৪ বৈশাখ, ১৪৩২ - ১৮ এপ্রিল, ২০২৫ - 18 April, 2025

" ছোট ছোট ড্রাম চিমনী স্থাপন করে ইট পুড়ছে " চিন্তিতায় দিন কাটছে কৃষকদের"

আজাদুল ইসলাম আজাদ, পীরগঞ্জ রংপুর:
3 weeks ago
44


ইটভাটা ভেঙে দিলেও বন্ধ হচ্ছে না ইট পোড়াই

রংপুরের পীরগঞ্জে অর্ধ শতাধিক ইটভাটার নেই কোনো কাগজপত্র তারপরও অধিকাংশ ভাটায় বনের কাঠ পুড়িয়ে তৈরি করছে ইট। হুমকির মুখে রয়েছে কৃষকের ফসল, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ। প্রশাসন কেবল মাত্র ৯ টি ভাটায় অভিযান পরিচালনা করেছে এর মধ্যে ৩ টি ভাটা চিমনী গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ৬ টি ভাটায় জরিমানা করা হয়েছে। চিমনী ভাঙা ভাটা গুলো ইতিমধ্যে ৩০ ফিটের  ড্রাম চিমনী দিয়ে ভাটা চালু করেছে।  

উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভার জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে গড়ে তুলেছেন অবৈধ ইটভাটা। সরকারি বিধি লংঘন করে বন (বিট) এলাকায় প্রশাসন কে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে কয়লার পরিবর্তে ভাটায় জ্বালানি কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ। তাও আবার, ৩০, ফিটের  ড্রাম চিমনী স্থাপন করে। কৃষি আবাদি জমি ঘেঁষে ইটভাটা কখন যেন ভাটার ধোঁয়া কৃষি জমিতে আচরিয়ে পরে। চিন্তায় রয়েছে ভাটা এলাকার কৃষকরা।

সম্প্রতি রংপুর জেলার প্রশাসনের উদ্যোগে গত কয়েকদিনে পীরগঞ্জ উপজেলার কুমেদপুর ইউনিয়নে ৩ টি, খালাশপীর ১ টি, চৈত্রকোল ইউনিয়নের দানিস নগর ১ টি, বাসুদেবপুট ১ টি

কাবিলপুর ইউনিয়নের জয়পুর ১ টি এবং মাদারগঞ্জ  ১ টিসহ মোট ৯ টি ইটভাটা গুড়িয়ে দেয়াসহ অর্থদন্ড করা হয়। এরমধ্যে বাসুদেবপুর আতাউর রহমান আতা সরকারি জয়পুর মতিয়ার রহমান ছোট ড্রাম চিমনী দিয়ে জোরেশোরে ইট পোড়ানোর কাজে নেমে পরছে প্রশাসনের অভিযানে পর থেকে।

অধিকাংশ ইটভাটার মালিক বলছেন, এ উপজেলায় অনেকগুলি ভাটা রয়েছে যেগুলোর কোনো কাগজপত্র নেই তার পরেও প্রশাসন কে তোয়াক্কা না করে কোমর বেধে ইট পোড়াই করছে। তাও আবার বনের কাঠ দিয়ে। প্রশাসনের অভিযানও কাজে আসছে না।

স্কুল কলেজ পড়ুয়া কোমলমতি ছেলে মেয়ারা বলছেন, কয়লার পরিবর্তে কাঠ দিয়েই অবাধে পোড়ানো হচ্ছে ইট। ভাটার ধোঁয়া পরিবেশ নষ্ট করছে এবং ভাটার কাজে নিয়োজিত গাড়ি চলাচলে ধুলাবালির কারনে সকালে শ্বাসকষ্ট জর্নিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। এছাড়াও প্রতিদিন হাজারো মাহিন্দ্র দিয়ে কৃষি জমির মাটি ভাটায় বহন করা হচ্ছে, ইটভাটাগুলো নির্বিচারে মাটি গিলে পোড়া ইট বের করছে। ইটভাটার গাড়ি স্কুল কলেজ,হাটবাজারের পরিবেশ নষ্ট করছে এবং রাস্তাঘাটের কোমর ভেঙে দাপিয়ে ছুটছে। এদের কারনে এলাকায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এসব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যেই মোবাইল কোর্ট পরিচালনার দাবি তাদের।

ভাটা এলাকার ফসল চাষিরা বলছেন, ভেঙে দেয়া ভাটাগুলো ছোট ছোট ড্রাম চিমনী দিয়ে ইট পোড়াই করছে। হঠাৎ করে আকাশ থেকে এক পশরা বা (আচার) বৃষ্টি হলে ইটভাটার  গ্যাসের সৃষ্টি হবে, আর সেই গ্যাসের প্রভাব পড়বে কৃষকের আবাদি জমিতে। ভাটা বন্ধের জোর দাবি  এলাকার চাষিদের। কৃষকের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় রয়েছে তারা।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সচেতন মহলের লোকজনরা বলছেন, অবৈধ ইটভাটা একেবারেই বন্ধ করা প্রয়োজন। ইটভাটায় অবৈধ গাড়ি গ্রাম অঞ্চলের কৃষি ফসলসহ জনসাধারণের ক্ষতি করছে। ভাটায় গাড়ি যাতায়াতের কারনে ধুলাবালি রাস্তা ঘেঁষে ঘরবাড়িগুলোর পরিবেশ একেবারেই নষ্ট  করে দিয়েছে। বাড়িঘরের আসবাপত্র,  পোশাক এবং লোকজনের পরিধানের জামাকাপড় ধুলাবালির কারনে অতিরিক্ত সাবান হুইলের খরচও বাড়ছে। ধুলাবালির কারনে রাস্তাঘাটে যাতায়াত করতে গিয়ে অনেকটাই পথ হয়রানি বাড়ছে । তাই এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানান এবং এসব অবৈধ ইটভাটা চলমানের জন্য প্রশাসনকে দায়ী করছেন।

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth