পীরগঞ্জে আগাম জাতের ইরি ধান কাটাই ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরের পীরগঞ্জে উপজেলার দিগন্ত মাঠজুড়ে আগাম জাতের ইরি পাকা ধান বাতাসে দোল খাচ্ছে। সোনালী রঙে যেন বাতাসে দুলছে ধান চাষীদের স্বপ্ন। কাক ডাকা ভোর হতে উচু জমিতে আবাদকৃত আগাম জাতের ধান পুরোপুরি পেকে যাওয়ায় ধান কাটা মাড়াই নিয়ে কৃষাণ কৃষাণিরা ব্যস্ত সময় পার করছে। বৃষ্টির ভয়ে কৃষকদের মাঝে এক অজানা ভয় কাজ করছে।
আগাম জাতের ধানের ফলন আর কৃষি মাঠে পাকা ধানের মৌ মৌ ঘ্রাণে চারিদিক বিমোহিত। চলতি মওসুমে পোকামাকড়ের বালাই অনেকটাই কম। ধান অসময়ে ফলনের কারণে উপজেলার অনেক কৃষকদের মধ্যে আগাম জাতের ধান চাষের বেশ আগ্রহ দেখা দিয়েছে। ধানের দাম বিগত সময়ের চেয়ে বেশি হওয়ায় চাষীরাও বেশ খুশি।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, উপজেলায় ইরি বোরো ধানের মধ্যে হাইব্রিড ও উফসী জাতের ধান বেশি আবাদ হয়। এছাড়াও হিরা-১, হিরা-২, সোনার বাংলা, ব্রি-ধান ২৮, ব্রি-২৯, ব্রি-৮১, ব্রি-৭৪, ব্রি-৮৯সহ স্থানীয় জাতের কিছু ধান চাষ হচ্ছে। এ বছর প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি ধান চাষ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আগাম জাতের ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। অল্প সময়ে ফলন বেশি এবং কম খরচে আগাম জাতের ধান রোপণ করে ভালো ফলন পাওয়ায় সফলতার মুখ দেখছেন কৃষকরা।
কুমেদপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান জানায়, আগাম জাতের ধান কাটা হয়েছে। রামনাথপুর গ্রামের কালাম মিয়া ও মজিদপুর গ্রামের ফুলমিয়া মিয়া বলেন, ধান কাটা মাড়াই পুরো দমে চলছে। তবে লেবার সংকটের কারনে কৃষক কিছুটা বিপাকে পড়েছে।
টুকুরিয়া ইউনিয়নের কয়লাপাড়া গ্রামের ছাত্তার মিয়া, আনোয়ার হোসেন বলেন, তারা প্রতিবছর আগাম জাতের ইরি ধানের চাষাবাদ করে আসছেন। সেচ পাম্পে পানি সেচ দিয়ে ইরি ধান চাষ করেছেন তারা খরচ একটু বেশি হলেও ধানের ভালো দাম থাকায় কৃষকরা বেশ খুশি। মাঝে মাঝে বৃষ্টির কারণে গো-খাদ্য খড় নিয়ে চিন্তায় পড়তে হচ্ছে কৃষকদের।
তাছাড়া নতুন ধানের চাল বাজারেও অনেক চাহিদা রয়েছে। এসব ধান কেটে দ্রুত অন্যান্য ফসলের আবাদ করতে পারবে তারা। বর্তমানে কৃষকদের মাঝে এ ধান চাষের ব্যাপক চাহিদা বাড়ছে। তবে আগাম জাতের ধানের উপর পাখিদের নজর বেশি। বাবুইসহ কয়েক প্রকারের পাখি ঝাঁকে ঝাঁকে পাকা ধান ক্ষেতে আসে। এগুলো তাড়াতে বাড়তি পরিশ্রমও করতে হয়। অনেকে বাড়তি খরচ করে জমির উপর জাল টানিয়ে দেয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার বলেন, ইরি ধান উৎপাদন বাড়াতে কৃষদের মাঠ পযায়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে ব্যাপক ধারণা প্রদান করা হয়েছে। এবার রোগ বালাই কম থাকাই কৃষকরা ইরি ধান চাষ করে আথিক ভাবে লাভবান হবে।