এবং কাঁটা তারের বেড়ায় ঘেরা রয়েছে।

আর নামজারী বাতিলের বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) লোকমান হোসেন বলেন, আবেদনকারী কাগজপত্র নিয়ে আমার অফিসে সরাসরি আসলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

 

 

 

 

 

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth