তারাগঞ্জে লাইসেন্স ছাড়াই চলছে ২২টি করাতকল
কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ
তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের তারাগঞ্জে সরকারি নিয়মকে তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ২২টি করাতকল। পরিবেশ ও বন বিভাগের ছাড়পত্র ও লাইসেন্স ছাড়াই যেখানে সেখানে গড়ে উঠেছে করাত কলগুলো। উপজেলা বন বিভাগের তথ্য মতে ২০২৫ পর্যন্ত ২৫টি করাতকল রয়েছে। এর মধ্যে ৩টির লাইসেন্স থাকলেও ২২টি চলছে অবৈধভাবে। দীর্ঘদিন ধরে এসব অবৈধ করাতকল পরিচালিত হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
বন বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, বন আইন অনুযায়ী কোন করাতকল মালিক লাইসেন্স না নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন না। লাইসেন্স নেয়ার পর প্রতিবছর নবায়ন করতে হবে। করাতকল স্থাপনের জন্য বন বিভাগের লাইসেন্স পাওয়ার পর পরিবশে অধিদপ্তরের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিতে হবে। এসব কাগজপত্র ছাড়া করাতকল স্থাপন করা যাবে না। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় নজরধারীর অভাবে করাতকল স্থাপন করে কাঠের ব্যবসা করছেন। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ২৫টি করাতকল থাকলেও লাইসেন্স আছে মাত্র তিনটি করাতকলের। বাকী ২২টি করাতকল অবৈধভাবে চলছে লাইসেন্সবিহীন। সরকারি অনুমোদন ছাড়া অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে এ সব করাতকল। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মোট ২৫টি করাতকল রয়েছে। তার মধ্যে মাত্র তিনটির লাইসেন্স থাকলেও বাকী ২২টি চলছে লাইসেন্সবিহীন অবৈধভাবে। তার মধ্যে আলমপুর ইউনিয়নে ২টি, কুর্শা ইউনিয়নে ৯টি, ইকরচালি ইউনিয়নে ৬টি, হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নে ৩টি ও সয়ার ইউনিয়নে ৫টি। জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের গুরুপ্তপূর্ণস্থানের ২০০ মিটার এর মধ্যে করাতকল স্থাপন ও রাতে চালানো নিষিদ্ধ হলেও অনেক অনেক করাতকলের মালিক তা মানছে না। উপজেলা সদরের কুর্শা পুরাতন চৌপথী নামকস্থানে দুইশত গজের মধ্যে একের অধিক গড়ে উঠেছে করাতকল। একইভাবে ইকরচালি বাস্ট্যান্ড সংলগ্ন জনবহুল, ও একটি পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিকের পাশে গড়ে উঠেছে একাধিক করাতকল। তাদের নেই কোন লাইসেন্স। প্রকাশ যে, করাতকল বিধিমালা ২০১২ এ বলা হয়েছে কোন সরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিনোদন পার্ক, উদ্যান এবং জনস্বাস্থ্য বা পরিবশের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করে এমন স্থান থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপন করা যাবে না। সরকারি বনভূমির সিমানা থেকে কমপক্ষে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে নিষিদ্ধ ও আন্তর্জাতিক সীমানা থেকে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে ঘোষনা করা হয়েছে। অথচ এই নির্দেশনা গুলোর অধিকাংশই মানছে না এখানকার গড়ে উঠা অবৈধ করাতকল গুলো। অবৈধ করাতকল মালিকেরা সরকারি অফিস আদালত, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাটবাজার, অফিস, বাসা-বাড়ি, সংলগ্ন করাতকল স্থাপন করে রাতদিন চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে পরিবেশ দূষণের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে এসব করাতকল গুলো। উপজেলা বন কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান খাঁন জানান, উপজেলায় ২৫টি করাতকলের মধ্যে শুধু মাত্র ৩টির লাইসেন্স আছে। বাকী ২২টি করাতকল লাইসেন্স ছাড়ায় চলছে। অবৈধ করাতকল গুলোর মালিকদের একাধিকবার নোটিশ এর মাধ্যমে লাইসেন্স করার অনুরোধ করা হলেও তারা কর্নপাত করছেন না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবেল রানা বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করাতকলের মালিকরা লাইসেন্স নিতে ব্যর্থ হলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।