পীরগাছায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের পীরগাছায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে এক হার্ডওয়ার ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সাথে থানার সোর্স নামে পরিচিত এক ব্যক্তিসহ স্থানীয় রাজনীতির সাথে জড়িত ৩ ব্যক্তি জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৬ ডিসেম্বর বিকেলে পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের জ্ঞানগঞ্জ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে পীরগাছা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
থানায় দেয়া অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের জ্ঞানগঞ্জ বাজারের হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী জহুরুল হক প্রতিদিেিনর মত নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে ছিলেন। গত ২৬ ডিসেম্বর বিকেল ৪ টার দিকে অজ্ঞাত দুই ব্যক্তি নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে দোকান থেকে ডেকে নেয় এবং নিজেরাই দোকানে ঢুকে ব্যবসায়ীক ৩টি মোবাইল ফোন নিয়ে থানায় যাওয়ার কথা বলে ব্যবসায়ী জহুরুল হককে মোটরসাইকেলে তুলে নেন। পরে তারা ঘটনাস্থল থেকে দেড় কিলোমিটার দুরে স্থানীয় রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পিছনে নদীর ধারে বড় একটি কলা বাগানে জহুরুল হককে নিয়ে যান। এসময় তাকে কারো সাথে যোগাযোগ করতে দেয়া হয়নি। এর ৫ মিনিট পরেই পুলিশের সোর্স নামে পরিচিত আদম ব্যাপারী পাড়া গ্রামের রাজু মিয়াসহ ৪ ব্যক্তি ওই বাগানে গিয়ে হাজির হন। এসময় ডিবি পরিচয়ধারী দুই ব্যক্তি জহুরুল হকের নিকট ২ লক্ষ টাকা দাবি করলেও রাজু মিয়াসহ অন্যরা ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে ব্যবসায়ী জহুরুল হককে মেরে নদীতে ভেসে দেওয়ার হুমকি দেন। পরে অপহরণকারীরা জোরপূর্ব জহুরুল হকের মোবাইল থেকে ৬৪ হাজার এবং তার দোকান থেকে ক্যাশ ৫৩ হাজার টাকা নিয়ে এসে হাতিয়ে নিয়ে সটকে পড়েন।
গতকাল সোমবার ভূক্তভোগী জহুরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমার নামে কয়েকটি অভিযোগ আছে বলে, আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা আমাকে কারো সাথে যোগাযোগ করতে দেয়নি। অথচ ৫ মিনিটের মধ্যে রাজু মিয়াসহ অন্যরা ঘটনাস্থলে আসে। তারাই আমাকে দ্রুত টাকা দিতে চাঁপ প্রয়োগ করেন এবং মোট এক লাখ ১৭ হাজার টাকা নিয়ে সটকে পড়েন। আমার দোকানে সিসি ফুটেজ আছে। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি।
স্থানীয় জ্ঞানগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী মজিবর রহমান, সবুজ মিয়া বলেন, জহুরুলকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় অনেকে দেখেছি। কিন্তু বুঝিনি কি কারণে তুলে নেওয়া হচ্ছে।
অপর ব্যবসায়ী মিজান মিয়া, রাশেদ মিয়া বলেন, সে কারো সাথে যোগাযোগ করেনি। অথচ রাজু মিয়াসহ অন্যরা ৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে হাজির হয়েছে। এছাড়াও জহুরুল হককে তুলে নেওয়ার সময় রাজু মিয়া জ্ঞানগঞ্জ বাজারেই ছিল।
এ বিষয়ে রাজু মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
জানতে চাইলে পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, রাজু মিয়া নামে আমাদের কোন সোর্স নেই। এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রংপুর জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু মোহাম্মদ সিদ্দিকুজ্জামান বলেন, ওইদিন পীরগাছায় আমরা কোন অভিযান চালাইনি। আমাদের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা এ কাজ করেছে, তাদের বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।