সূর্যের দেখা নেই সারাদিন শীতে কাবু তারাগঞ্জের মানুষ

তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি:
‘মাঘের শীতে বাঘ কান্দে’ সত্যিই মাঘের হাওয়া, ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার মানুষের জনজীবন। বৃষ্টির মত পড়ছে কুয়াশা। ঘন কুয়াশার পাশাপশি হিমেল হাওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষ বিপদে পড়েছে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাহিরে বের হচ্ছেন না। গ্রামগুলোতে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ (২৩ জানুয়ারি) বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সূর্য়ের দেখা মেলেনি। ছিন্নমূল ও হতদরিদ্র মানুষজন খড়কুটো জ্বালীয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। জানাগেছে, মাঘ মাসের শুরু থেকে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে ঘন কুয়াশায় আর হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ কষ্টে দিন যাপন করছে। রাস্তায় লোকজনের চলাচল এশবারেই সীমিত। এমনকি ভর দুপুরও সড়ক মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন হেটলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে। নিতান্ত প্রয়োজন কিংবা জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা মানুষেরই কেবল দেখা মিলছে পথে-ঘাটে। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষজন। বিশেষ করে নদীর তীরবর্তী বসবাসরত পরিবার গুলোর মানুষজন পড়েছেন সবচেয়ে বেশি বিপাকে। হাড়কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মানুষজন নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমাজনিত রোগের আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে চিকিৎসকেরা চিকিৎসা হিতে হিমশিম খাচ্ছেন। উপজেলার ইকরচালি ইউনিয়নের মেনানগর গ্রামের দিনমজুর সুমন রায় বলেন, যে শীত পরিবার ধরছে তাতে ক্যাতা সেংসেংগা হয়া যায়। ঠান্ডাত ঘুমে ধরে না। চেয়ারম্যানক কয়ুনুং একটা কম্বল দিবার কয় যে কয়টা আছলো দেওয়া শ্যাষ হয়য়া গেইেছে। ভ্যানচালক ভন্ড কুমার, আবেদ আলী, রাজা মিয়া বলেন, ঠান্ডত মানুষ ঘর-বাড়ি থাকি বের হবার চায়ছোল না। প্যাটোত ভাত দিবার নাগিবে ওই তখনে বের হয়য়া আসিয়াও যাত্রী পাইছোল না। কুর্শা ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের নারী শ্রমিক আরজিনা বেগম, রুপালী রানী, সবিতা রায়, আলেয়া বেগম বলেন, যে মানত্রিনাগা ঠান্ডা গাও হামার পষান হয়ছোল। তোমরা তো জ্যাকে জুকেট গাদদিয়া বেরায়ছেন আর হামরা ঠান্ডা থাকি বাঁচিবার তকনে আগুন পোয়াইছোল। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সাবরিনা নুসরত জাহান মৌ বলেন, শীতজনিত রোগে বির্হবিভাগে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা দ্বিগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। চিকিৎসা প্রদান করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। পাশাপাশি শিশু ও বৃদ্ধ রোগীদের সর্তক থাকার পরামর্শ দেওয়া হেেয়ছে। উপজেলা প্রকল্প ও বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানান, শীতের প্রথম দিকে উপজেলার ৫ ইউনিয়নে পর্যায়ক্রমে বরাদ্ধকৃত ২৫৪০টি কম্বল ছিন্নমুল ও অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমানে জেলা পরিষদেরসহ ২৬০০ কম্বল রয়েছে সেগুলো বিতরণের প্রস্তুতি চলছে।