পীরগঞ্জে জুয়া মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের পীরগঞ্জে কাঁচামাল ব্যবসায়ীদের আড়তে অভিযান চালিয়ে নগদ ৯৯ হাজার ৭’শ টাকা, ৬টি মোবাইল কেড়ে নিয়ে মারপিট ও থানায় নিয়ে জুয়া মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীরা জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি সহ মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধনের পর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। আজ (৩১ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের কলাবাগান (শুকানচৌকি) বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগি ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম, আবু তাহের, নালো মিয়া, স্থানীয় বাসিন্দা একরামুল হক, দেলোয়ারা বেগম।
ভুক্তভোগী জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার সময় পীরগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই মশিউর ও এএসআই জুয়েল রানা সহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ব্যবসায়ী রাশেদুল ও সাজু মিয়ার আড়তে প্রবেশ করে। সে সময়ে পিঁয়াজ ও কচুর বীজ লোড আনলোডেসহ ৭জন ব্যবসায়ী অবস্থান করছিল। পুলিশ সেখানে প্রবেশ করেই তল্লাশি চালায় এবং তাদের কাছে যা কিছু আছে দিয়ে দিতে বলে। এ সময় জোরপুর্বক আড়তদার রাশেদুল ইসলামের ১০৫০০, বাক্সে থাকা ৮৫০০, সাজু মিয়ার ১২৩০০, ব্যবসায়ী আবু তাহেরের ১৫৪০০, মিলন মিয়ার ১৩৭০০, বিলু মিয়ার ১৭৩০০, রবিউল ইসলামের ৭০০০, নালো মিয়ার ১৫০০০ টাকাসহ ব্যবহৃত মোবাইলগুলো কেড়ে নিয়ে মারপিট করে। এক সময়ে নালো মিয়া কৌশলে পালিয়ে যায় এবং অসুস্থ হলে হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহন করে। পরে ৬জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয় এবং (তাস) জুয়া খেলার অপরাধে তাদের কে আদালতে পাঠানো হয়। মামলায় জব্দ তালিকায় ৯৮৭০ টাকা উল্লেখ থাকলেও কেড়ে নেয়া অবশিষ্ট ৮৯৮৩০ টাকা ও মোবাইল ফেরত দেয়া হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, ইদানিং পুলিশ বিভিন্ন ভাবে মানুষকে হয়রানি করছে। এলাকায় মাদকে ছড়াছড়ি, অথচ মাদক কারবারিদের গ্রেফতার না করে সেবন কারীদের মাঝে মধ্য গ্রেফতার করে থানায় নেয়ার পথে টাকার বিনিময়ে মাঝপথে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। রাশেদুল সহ ভুক্তভোগিরা এলাকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, তাদের জুয়া মামলায় ফাঁসিয়ে টাকা কেড়ে নিয়েছে পুলিশ। দ্ররুত মামলা প্রত্যাহার সহ কেড়ে নেয়া টাকা ফেরত সহ অন্যায়কারী পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবী জানান।
এসআই মশিউর জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগে জুয়া খেলার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই ঘরে অভিযান চালানো হয়। এখন তারা পুলিশের বিরুদ্ধে বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করছে।
এএসআই জুয়েল রানা জানান, তাস দিয়ে তারা জুয়া খেলা অবস্থায় হাতেনাতে গ্রেফতার হয়। ভিডিও ফুটেস সংরক্ষিত আছে। টাকার পরিমান যা ছিল তা জব্দ তালিকায় দেখানো হয়েছে। বাড়তি টাকার বিষয়টি সত্য নয়।
ওসি এমএ ফারুক জানান, জুয়া খেলার অপরাধে এসআই মশিউর ও এএসআই জুয়েল রানা এদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। জুয়া আইনে নিয়মিত মামলার পর তাদের আদালতে পাঠানো হয়। পুলিশ সদস্যরা কোন অপরাধ করলে দায়ভার নিবো না, বরং শাস্তির ব্যবস্থা করবো।