ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে গঙ্গাচড়ার ৬১ প্রাথমিক বিদ্যালয়

নির্মল রায়,গঙ্গাচড়া (রংপুর):
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ৬১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। এসব বিদ্যালয় চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে।
প্রধান শিক্ষকের পাশাপাশি সহকারী শিক্ষক পদেরও ৭৬টি পদ শূন্য রয়েছে উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে। প্রধান শিক্ষক না থাকায় নানা জটিলতায় ভুগছে উপজেলায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকা বিদ্যালয়গুলো।
জানা গেছে, ৯টি ইউনিয়নে ৮১টি ওয়ার্ড নিয়ে তিস্তা নদী বেষ্টিত রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা। এছাড়া রংপুর সদর উপজেলার ১টি ইউনিয়নসহ মোট ১০টি ইউনিয়নে প্রাথমিক শিক্ষার আলো ছড়াতে রয়েছে ১৭৮ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, ১৭৮ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬১টি বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। এ ছাড়া শূন্য রয়েছে ৭৬টি সহকারী শিক্ষকের পদও। অবসর, বদলি ও মামলার কারণে প্রধান শিক্ষকের এসব পদ শূন্য রয়েছে।
এসব বিদ্যালয়ে কোনটিতে ১ বছর থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে।
ফলে সহকারী শিক্ষকেরা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।এতে ওইসব বিদ্যালয়ে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। এ ছাড়া দিন দিন বিদ্যালয়গুলোতে কমছে শিক্ষার গুণগত মানও।
প্রধান শিক্ষকবিহীন কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন সহকারী শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা বিদ্যালয়গুলোর পাঠদান থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কার্যক্রম শামলাচ্ছেন। তারা বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে যিনি দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি আমাদের মতোই একজন সহকারী শিক্ষক। তাই অনেক ক্ষেত্রেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা শিক্ষককে বিদ্যালয়ের অন্য সহকারী শিক্ষকদের সঠিকভাবে পরিচালনা করতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। অনেক সহকারী শিক্ষকই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনা মানতে অনীহা প্রকাশ করেন। যার ফলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে। তাই বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক পদায়ন খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।
প্রধান শিক্ষক নেই এমন একটি প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক মতি মিয়া, আশরাফুল ও লাবলু বলেন, যিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে রয়েছেন, তিনি মূলত এই বিদ্যালয়েরই একজন সহকারী শিক্ষক। বেশিরভাগ সময় তিনি দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত থাকেন। এ কারণে বিদ্যালয়ে নিয়মিত আসতে পারেন না। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে অন্যান্য সহকারী শিক্ষকও তার নির্দেশনা সঠিকভাবে মানছেন না। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় সমস্যা হচ্ছে। তাই দ্রুত এসব বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক পদায়ন করে শিক্ষার গুণগত মান ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানান তারা।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাগমা শিলভীয়া খান বলেন,অবসর ও বদলিজনিত কারণে যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে, সেই পদগুলোতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। সহকারী শিক্ষকের সংকটও দূর করার চেষ্টা চলমান রয়েছে।