৮ চৈত্র, ১৪৩১ - ২৩ মার্চ, ২০২৫ - 23 March, 2025

তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবীতে তিস্তা পাড়ে ৪৮ ঘন্টা ব‌্যাপী জনতার সমাবেশ শুরু

আমাদের প্রতিদিন
1 month ago
106


আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট :

উত্তর অঞ্চলের ৫ জেলার কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণে দাবি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও পানির ন্যায্য হিস্যাসহ তিস্তা চুক্তি। তিস্তা পাড়ের মানুষ গুলোকে নিয়ে বিভিন্ন সময় রাজনীতি হলেও তাদের ভাগ‌্যের পরিবর্তন হয়নি। এই দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে বিভিন্ন সংগঠন। বিভিন্ন সরকারের সময় মৌখিক আশ্বাস মিললেও বাস্তবায়ন হয়নি এই দাবি। এর ফলে তিস্তা নদীর দুই পাড়ে মানুষের দুঃখ-দুর্দশা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে তিস্তা পাড়ের মানুষের দুঃখ লাঘবের দাবিতে বৃহৎ পরিসরে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন। 

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা দেড় টার দিকে লালমনিরহাট তিস্তা রেলসেতু সংলগ্ন এলাকায় কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সকাল থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টা লাগাতার কর্মসূচি পালন করছে তারা।

‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’-এই স্লোগানে তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর নেতৃত্বে তিস্তা নদীর রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে লখো মানুষ মাঠে নেমেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনসহ তিস্তা পাড়ের মানুষ। 

আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিস্তা নদী বেষ্টিত লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করছে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি।  এছাড়াও আদিতমারীর মহিষখোচা,কালীগঞ্জের কাকিনা, হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারেজ ও নীলফামারী ডিমলার তিস্তা ব্যারেজ, কুড়িগ্রামের রাজারহাটের সরিষাবাড়ি, উলিপুরের থেতরাই, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের হরিপুর ব্রিজসহ মোট ১১টি পয়েন্টে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। 

তিস্তা ব‌্যারাজ গিয়ে দেখা যায়, কর্মসূচিকে ঘিরে ২০টি বড় বড় প্যান্ডেল করা হয়েছে। এছাড়াও লালমনিরহাট রেলসেতু তিস্তা রেল শুধু এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, প্যান্ডেলসহ অন্যান্য নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু লোকসমাগমের অপেক্ষা। এর মাধ্যমে তিস্তাপাড়ের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে দাবি বাস্তবায়নে চাপপ্রয়োগসহ বিশ্ব পরিমণ্ডলে তিস্তার দুঃখ তুলে ধরা হচ্ছে। 

পদযাত্রার বিভিন্ন স্পটগুলোতে পৃথকভাবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।

জানা গেছে, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তা অভিমুখে পদযাত্রা এবং নদীর দুই তীরে ২৩০ কিলোমিটার জুড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ কমিটি। ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাও’ স্লোগানে তিস্তা নদীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সেমিনার, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস‌্য ব‌্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান বলেন, অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর ডাকে লাগাতার ৪৮ ঘণ্টা কর্মসূচির তিস্তা ব‌্যারেজে  প্রায় ১০ হাজার মানুষের রাত্রিযাপন করবে।  এ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার যদি তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না করে তবে লাগাতার কর্মসূচি চলবে।

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও  বিএনপি রংপুর বিভাগের  সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু বলেন, তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কোন রাজনৈতিক দলের নয়। এটি রংপুর বিভাগবাসীর আন্দোলন। এই আন্দোলন জনদাবিতে পরিণত হওয়ায় এতে তিস্তাপাড়ের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ রয়েছে। আশা করছি দু’দিন ব্যাপক লোকসমাগম ঘটবে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth