৫ মাঘ, ১৪৩১ - ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫ - 18 January, 2025

ঘুষ গ্রহনের পর সেই টাকা ফেরত দিলেন ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা

আমাদের প্রতিদিন
1 week ago
38


মো: হাবিবুল হাসান হাবিব, ডিমলা (নীলফামারী):

ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা তহিদুল ইসলাম। নীলফামারীর ডিমলায় ঘুষ নেওয়ার সময় সহকারী ভূমি কর্তাকর্তাকে আটক করেছে স্থানীয় ছাত্র জনতা । খবর পেয়ে ভুক্তভোগী ও সাধারন জনগন বালাপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস ঘেরাও করেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে । জানা যায় ঐ ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ, দূর্নীতি ও অসদাচারনের নানা অভিযোগ রয়েছে । স্থানীয় ছাত্র জনতা গত সোমবার বিকেলে ঘুষসহ তাকে আটক করেন। পরে ঐ কর্মকর্তা ঘুষ নেওয়ার অপরাধে নিজের ভুল স্বীকার ও ঘুষের টাকা ফেরত দেয় । এসময় ছাত্র জনতার হাতে ঘুষের টাকা ফেতের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়।

বালাপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস ঘেরাও এর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাসেল মিয়া। এসময় ছাত্র জনতা সহ সাধারন জনগন সহকারী ভমি কর্তাকর্তার অপসারন সহ ঘুষ, দূর্নীতি বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। পরবর্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাসেল মিয়া ঐ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন।

ভিডিওতে দেখা যায়, ভূমি সহকারী কর্মকর্তা তহিদুল ইসলাম সেবা গ্রহীতাদের হাতে ঘুষের টাকা ফেরত দিচ্ছেন। যেখানে নামজারি করতে সরকার নির্ধারিত ফি এক হাজার একশত সত্তর টাকা লাগে সেখানে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা তহিদুল ইসলাম ও তার ব্যক্তিগত সহকারী (কম্পিউটার অপারেটর) বিভিন্ন কৌশল খাটিয়ে নামজারী, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে আসা ভূমি মালিকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। সেবা গ্রহীতারা নিরুপায় হয়ে তাদের কাছে এক প্রকার জিম্মি। 

খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের আতাউর রহমান লেলিন বলেন, আমি জমি খারিজ করার জন্য ভূমি সহকারী কর্মকর্তা তহিদুল ইসলামের নিকট  গেলে তিনি আমার নিকট নামজারীর জন্য বিশ হাজার টাকা দাবী করেন। পরে দশ হাজার টাকায় দরদাম ঠিক হয়। আমি তাকে চার হাজার টাকা অগ্রিম দেই। পরে জানতে পারি জমি খারিজ করতে সরকার নির্ধারিত ফি এক হাজার একশত সত্তর টাকা লাগে। আমি যখন জানতে পারি তখন সে আমাকে ঘুষের টাকা ফেরত দেয়।

ভূক্তভোগী দক্ষিন বালাপাড়া গ্রামের আনজারুল ইসলাম বলেন, আমার দুই একর জমির খাজনা বাবদ আট হাজার টাকার রশিদ দিয়ে চৌদ্দ হাজার টাকা নিয়েছে এই তহশিলদার।

বালাপাড়া ইউনিয়নের মধ্যম সুন্দর খাতা গ্রামের আব্দুল জলিল এর ছেলে আশরাফুল ইসলাম বলেন, খারিজের জন্য তার কাছে গেলে তিনি ও তার ব্যক্তিগত সহকারী মিলে আমার কাছে পনের হাজার টাকা দাবি করেন। আমি তার ব্যক্তিগত সহকারীকে সাত হাজার টাকা দিয়েছি। তহশিলদার আমাকে মাত্র একটি আবেদনের ফরম দিয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে আমি বালাপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস আসি এবং সহকারী কর্মকর্তা তহিদুল ইসলামের নিকট ঘুষের টাকা ফেরত চাহিলে তিনি তা অস্বীকার করেন। 

এছাড়াও বালাপাড়া ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন ভূক্তভোগী বলেন, নামজারী করতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে মোটা অংকের টাকা লাগবে বলে জানায় তহশীলদার তহিদুল ইসলাম। টাকা ছাড়া এখানে কোন সেবাই পাওয়া যায় না।

এ বিষয়ে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা তহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল সামান্য একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তা ঠিক হয়ে  গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া বলেন, ইতিমধ্যে তহিদুল ইসলামকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। এছাড়া তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth