পীরগাছায় শিক্ষার্থী উপস্থিত হলেও শিক্ষক অনুপস্থিত

তাম্বুলপুর দাখিল মাদ্রাসা
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরের পীরগাছার এক মাদ্রাসায় সঠিক সময়ে শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হলেও শিক্ষকগণ নিয়মিত সঠিক সময়ে অনুপস্থিত থাকেন। সুপার রনজিনা বেগমের দায়িত্বে অবহেলা, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের কারলে প্রতিষ্ঠানটির বেহাল দশা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে গত রোববার(১৮ মে) সকাল ১১.২০ ঘটিকায় গিয়ে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র, ক্লাসের বাইরে সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ঘোরাফেরা করছেন। সপ্তম শ্রেণীর ক্লাস ১০.৩০ মিনিটে শুরু হওয়ার কথা থাকলে ১১.২০ মিনিট পর্যন্ত শ্রেনী শিক্ষক মাওলানা মোকাদ্দেস অনুপস্থিত রয়েছে। একই সাথে নবম ও অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা বাইরে মাঠে খেলছে। তখন পর্যন্ত নবম শ্রেনীর প্রথম ক্লাসের শিক্ষক এমদাদুল হক ও অষ্টম শ্রেনী শিক্ষক আশরিফা আক্তার অনুপস্থিত। ওই সময়ে প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে থাকা তাম্বুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এর আমীর শিক্ষানুরাগী বজলুর রশিদ মুকুল একাধিক শিক্ষক অনুপস্থিত থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। পরে অফিস রুমে গিয়ে দেখা যায় সুপার রনজিনা বেগম অনুপস্থিত। হাজিরা খাতার স্বাক্ষর অনুযায়ী প্রায় ১০ জন শিক্ষক-কর্মচারী অনুপস্থিত রয়েছে। কিছুক্ষণ পরে মাদ্রাসায় সহকারি শিক্ষক আশরিফা আক্তার উপস্থিত হয়ে বলেন, আমি পরীক্ষার কেন্দ্রে বিশেষ কারণে গিয়েছিলাম। তিনি অষ্টম শ্রেণী শিক্ষক প্রথম ক্লাশ বাংলাদেশ ও বিশ্ব:পরিচয় রয়েছে। ওই ক্লাসের শিক্ষার্থী আনিছুর রহমান জানান, তাদের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো টিফিনের পর নেওয়ায় সেগুলো বিষয় ঠিকমতো হয়না। তাই আমরা হতাশায় ভূগতেছি।
একাধিক শিক্ষক ছুটিতে আছে কিনা তা জানতে সুপার রনজিনা বেগম এর মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন, আমি মাদ্রাসার অফিসে আছি আপনি আসেন। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আমি অফিসে আছি বললে তিনি বলেন আমি একটু বাইরে আছি, আসতেছি। সুপার এর সাথে স্বাক্ষাতে কথা হলে বিভিন্ন তথ্যের বিষয় জানতে চাইলে তিনি পীরগাছা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন।
তথ্যে জানা যায়, তাম্বুলপুর দাখিল মাদ্রাসার এবতেদায়ী শাখায় কোন শিক্ষর্থী নেই। তবে ভূয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে বই উত্তোলন করেন।
শিক্ষার্থী না থাকায় উত্তোলন কৃত সরকারি বই বিক্রয় করেছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারি শিক্ষক জানান। মাদ্রাসায় নবম শ্রেণী উপস্থিত শিক্ষার্থী ৬ জন, অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ১৬ জন, সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ৩০ জন, ষষ্ট শ্রেণীর শিক্ষার্থী ১৯ জন এবং দশম শ্রেনীতে ৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। কাগজে-কলমে ২শ ১জন শিক্ষার্থী হলেও বাস্তবে মাত্র ৬৭ জন উপস্থিত হয়েছে। গত শনিবার(১৭ মে) মাদ্রাসা পরিচালনার নির্দেশ থাকলেও সুপার নিয়মের তোয়াক্কা না করে প্রতিষ্টান বন্ধ রাখেন। এছাড়া মাদ্রাসা কোন এ্যাসেম্বলি হয়না বলে একাধিক শিক্ষার্থী ও সহকারি শিক্ষকগণ জানান।
পীরগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার(অতিঃদাঃ) মো: আব্দুল মোমিন মন্ডল এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি বিষয়টি ইউএনও মহোদয়ের মাধ্যমে জেনেছি, আমি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।