চিলমারীতে কৃষকের সম্মানী বিতরণে অনিয়ম

চিলমারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে কৃষি দপ্তর কর্তৃক কৃষকদের জন্য বরাদ্দকৃত সম্মানির অর্থ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কৃষক মাঠ দিবসে দীর্ঘ সময় বসে থাকার পরেও সম্মানীর টাকা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সেখানকার কৃষকরা।
জান গেছে,২০২৪-২৫ অর্থ বছরে কৃষি দপ্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশের চর এলাকায় আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্প নামে একটি নতুন প্রকল্প কার্যক্রম শুরু করে। প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় মোট ৫৪টি প্রদর্শনী দেয়া হয়,যার ৩০টি চরাঞ্চলে ও ২৪টি সমতল এলাকায় প্রদর্শিত হয়। প্রকল্পের আওতায় ২টি কৃষক মাঠ দিবসের মধ্যে উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের জোড়গাছ বাসন্তিগ্রাম এলাকায় সোমবার একটি কৃষক মাঠ দিবসের আয়োজন করা হয়। মাঠ দিবসে অংশ গ্রহণকারীদের জন্য সম্মানীর বরাদ্দ ছিল জন প্রতি ৫০০টাকা। অনুষ্ঠান শেষে মাঠ দিবসে অংশ গ্রহণকারী কৃষকদের সেই সম্মানীর টাকা না দিয়ে অন্যান্যদের মাঝে বিতরণ করার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিরুদ্ধে।
ওই দিনের কৃষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠানের সভাপতি কৃষক আব্দুর রাজ্জাক জানান, কৃষি অফিসের আমন্ত্রনে ৬০জন কৃষক-কৃষাণিকে অনুষ্ঠানে নিয়ে আসি। মিটিংয়ে কৃষক-কৃষাণিদের জন্য নাস্তা ও জনপ্রতি ৫০০ টাকা সম্মানী ভাতার বরাদ্দ ছিল। সেখানে আমাকে সভাপতি করা হয়েছিল। অনুষ্ঠান সমাপ্ত করার পর তাদের বলেছিলাম একটু অপেক্ষা করে সম্মানির টাকা নিয়ে যাবেন এবং তারা অপেক্ষাও করছিল। এমন সময়ে বিএস ও কৃষি সম্প্রসারন অফিসার সাহেব কি যেন কথা বলে গাড়ী থেকে টাকা নিয়ে কৃষক দলের লোকদের ডেকে ৫০০টাকা করে বিতরণ করে। সেখানে আমার কৃষক-কৃষাণিরা টাকা পায়নি। পরে আমাদের ৪জনের স্বাক্ষর নিয়ে ৫শ টাকা হারে ২হাজার টাকা দেয়। বাকী ৫৬জন কৃষক-কৃষাণি একটি টাকাও পায়নি। যাদের আমি ডেকে নিয়ে গেছিলাম তারা পরবর্তীতে আমার বাসায় গিয়ে বলে যে,আমাদের ডেকে ৩ঘন্টা বসিয়ে রেখে ১টি কলা ও একটি সিংগারার জন্য আমাদের নিয়ে গেছিলেন? আমাদের সম্মানীর টাকা দাও। এ নিয়ে তারা আমার বাসায় এসে রাগারাগি করে। “মিটিং করলো কৃষক-কিষাণি,তারা সম্মানি পাইলো না,সম্মানি খায়া গেলো বাওয়াই পাখি।”
রমনা মডেল ইউনিয়নের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো.রফিকুল ইসলাম জানান,কৃষক মাঠ দিবসের উপস্থিত কৃষকদের সম্মানীর টাকা লিপটন ও হাসান গ্রুপের লোকজনকে দেয়া হয়েছে।
উপজেলা কৃষক দলের আহবায়ক লুৎফুল হায়দার লিপটন জানান,বিএসরা আমাদের দাওয়াত দিয়েছিল,আমরা গিয়েছি, বক্তব্য দিয়েছি,তারা নাস্তা খাওয়ানোর পর সম্মানী দিয়েছে, আমরা নিয়ে চলে এসেছি,এখানে কি ঝামেলা আমি তো ভাই বুঝি না। আমাদের এন্ট্রি গ্রুপ নাটক করতেছে। আমরা ৩০-৩৫জন গেছি, আমাদেরও সম্মানী দিয়েছে,কৃষকদেরকেও দিয়েছে।
অতিরিক্ত কৃষি অফিসার মো.নূর আলম বলেন,কৃষক মাঠ দিবসের জন্য মাঠে সম্মানী ধরা ছিল ৬০জনের। আমরা যখন গেলাম তখন উপস্থিত ছিল ৬০জনের অধিক। তখন আমি অফিসারদের হাতে সম্মানির টাকা দিয়ে চলে আসি।দলীয় চাপের কারনে যারা সম্মানী পাওয়ার কথা তারা হয়তো পায়নি। বিষয়টি নিয়ে নিউজ করতে নিষেধ করেন তিনি।