হিলিতে হয়ে গেলো গ্রামবাংলার ঐতিহ্য পিঠা উৎসব

মোঃ আব্দুল আজিজ, হিলি:
দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী পিঠা উৎসব। পিঠার নানান স্বাদ নিতে দুই দিনের এই পিঠা উৎসবে ছিলো সব বয়সী মানুষের উপচেপড়া ভীড়। শীত কিংবা গ্রীষ্ম মানেই বাঙ্গালির ঘরে ঘরে মুখরোচক পিঠাপুলির আয়োজন হয়ে থাকে। তবে কালের পরিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঙালিদের অনেক ঐতিহ্য। বাঙ্গালীর ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পিঠার সাথে পরিচয় করাতেই এমন আয়োজন করেছেন আয়োজকেরা।
বর্তমানে নানা ধরনের ফাস্ট ফুড খাবারের কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে অনেক পিঠাপুলি। বাঙ্গালীর ঐতিহ্য নানান পিঠাপুলির সাথে ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরতেই পঞ্চম বারের মতো দিনাজপুরের হিলির ডাঙ্গাপাড়া মডেল স্কুলে দুইদিন ব্যাপী পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া মডেল স্কুলের আয়োজনে স্কুল চত্বরে ফিতা কেটে দুই দিনব্যাপি পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পর থেকেই পিঠা উৎসবে ছিলো নানান বয়সী মানুষের উপচেপড়া ভীড়, স্টল গুলোতে তারা নিচ্ছেন পিঠাপুলির স্বাদ।
বিদ্যালয়ে মাঠে প্রতিটি স্টলে ধান সেমাই, ভাপা, পুলি দুধ, পুলি, পাটিসাপটা, ঝিনুক পুলি, জামাই সোহাগী, গোলাপ, কানমুচুরি, পুডিং, পায়রা, তেল পিঠা, দুধ চিতাই, মুঠা পিঠা, ক্ষীর, রসগোল্লা, কেক, গোলাপ ফুল, তেলেভাজা রসপিঠা, রোল পিঠা, লাভ পিঠা, শিম ফুল পিঠা, ডালবড়া, নারিকেল পিঠা, নকশি পিঠা, নয়নতারা পিঠাসহ প্রায় শতাধিক পিঠার পসরা। পিঠা উৎসব মাঠে ৯ টি স্টলে ১০০ প্রকারের পিঠাপুলির পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষরা। এমন আয়োজনে খুশি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষরা।
কথা হয় কয়েকজন পিঠা প্রেমীর সাথে, তারা বলেন, পিঠা উৎসব আয়োজকদের ধন্যবাদ জানায় এতো সুন্দর আয়োজন করার জন্য। পপ্রত বছর দুইদিন ব্যাপী এই মেলা হয়ে থাকে। তবে এক সপ্তাহ ধরে আয়োজনটি থাকলে ভাল হতো। এই বিভিন্ন আইটেম পিঠা পাওয়া যায়। পিঠা আমাদের খেতে খুবি ভাল লাগে। বাড়িতে হয়তো শীতকালে পিঠাপুলি তৈরি হয়, তবে মাত্র কয়েক রকম। কিন্ত এই মেলায় শতাধিক রকমের পিঠা উঠেছে। এক-এক পিঠার স্বাদ এক-এক রকমের।
পিঠা মেলার আয়োজক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমাদের সমাজ থেকে পিঠা হারিয়ে যাচ্ছে, পিঠা কি এবং কতো ধরনের পিঠা আছে তা তারা জানেইনা। এখানে ৯ টি স্টলে ১০০ আইটেমের পিঠা তৈরী করা হয়েছে। স্কুলের ছেলে-মেয়েরা এবং স্থানীয় অভিভাবকরা এই পিঠার সাথে পরিচিত হচ্ছে এবং এর স্বাদ গ্রহন করতে পারছেন। এতে গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া পিঠার ঐতিহ্য ও স্বাদ ফিরে আসবে।