৮ চৈত্র, ১৪৩১ - ২৩ মার্চ, ২০২৫ - 23 March, 2025

"তদবির ছাড়া মিলছে না সেচ লাইসেন্স ভুক্তভোগীদের অভিযোগ"

আমাদের প্রতিদিন
3 weeks ago
64


পীরগঞ্জে সেচযন্ত্রের লাইসেন্স পেতে ভোগান্তি

পীরগঞ্জ (রংপুর)প্রতিনিধিঃ

রংপুরের পীরগঞ্জে অধিকাংশ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। আর এ উপজেলায় ধান, পাটসহ সকল ফসল উৎপাদনের উপযোগী এলাকা। আশির দশকের চাষিরা বাঁশের নলকূপ বা মাটির কুয়া থেকে কৃষি আবাদি জমির সেচ নিশ্চিত করতেন কিন্তু তখন বছরে দুই ফসলের চাষাবাদ করা হতো। কালের পরিবর্তনে বিদ্যুৎ চালিত প্রযুক্তির মাধ্যমে এ উপজেলায় ত্রি ফসলসহ সাথী ফসলের চাষাবাদ করা হচ্ছে। যে কারনে কৃষি পল্লীতে সকল ফসলের উৎপাদন বেড়েছে।

যে উপজেলায় কৃষির  উপর নির্ভর অথচ সেই উপজেলায় দুই বছর আগে আবেদন করেও মিলছে না  বিএডিসির বিদ্যুৎচালিত সেচ যন্ত্রের লাইসেন্স। লাইসেন্স এর নামে শত-শত কৃষকে হয়রানি করছে উপজেলা সেচ কমিটি। সেচ মৌসুমে আগে সভার কাজ না করে সেচ মৌসুম শুরু হলে সভার কাজ হাতে নেয় উপজেলা সেচ কমিটি। তাদের গড়িমসির কারনে শতশত কৃষকের আবেদন ঝুলে থাকে বছরের পর বছর। বারোমাস ঘুরেও মিলছেনা সেচ যন্ত্রের লাইসেন্স ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। কর্তৃপক্ষ বলছে, আবেদনের ত্রুটি এবং অফিসে জনবল কম থাকায় ধীরগতিতে লাইসেন্স পাচ্ছে কৃষক। এদিকে লাইসেন্স না পাওয়ায় সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎচালিত সেচযন্ত্রের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা।

জানা গেছে, নিয়ম অনুয়ায়ী বিএডিসি কর্তৃপক্ষ লাইসেন্সের আবেদনের ফাইল যাচাই-বাছাই করে ৯ সদস্যের সেচ কমিটির সভায় তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। উক্ত কমিটি লাইসেন্সের অনুমোদন দেয়। লাইসেন্স পাওয়ার পর কৃষকরা বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করেন।

মেষ্টা গ্রামের রিজু মিয়া, খয়ের বাড়ি গ্রামের সাজু মিয়া এবং ঘাষিপুর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানসহ অনেকেই বলেন, দুই  বছর আগে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছি। কবে পাব জানি না। সেচ লাইসেন্স পেতে উপজেলায় সেচ কমিটির পেছনে দুই বছর যাবত ঘুরছি এখন পর্যন্ত মাঠ পরিদর্শন করেননি উক্ত সেচ কমিটির সদস্য সচিব। একই আবেদন দুই বার করে নিয়েছে অফিস তারপরও মিলছে না লাইসেন্স। এখানে তদবির করা হলে লাইসেন্স মেলে তদবির করা না হলে বছরের পর বছর ধরে হয়রানি শিকার হতে হয় কৃষকদেকে।

তারা আরও বলেন, বস্তা বন্দি লাইসেন্স এর আবেদন ফাইল সেচ কমিটির অন্ধকার ড্রায়ারে আটক থাকে আলোর মুখ দেখেনা। বর্তমানে বিএডিসির অফিসের লোকজন কৃষকদের কে আজকাল বলে শুধু হয়রানি আর সময় পার করছে। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না উপজেলায় ঘুরে । লোক বুঝে লাইসেন্স দিচ্ছে সেচ কমিটির সদস্য সচিব।

উপজেলার সচেতন মহলের লোকজন বলছেন, বিএডিসি অফিসের প্রকৌশলী বা সদস্য সচিব ঢিলেঢালা ভাবে পার করছে ফাইল। খেটে খাওয়া কৃষক তাদের পিছনে ঘুরতে ঘুরতে জুতাসহ পায়ের তলা ক্ষয় করেও মিলছে না লাইসেন্স। এদিকে সেচ লাইসেন্স ছাড়া  বিদ্যুৎ বিভাগের সেচ যন্ত্রের সংযোগ মিলছে না।

উপজেলা বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী (নির্মান) ইউনিট অফিস সূত্রে জানাযায়, ১ টি পৌরসভা এবং ১৫ টি ইউনিয়ন বিএডিসির ১০৯ গভীর নলকূপসহ প্রায় সাড়ে তিন হাজার সেচযন্ত্রের লাইসেন্স দেয়া রয়েছে। নতুন লাইসেন্স এর জন্য আবেদন রয়েছে প্রায় দুই হাজারের মতো। অফিসে জনবল কম থাকার কারনে এতোগুলা ফাইল একসাথে দেখা সম্ভব হচ্ছে না।

 পীরগঞ্জ ইউনিট অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী (নির্মান) নাজমুস সাদাত এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, অফিসে লোকজন কম, একসাথে অনেকগুলো আবেদন জমা হয়েছে। আমরা প্রতিটি আবেদন সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই  এবং মাঠ তদন্ত করে সেচ লাইসেন্স কমিটির কাছে সুপারিশ করি। সেই মোতাবেক সেচ কমিটির সভাপতি লাইসেন্স প্রদান করেন।

উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) মোছাঃ খাদিজা বেগম এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, দুই বছর আগের আবেদনের নাম্বারগুলো আমাকে পাঠান বিষয়টি আমি দেখবো।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth