ফ্রিল্যান্সিং করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন গোবিন্দগঞ্জের ৩০ তরণ-তরণ: বছরে আয় ৭০ থেকে ৮০ হাজার ডলার

ফারুক হোসেন, গোবিন্দগঞ্জ:
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে আয়ের পথ খু্্ঁজে পেয়েছেন ৩০ তরণ-তরণী। এক সময় বেকার থাকা এসব যুবক-যুবতী এখন আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। এখন বছরে তাদের আয় ৭০ থেকে ৮০ হাজার ডলার। সরকারি সহায়তা পেলে বৈদেশিক মুদ্রা আর্জনের এ পথ আরো এগিয়ে নিতে চায় তারা
স্থানীয়রা জানান গোবিন্দগঞ্জ পৌর এলাকার শাহপাড়া খলসির শাহ এম পলাশ ফ্রিল্যান্সিং শিখে ২০১০ সালে থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত একক ভাবে কাজ করতে থাকে। নিজেই উদ্যোক্তা হয়ে শাহ এম পলাশ এলাকার শিক্ষিত যুবক-যুবতী এবং কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করে বিনা খরচে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ শুরু করে। এরপর ২০২১ সালে নিজ এলাকায় ’এ্যাট দ্যা রেট ’ নামের একটি ফ্রিল্যান্সিং প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন এলাকার ৩০জন শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতী ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজে যুক্ত রয়েছেন । পলাশের গড়ে তোলা এ্যাট দ্যা রেট এর মাধ্যেমে ইউরোপ ও আমেরিকার বায়ারদের সাথে কাজ করছেন এই ফ্রিল্যান্সসাররা। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত তাদের বাৎসরিক আয় ৭০ থেকে ৮০ হাজার ডলার।
আউট সোসিং প্রতিষ্ঠান এ্যাট দ্যা রেট এর সিইও উদ্যোক্তা শাহ এম পলাশ বলেন পড়ালেখার ফাঁকে ফাঁকে আবার কেউ লেখা পড়া শেষে বেকারত্ব থেকে মুক্ত পেতে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ নিয়ে এ কাজে কাজ যুক্ত হয়েছেন। এক সময় বেকার থাকলেও ফ্রিল্যান্সিং মাধ্যমে এখন ভালো আয় করছেন এই ফ্রির্যান্সাররা। তিনি বলেন যে কেউ ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ নিয়ে ঘরে বসেই কাজ করতে পারেন। তবে ফ্রিল্যান্সিং দক্ষতা অর্জন ও বায়ার যোগাযোগ বড়ানো দিকে মনোযোগী হতে হবে। যে কেউ ঘরে বসেই মাসে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। এক প্রশ্নের জবারে তিনি বলেন, আমার ভবিষ্যাত পরিকল্পনা এই প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ভবন সম্প্রসারনের মাধ্যমে আরো যাতে বেশী সংখ্যক প্রশিক্ষাণার্থী ও ফ্রিল্যান্সারের কাজের নতুন নতুন পরিধি সৃষ্টি করা। এ জন্য তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
এ্যাট দ্যা রেট এর ফ্রিল্যান্সার প্রশিক্ষক রওশন জাদিদ সোহান বলেন নতুন ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষনার্থীদের ওয়েব সাইট ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, ভিডিও এডিটিং সহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে । এছাড়াও একটা ডিজিটাল প্রডাক্টস মার্কেটপ্লেস তৈরি করেছি। প্রশিক্ষণার্থীরা কাজ শিখে যাতে নিজেরাই স্বনির্ভর হতে পারে সেজন্য হাতে কলমে উপযুক্ত প্রক্ষিণ দেয়া হয়।
প্রশিক্ষণ নিয়ে ফ্রিল্যান্স কাজে যুক্ত হওয়া নাদিয়া আকতার নদি, সাদিয়া আকতার, শাহ লিমন বলেন প্রশিক্ষণ নিয়ে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করে বৈদেশিক মূদ্রা আয় করেছি এবং নিজের পড়াশুনা খরচ ছাড়াও নিজে চলাফেরা করার মত আয় করছি। পরিবারের কাছ থেকে কোন অর্থ নিতে হয় না। তবে জেনে বুঝে যাথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যে কেউ এটাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করলে ভাল করতে পারবে।
অভিভাবকরা মনে করেন সরকারি সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরো বেশি শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতী ফ্রিল্যান্সিং এ সম্পৃক্ত হয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আর্জন করতে পারবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা যুবউন্নয়ন কর্মকর্তা সত্য রঞ্জন বলেন গোবিন্দগঞ্জের এ্যাট দ্যা রেট এর উদ্যোক্তা পলাশ যে ভাবে যুবক যুবতী সংগঠিত করে কাজ করছে তা প্রসংসনীয়। এর মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানটি বৈদেশিক অর্র্জন করছে। চাইলে নিয়মের মধ্য থেকে যুবউন্নয়ন অধিদপ্তর তাদের সহায়তা প্রদান করবে।