২৫ আষাঢ়, ১৪৩২ - ০৯ জুলাই, ২০২৫ - 09 July, 2025

তীব্র গরমে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ ফুলছড়ির পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা

3 weeks ago
45


আমিনুল হক, ফুলছড়ি (গাইবান্ধা):

দেশজুড়ে চলমান তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এর মধ্যে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে পরিস্থিতি আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দিনে ও রাতে একাধিকবার এবং কখনো কখনো ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এতে শিক্ষার্থী, রোগী, শিশু, বৃদ্ধ, কৃষক ও ব্যবসায়ীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কালিরবাজার সাব-জোনাল অফিসের অধীন ফুলছড়ি উপজেলার প্রায় ২৪ হাজার গ্রাহক এই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিনে অন্তত ছয় থেকে সাতবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। কখনো টানা ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতাল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কৃষিকাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। গত কয়েকদিনে এ অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে।

বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্যান, ফ্রিজ, পানির পাম্পসহ ঘরের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম অকেজো হয়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ব্রয়লার মুরগির খামারিরা। খামারিরা জানান, তীব্র গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় মুরগি মারা যাওয়ার ঝুঁকি থাকায় তারা বাধ্য হয়ে কম দামে মুরগি বিক্রি করছেন, এতে তাদের মারাত্মক আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।

উদাখালী ইউনিয়নের পূর্ব ছালুয়া গ্রামের বাসিন্দা ও কলেজের প্রভাষক ছায়দার রহমান বলেন, ‘দিনে অন্তত ছয়–সাতবার বিদ্যুৎ যায়। রাতে ঠিকমতো ঘুমানো যায় না। এই গরমে বিদ্যুৎ না থাকলে বাঁচা দায় হয়ে দাঁড়ায়।’

স্থানীয় ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ফ্রিজে রাখা আইসক্রিম আর কোমল পানীয় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিকেলের সময়টাতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়, তখনই বিদ্যুৎ চলে যায়।’

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাইবান্ধা জেলার মুখপাত্র জাহিদ হাসান জীবন বলেন, ‘জেলার অন্যান্য এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ মোটামুটি স্বাভাবিক থাকলেও ফুলছড়িতে ঘন ঘন লোডশেডিং দেওয়া হয়। বিশেষ করে রাতের বেলায় বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষ ঠিকমতো ঘুমাতে পারে না। এটা চরম বৈষম্যের শামিল। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এলাকাবাসী রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।’

এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কালিরবাজার সাব-জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) অভিজিত নাগ বলেন, ‘আমাদের অধীনে ২৪ হাজার গ্রাহক রয়েছে। লাইনের কোনো সমস্যা হলে তা আমরা সমাধান করি। কিন্তু গ্রিডে সরবরাহ কম থাকলে লোডশেডিং দিতে হয়। কেন্দ্র থেকে সময় ভাগ করে বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চেষ্টা করছি, যতটা সম্ভব সমন্বয় রেখে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে।’

 

এ অবস্থায় পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা অবিলম্বে লোডশেডিং কমিয়ে স্বাভাবিক সরবরাহ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন। তা না হলে তারা আন্দোলনের পথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth