চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের ব্লকডাম্পিংয়ে ধস ভাঙন আতঙ্কে নদী পাড়ের মানুষ
চিলমারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের পিচিংয়ের নিচে ব্লকডাম্পিংয়ে ধস দেখা দিয়েছে। এতে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে নদী পাড়ের মানুষ। উপজেলার রমনা সোনারীপাড়া এলাকায় ডানতীর পিচিংয়ের নীচে ডাম্পিং করা ব্লকের তলদেশ থেকে মাটি সরে গিয়ে প্রায় ৪শ মিটার জায়গায় ডাম্পিংব্লক দেবে যাওয়া দেখা যায়। ২সপ্তাহের বেশী সময় ধরে আস্তে আস্তে ব্লক দেবে যাওয়াকে ঘিরে ওই এলাকার মানুষের মাঝে চরম আতঙ্ক দেখা দিলেও কর্তৃপক্ষের সারা নেই বলে তাদের অভিযোগ।বিআইডব্লিউটিএ’র অপরিকল্পিত নদী খননকে দায়ী করছেন তারা।
জানাগেছে,ব্রহ্মপুত্র নদের কড়াল গ্রাস থেকে চিলমারীকে রক্ষার জন্য ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে নদের ডানতীর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ রাস্তাটি ব্লোক পিচিং করা হয়।প্রকল্পের আওতায় উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ফকিরেরহাট এলাকা থেকে রমনা ইউনিয়নের জোড়গাছহাট বাজার পর্যন্ত এলাকার কাজ সম্পন্ন করা হয় কয়েক ধাপে। পরবর্তীতে কয়েক দফা পিচিংয়ে ধস দেখা দিলে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধানে তা মেরামত করা হয়। সম্প্রতি রমনাঘাট (চিলমারী বন্দর) থেকে দক্ষিণে সোনারী পাড়া এলাকার দৌলা মিয়ার বাড়ী হতে টোনগ্রাম জামে মসজিদ পর্যন্ত প্রায় ৪শ মিটার এলাকায় ডানতীর ব্লক পিচিংয়ের নিচে ডাম্পির করা ব্লকে ধস দেখা দিয়েছে। এতে প্রায় ২সপ্তাহ থেকে আস্তে আস্তে ব্লক দেবে যাচ্ছে।২ সপ্তাহের বেশী সময় ধরে ডাম্পিং ব্লক ধসে(দেবে) যাওয়াকে ঘিরে চরমভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বার বার নদী ভাঙ্গনের শিকার হওয়া নদী তীরবর্তি ওই এলাকার মানুষ।
সরেজমিনে শনিবার দুপুরে রমনা ঘাট সোনারীপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সোনারীপাড়া দৌলা মিয়ার বাড়ীর নিকট হতে টোনগ্রাম জামে মসজিদ পর্যন্ত প্রায় ৪শ মিটার এলাকায় পিচিংয়ের নিচে ডাম্পিংয়ের ব্লক অনেক জায়গায় দেবে গেছে যা ২সপ্তাহের বেশী সময় ধরে অব্যাহত রয়েছে।এসময় শাহিনুর বেগম, মঞ্জু মিয়া,আলমগীর হোসেন,মফিজল হক,সাইফুল ইসলামসহ অনেকে জানান,কিছুদিন পূর্বে ফেরি চলাচলের চ্যানেলে বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে নদী খনন করে পূর্ব পাশ্বে বালু দেয়ায় সামনে চর পড়েছে।এতে নদীর রাতে এসে সরাসরি ডানতীরে আঘাত হানে। ফলে পিচিংয়ের নিচে ব্লক ডাম্পিংয়ে ধস দেখা দিয়েছে।২ সপ্তাহের বেশী সময় ধরে ডম্পিং করা ব্লক আস্তে আস্তে দেবে যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন সারা পাওয়া যায়নি বলে জানান তারা। রমনা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন জানান,অপরিকল্পিত নদী খননের ফলে ডানতীরে স্লোত আঘাত হানে।এতে একদিনে কয়েক ফুট এলাকায় ব্লক দেবে যাওয়াসহ প্রতিনিয়ন কম বেশী ব্লক দেবে যাচ্ছে। এখনই এটি সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে চৈত্রি মাসের ঢলে ডানতীর ছুটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন তিনি।
বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো.কামরুজ্জামান জানান,পরবর্তী খননের সময় সবার সাথে পরামর্শ করে ফেরির রাস্তা খনন করা হবে।
এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রামের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল কাদের এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, রমনা ঘাট এলাকায় ডাম্পিং ব্লক দেবে যাওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক বলেন,ডাম্পিং ব্লক দেবে যাওয়ার এলাকা পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে।