৩ আষাঢ়, ১৪৩২ - ১৭ জুন, ২০২৫ - 17 June, 2025

রাজারহাটে কোমড় পানিতে নেমে ধান কাটছে কৃষকরা, তলিয়ে আছে বাদামসহ রবিশষ্য

3 weeks ago
54


রাজারহাট(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:  

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে বেশ কয়েকদিন ধরে ভারি বর্ষণে মাঠ-ঘাট, খাল বিল পানিতে থৈ থৈ করছে। ডুবে গেছে উঠতি ইরি-বোরো ধানক্ষেতসহ চরাঞ্চলের বাদাম, পাট ও রবিশষ্য। নিম্নাঞ্চলে উঠতি ইরি-বোরো ধান পানির নীচে তলিয়ে যাওয়ায়  কৃষকরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। কয়েকদিন ধরে ধানক্ষেত পানির নীচে থাকায় পচন ধরেছে ধান গাছগুলোতে। তারপরও ধানের আশায় কৃষকরা কোমড় পানিতে নেমে ধান কাটছে শ্রমিকদের দিয়ে। এবারে ধান-চালের পাশাপাশি ধানের খড়ে পচন ধরায় গো-খাদ্যের সংকট মারাত্মক আকার ধারন করবে বলে আশংকা করছে কৃষকরা।

অপরদিকে তিস্তার চরাঞ্চলে পানি জমে যাওয়ায় ডুবে যাওয়া ক্ষেতের অপরিপক্ক বাদামও রবিশষ্য তুলে নিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। আলুর পর বাদামেও মারাত্মক ক্ষতির লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের বলে সচেতনমহল মন্তব্য করেছেন। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শনিববার(২৪ মে) সকালে উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের চাকিরপশার পাঠক গ্রামের নিম্নাঞ্চল পানিতে থৈ থৈ করছে। ডুৃবে গেছে উঠতি ইরি-বোরো ধান ক্ষেত। এসব এলাকা দেখে মানুষ হা নিশ্বাস ফেলছে। প্রকৃতির বৈরি আবহাওয়ায় এবারে কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মূখীন হয়েছেন বলে অনেকে মন্তব্য করেন। কৃষক মানিক মিয়া(৪৫) বলেন, ৫একর জমিতে ইরি-বোরো ধান লাগিয়েছি। ফলনও বেশ ভাল হয়েছিল। কিন্তু কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টির কারণে সব ধানক্ষেত পানির নীচে রয়েছে। শ্রমিকও পাওয়া যায় না।

একই এলাকার কৃষক হান্নান জানান, ২একর জমির ধান পানির নীচে রয়েছে। কামলা পাওয়া না যাওয়ায় নিজেই কোমড় পানিতে নেমে ধান কাটছি।

কৃষক আঃ আউয়াল বলেন, বেশী দামে শ্রমিক নিয়ে পানির নীচের ধান কেটে নিচ্ছি। কয়েকদিন পানির নীচে থাকায় প্রায় সব ধান পড়ে গেছে।

বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর পানি বেড়ে গিয়ে চরাঞ্চল ডুবে গেছে। কৃষকরা তাদের অপরিপক্ক বাদাম মরিচসহ বেশ কয়েকটি ফসল পানি থেকে টেনে তুলছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি ইরি-বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২হাজার ২শ ৪৫ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ১২হাজার ২শ ৫০হেক্টর, পাট ৩শ ৯২ হেক্টর,  তিস্তা নদীর চরে চিনাবাদম ১৭৫ হেক্টর, পাট ২০ হেক্টর,  মরিচ ৩ হেক্টর, শাক-সবজি ৫ হেক্টরসহ চাষাবাদ করা হয়। কিন্তু কয়েকদিনের মাঝারি ও ভারি বৃষ্টি হওয়ায়  নিম্নাঞ্চল, খাল-বিলের উঠতি ইরি-বোরো ধান ও রবিশস্য পানিতে তলিয়ে যায়।

বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চর বিদ্যানন্দ গ্রামের কৃষকরা বলেন, পানিতে তলিয়ে যাওয়া চিনাবাদাম ও কাউন উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। 

অনেক কৃষক অভিযোগ করেন, চরের অনেকই ধারদেনা করে চাষাবাদ করেছেন। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তারা কি দিয়ে দেনা পরিশোধ করবেন সে আশংকায় রয়েছেন।

শনিবার(২৪মে) দুপুরে রাজারহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুরন্নাহার সাথী বলেন, বেশ কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টির কারণে নিম্নাঞ্চলগুলো ডুবে গেছে। বদ্ধ পানির কারণে সাময়িক উঠতি ফসল ধান-বাদামের অল্পকিছু ক্ষতি হলেও বড় ধরনের তেমন ক্ষতি হবে না।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth