পলাশবাড়ীতে ইউএনওর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
বায়েজীদ, পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) :
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনে তদন্ত চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে।
দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার পলাশবাড়ী উপজেলা প্রতিনিধি ফেরদাউছ মিয়া এ অভিযোগ করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, পলাশবাড়ী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে শূন্য পদে ৬জন মহল্লাদার ও ২জন দফাদার (পদন্নোতি) নিয়োগেরর লক্ষ্যে গত ১৩ ডিসেম্বর-২০২৪ ইং পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
নিয়োগ পরীক্ষা শেষে ওই দিন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নোটিশ বোর্ডে ফলাফল টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়। যেখানে ব্যাপক অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও দূর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়।
এরমধ্যে উপজেলার ৫ নং মহদীপুর ইউনিয়নে মহল্লাদারের ১টি শূণ্য পদে আবেদন জমা ৩টি। পরীক্ষায় উপস্থিত হয় আনারুল ইসলাম নামে ১ জন। তার উচ্চতা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি না হওয়ায় বাছাই পর্বেই সে বাদ পড়ে যায়। অন্য প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা চলাকালীন সময় অজ্ঞাত কারনে ২০ মিনিট পর তাকে অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় দিয়ে তার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়। তার কোন প্রতিদ্বন্দি না থাকলেও তাকেই নিয়োগ দেয়া হয়।
এদিকে, ৯ নং হরিনাথপুর ইউনিয়নে মহল্লাদারের ০১টি শূণ্য পদে আবেদন জমা হয় ২টি। পরীক্ষায় উপস্থিত হয় ২ জন। তাপস চন্দ্র নামে একজনের উচ্চতা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি না হওয়ায় বাছাই পর্বেই সেও বাদ পড়ে যায়। অন্য প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা চলাকালীন স্বজনপ্রীতি করে ২০ মিনিট পর তাকেও অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় দিয়ে তার পরীক্ষা নেয়া হয় এবং তাকেই বিধি বহির্ভূত ভাবে নিয়োগ দেয়া হয়। অনিয়ম ও স্বজন প্রীতির কারণে বঞ্চিত হয় যোগ্য প্রার্থী সংখ্যালঘু রবিদাস সম্প্রদায়ের কুমার নারায়ন।
অন্যদিকে, ৫ নং মহদীপুর ইউনিয়নে দফাদার ১টি (পদোন্নতি) পদে আবেদন জমা পড়ে ৫ টি। মোঃ জহুরুল ইসলাম নামে উপস্থিত ১ জন। তিনি আদালতে বিচারাধীন একটি হত্যা মামলার চার্জসিট ভুক্ত আসামী (যার নং-৫/৩০৮ তাং ৪ডিসেম্বর ২০২১) অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে মামলা গোপন করে একক প্রার্থী হত্যা মামলার আসামী জহুরুলকেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর কর ১% সহ বিভিন্ন প্রকল্পের ভুয়া ভাউচার বিল দাখিল, উপজেলা হাটবাজার উন্নয়ন সহায়তা তহবিল ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে অর্থ আত্মসাৎ, উপজেলা রাজস্ব খাতের উন্নয়ন প্রকল্পের নামে অর্থ আত্মসাৎ, অফিসের স্টেশনারী, গাড়ীর তেল, আসবাবপত্র ক্রয়, বিভিন্ন দিবস উদযাপনের নিমিত্তে বরাদ্দকৃত টাকার ভুয়া বিল ভাউচার দাখিল করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে আবেদনে।
পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান বলেন, আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে আমরা প্রশাসনিক নিয়ম-কানুন যথাযথভাবে মেনে চলেছি। কেউ অসন্তুষ্ট হয়ে মিথ্যা অভিযোগ করে থাকলে সেটা তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হবে। আমি সবসময় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পক্ষে কাজ করেছি এবং কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই আর যে অভিযোগের কথা বলছেন এটা এখনো আমি অবগত হইনি।