২৫ আষাঢ়, ১৪৩২ - ০৯ জুলাই, ২০২৫ - 09 July, 2025

জুয়েলর বাবা-মা’র সরকারি সকল অনুদান ও ভাতার সমবন্ঠন দাবী

1 week ago
81


কর্মক্ষম সন্তানকে হারিয়ে অভাব অনটনে দিন কটছে শহীদ

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি :

সন্তানের ছবি বুকে নিয়ে এখনও স্মৃতি হাতরে বেড়ান, ফ্যাসিস শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আন্দোলনে, গুলি বিদ্ধ হয়ে নিহত গোবিন্দগঞ্জের যুবক জুয়েল রানার (২৭)  বৃদ্ধ বাবা-মা। জুলাই থেকে অগষ্ট পর্যন্ত  নিজের কাজের ফাঁকে ফাঁকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার ডাকে সারা দিয়ে সফিপুর আনসার ক্যাম্প এলাকায় নিয়মিত মিছিল মিটিংয়ে মাঠে ছিল সে। ২০২৪ সালের  ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনার পতনের দিন মিছিল করার সময় গুলি বিদ্ধ হয়ে শহীদ হয় জুয়েল ।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শালমারা ইউনিয়নের  শাখাহাতী গ্রামের  মমতাজ উদ্দন ব্যাপারী আর জমিলা বেগম দপ্ততির পুত্র জুয়েল রানা।  মমতাজ জমিলা দম্পতির দুই পুত্রের ,মধ্যে ছোট ছিল জুয়েল রানা। সেই তার বাবা-মাকে ভরন পোষন সহ সংসার চালাতে যাবতীয় দরকারি সহায়তা দিত। ছেলেকে বিয়ে দিয়েছিলেন পাশের গ্রামে। এক সময় ছেলে জীবিকার টানে ঢাকা গিয়ে পোষাক তৈরীর কারখানায় চাকুরী নেয়। দুই কন্যা সন্তানের পিতা  জুয়েল।বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়াও দুই ঈদে বাড়ী আসত সপরিবারে।  তার ইচ্ছে ছিল মেয়েদের পড়ালেখা শেষ হলেই  বাড়ী ফিরবে । নিজের টিনের ঘরটি সরিয়ে ইট দিয়ে ঘর দিবে । সাথে বাবা মা’র থাকার রুম টাও পাাকা করবে। কিন্তু, তার শেষ ইচ্ছে তার পুরন হয়নি।  ৫ আগষ্ট  মিছিলে  পুলিশের বৃষ্টির মত গুলি তার সে স্বপ্ন  মূহর্তে মিশে যায়।গুলিতে  সড়কে লুটিয়ে পড়া জুয়েলকে সহযোদ্ধারা হাসপাতালে নিয়েছিল কিন্তু  তাদের সব চেষ্ঠাই ব্যার্থ করে এক বুক স্বপ্ন নিয়ে জুয়েল না ফেরার শেষে চলে যায়। তবে তার নিথর দেহটা যেন সেই সব সাধ পূরণ করতে বাড়ী এসেছিল কফিন বন্দি হয়ে। সন্তানের লাশ কবরে নামিছে বৃদ্ধ পিতা মমতাজ ব্যাপারী। এযে কতবড় কষ্টের  নিজ ঘরের বারান্দার জল চকির ওপর বসে তারই বর্ণনা দিচ্ছিলেন তিনি।

জয়েল রানা মা  জমিলা বেগম বলেন, জুয়েলের নিহত হওয়ার পর অনেক সুবিধা এসেছে কিন্তু সে সুবিধা গুলো  তারা সঠিক ভাবে পায়নি। কারন জুয়েলের মরদেহ দাফনের দুই দিন পর তার স্ত্রী দুলালি বেগম দুই নাতনিকে নিয়ে পিতার বাড়ী চলে যায়।  যদিও এখন সে গাজীপুরের পল্লিবিদ্যুৎ এলাকায় একটি গার্মেন্টে কাজ করছেন। আর পাশেই একটি বাসায় বসবাস করছে জুয়েলের বড় মেয়েকে সাথ নিয়ে ।  ছোট মেয়েটিকে রেখে গেছে তার নানার বাড়ীতে। তিনি বলেন  সন্তান হারানো দু:খ বড় কঠিন। তারপরেও যদি মাঝে মধ্যে ওর সন্তান দুটোকে দেখতে পেলে কিছুটা হলেও শান্তি পেতাম। তার আর হয়ে ওঠে না এই দম্পতির। দুর থেকেই দোয়া করি ওরা যদি ভাল থাকে কোন দু:খ নেই। তবে সরকারের কাছে তার আবেদন পুত্রকে আর ফিরে পাবনা। যেহেতু সারা দেশে জুলাই যোদ্ধাদের সরকার নানা ভাবে সহযোগিতা দিচ্ছে। শহীদ জুলাই যোদ্ধার বাবা-মা হিসেবে সেই প্রাপ্যটা যেন সঠিক ভাবে পাই। অথাৎ সরকারি ভাবে যে অনুদান ও ভাতা আসবে তার যেন সমবন্ঠন করা হয়।

 শালমারা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মাস্তফা কামাল বলেন ইউনিয়ন বিএনপি;র সাংগঠানিক সম্পাদক জুয়েল রানা ৫ আগষ্ট স্বৈরচারী শেখ হাসিনার দোসরদের গুলিতে শহীদ হয়। তার পরিবার অত্যন্ত গরীব তার বাবা-মা আছে।  সংসার চলতো জুয়েলের আয়ে। কিন্ত এখন সে আয় বন্ধ হওয়ায় খুব কষ্টে রয়েছে পরিবারটি। সরকারি ভাবে যে সুযোগ সুবিধা গুলি আসে তা যেন সমবন্ঠনের মাধ্যমে স্ত্রী, সন্তান এবং  বৃদ্ধ-বাবা-মা পায় সে ব্যাপারে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি দেয়ার এই দাবী জানাচ্ছি।

শালমারা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম বলেন,শহীদ জুয়েলের সরকারিভাবে যে অর্থ ও সুযোগ সুবিধা আসবে তা যেন সমবন্ঠণের মাধ্যমে শহীদ জুয়েল রানার বাবা-মা,তার সন্তান এবং যেন সমবন্ঠন পায় সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যে সহায়তা দেয়া দরকার তা অব্যহত থাকবে।

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth