মিঠাপুকুরে রানা প্লাজায় আহত নারী শ্রমিকের ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ
মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের মিঠাপুকুরে ভাংনী ইউনিয়নের ঠাকুরবাড়ি এলাকার রসুল মিয়ার স্ত্রী শামীমা আক্তার আদরি (২৬) রানা প্লাজা ধসে আহত হন । আহত নারী শ্রমিক শামীমা আক্তার আদরি বিভিন্ন সংস্থা থেকে প্রায় ৩ লাখ টাকা অনুদান পায় । পরবর্তীতে সেই অনুদানের ৩ লাখ টাকা দিয়ে স্থানীয় লাইজু মিয়ার থেকে ৬০ শতাংশ জমি স্টাম্পের মাধ্যমে বন্ধক নেয়। এবং লাইজু মিয়া নিজেই সেই জমি বর্গা হিসাবে চাষাবাদ করে। কিন্তু কিছুদিন পর লাইজু মিয়া ফসলের ভাগ দিতে অস্বীকৃতি জানান । এমনকি বন্ধকি জমিতে উঠতে দেবেনা এবং বন্ধকের ৩ লক্ষ্য টাকাও ফেরত দেবেনা বলে জানিয়ে দেয় ।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী আহত নারী শ্রমিক শামীমা আক্তার আদরির মা নুরুন নাহার বাদি হয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ।
অভিযোগ সুত্রে ও ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, আহত নারী শ্রমিক শামীমা আক্তার আদরি তার মায়ের নামে স্টাম্পে লিখিত করে মোঃ লাইজু মিয়ার থেকে ৭ আগস্ট ২০১৮ সালে ২ লক্ষ্য টাকা এবং ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সালে পূণরায় ১ লক্ষ্য টাকা মোট ৩ লক্ষ্য টাকা দিয়ে কসবা নূরপুর মৌজার, জে.এল. নং- ২০৪, খতিয়ান নং- ৭৩, দাগ নং- ৫২০, এর ৬০ শতাংশ জমি বন্ধক নেয় । এবং জমিটি লাইজু মিয়া নিজেই বর্গা চাষ করে । কিন্তু কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর লাইজু মিয়া ফসলের ভাগ দিতে টালবাহানা করে ।পরবর্তীতে বন্ধকি জমি ফেরৎ চাইলে লাইজু মিয়া বন্ধকি জমি দিবেনা মর্মে জানায় এবং বলে সে এই টাকা আত্মসাৎ করবে। নিরুপায় হয়ে শামীমা আক্তার আদরি বহুবার লাইজু মিয়ার সাথে গ্রাম্যভাবে এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করলেও লাইজু মিয়া তা অমান্য করে। এমনকি শামীমা আক্তার আদরি কিংবা তার পরিবারের লোকজন টাকা ও ফসলের ভাগ এবং বন্ধকি জমির জন্য গেলে মারপিট করিবে, চোটাইয়া রক্তাক্ত জখম করিবে, কৌশলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাইয়া টাকা নেয়ার সাধ মিটাইয়া দিবে মর্মে বিভিন্ন রকম হুমকি দেয় অভিযুক্ত লাইজু মিয়া ।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন ওয়াহেদী বলেন, আমরা এই বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার মীমাংসার জন্য আলোচনায় বসেছি। অভিযুক্ত লাইজু মিয়া ঘটনায় সত্যতা স্বীকার করে এবং টাকা ফেরত দেয়ার জন্য সময় নেয় । কিন্তু পরে আর টাকা দেয়না ।
ভুক্তভোগী শামীমা আক্তার আদরি বলেন, মিঠাপুকুর থানা থেকে এসআই মজিদ ঘটনাস্থলে এসছিলো। অভিযোগের সত্যতা পেয়েও তিনি কোন প্রকার আইনি সহায়তা আমাকে করতেছেন না। এই টাকাটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ। আমার সাংসারিক জীবনটাও এই টাকাটার জন্য নষ্ট হতে চলেছে। আমি এর ন্যায্য বিচার চাই।
মিঠাপুকুর থানার এসআই মজিদ বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টির সত্যতা পেয়েছি। কিন্তু অভিযুক্ত লাইজু মিয়াকে থানায় ডাকার পরেও তিনি থানায় আসেননি। অবশেষে আজকে ওসি স্যারের নির্দেশে তাকে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত লাইজু মিয়ার সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ।
মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা ছিলোনা, তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আমি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার জন্য বলে দিতেছি।