৫ মাঘ, ১৪৩১ - ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫ - 18 January, 2025

চিলমারী খাদ্য গুদাম অভিযান শুরুর দুই মাসে এক ছটাক ধানও সংগ্রহ হয়নি

আমাদের প্রতিদিন
1 week ago
21


চিলমারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রামের চিলমারী এক ছটাক ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি উপজেলা খাদ্যগুদাম।দুই মাসে লক্ষমাত্রার আংশিক চাল সংগৃহিত হলেও কোন ধান সংগ্রহ হয়নি।সরকারীভাবে দেয়া মূল্যের তুলনায় বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় কৃষক ও রাইস মিল মালিকদের গুদামে ধান-চাল দেয়ার আগ্রহ না থাকায় সংগ্রহ অভিযান সফল হচ্ছে না বলে খাদ্য বিভাগের দাবী। অভিযান শুরুর ২মাস পর ৫৫% চাল ক্রয় হলেও ধান ক্রয় হয়নি এক ছটাকও।

জানাগেছে,চলতি আমন মৌসুমে চিলমারী উপজেলা খাদ্যগুদামে ৫৩৫মে.টন ধান ও ৫৪৬মে.টন চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছিল। যা প্রতি কেজি ধান ৩৩টাকা ও চাল ৪৭টাকা দরে ক্রয় করার জন্য ৭নভেম্বর ২০২৪ থেকে ২৮ফেব্রুয়ারী ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত সময় বেধে দেয়া হয়। সরকারীভাবে বেধে দেয়া সময়ের ২মাস সময় পেরিয়ে গেলেও চুক্তিবদ্ধ ৪৩জন মিলারের ৫৪৬মে.টন চালের মধ্যে কিছু সংখ্যক মিলারের কাছ থেকে মাত্র ৩০৩মে.টন চাল ক্রয় করতে পারলেও এক ছটাক ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি স্থানীয় খাদ্যগুদাম।ধান ক্রয়ের জন্য অনলাইনে কৃষকদের করা আবেদন পড়ে থাকলেও সার্ভার সমস্যার দোহাইয়ে তা এখনও খোলাই হয়নি বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান,সরকারীভাবে দেয়া মুল্যের চেয়ে খোলা বাজারে ধান ও চালের মূল্য বেশি এবং সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে অনেক ঝামেলা হওয়ায় কৃষকরাও গুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহী না হওয়ায় সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,উপজেলার বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল ৫০-৫২টাকা।ধান ৩৪-৩৬টাকা বিক্রি হচ্ছে।এছাড়াও ভালো শুকনা ধান ছাড়া গুদামে ধান দেয়া যায় না।চালের বেলাতেও একই নিয়ম।এই অবস্থায় গুদামে ধান ও চাল সরবরাহ করলে কৃষক ও মিল মালিকদের বড় রকমের লোকসান গুনতে হবে।

মোর্শেদা চাল কলের স্বত্বাধিকারী মো.আমিনুল ইসলাম বলেন,৩টি চাল কল মিলে তিনি ৪৪মে.টন চাল প্রদানের বরাদ্দ পেয়েছেন। এই চাল প্রদান করলে তার ১লক্ষ ৩০হাজার টাকা লোকসান হবে। অটো মিলের চাল ক্রয় করে গোডাউনে দিতে প্রতিকেজি চালে ৩টাকার উপরে লোকসান হয়। তার দাবী,আমরা নিয়মিতভাবে সরকারী খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ করে সরকারী আদেশকে বাস্তবায়ন করে আসছি।চলতি মৌসুমে চালের বাজার মূল্য বেশী হওয়ায় চাল সরবরাহের লোকসান কমাতে সরকারের সু-দৃষ্টি কামনা করেন তিনি। মিল ব্যবসায়ী মো.আমির আলী জানান,তিনি ৫টি মিলের বিপরিদে ৭০ মে.টন চালের বরাদ্দ পেয়েছেন। প্রতিকেজি চালে ৩টাকা লোকসান করে তিনি অর্ধেক চাল দিয়েছেন।সম্পূর্ন চাল দিলে তাকে দেড় লক্ষ টাকার উপরে লোকসান গুনতে হবে।চালের মুল্য পুনঃবিবেচনার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ আলাউদ্দিন বসুনিয়া জানান,চালের বাজার দর বেশী হওয়ায় মিলাররা চাল দিতে আগ্রহী না থাকা সত্বেও কিছু সংখ্যক মিলারের নিকট হতে ৩০৩মে.টন চাল ক্রয় করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাল সংগ্রহ লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে বলে তিনি আশাবাদী।ধান ক্রয়ের বিষয়ে তিনি বলেন,সরকারীভাবে বেধে দেয়া মূল্যের চেয়ে ধানের বাজার দর বেশী হওয়ায় ধান ক্রয় করা সম্ভব হয়নি। অনলাইনে হয়তো কিছু কৃষক আবেদন করেছেন,কিন্তু সার্ভার সমস্যার কারনে তা দেখা যাচ্ছে না।

চাল ও ধান ক্রয় কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক জানান,আমরা সংগ্রহ অভিযান সফল করার চেষ্টায় আছি। ধান ক্রয়ে কৃষকদের করা আবেদন প্রসঙ্গে তিনি জানান,বিষয়টি নিয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সাথে কথা বলতে হবে। 

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth