নিজস্ব গ্র্যাজুয়েটদের চাকরিতে অগ্রাধিকার চেয়ে উপাচার্যের বরাবর স্মারকলিপি
বেরোবি প্রতিবেদক :
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদে নিয়োগে অগ্রাধিকার চেয়ে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর দেয়া এ স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ ১৭ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়টি হাজার হাজার গ্র্যাজুয়েট প্রস্তুত করলেও খুব কমসংখ্যক শিক্ষার্থী নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির সুযোগ পেয়েছেন। বরং বাইরের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধিক সংখ্যক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা এখানকার শিক্ষার্থীদের প্রতি চরম বৈষম্যের বহিঃপ্রকাশ।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এখানকার শিক্ষার্থীরা নানা প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। অনেকেই উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। তবুও নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের জন্য কোনো নিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়নি।
শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব শিক্ষার্থীদের শিক্ষক ও কর্মকর্তা নিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। কিন্তু বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন সংস্কৃতি অনুপস্থিত। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা ও বঞ্চনার বোধ বাড়ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও গবেষণাকে এগিয়ে নিতে হলে এখানকার পরিবেশ, সংস্কৃতি ও বাস্তবতা সম্পর্কে ভালোভাবে জানা এবং বোঝা মানুষের প্রয়োজন, যা এখানকার শিক্ষার্থীদের মধ্যেই রয়েছে। তাই স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, নিজস্ব শিক্ষার্থীদের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদে নিয়োগ প্রদান করা হলে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাহেদ বলেন,
‘আমরা যারা এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছি বা এখনো করছি, তাদের অনেকেরই স্বপ্ন থাকে একদিন নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা কিংবা প্রশাসনিক কোনো পদে কাজ করার। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বেরোবির অনেক বিভাগেই শিক্ষক ও কর্মকর্তা পদে আমাদের জায়গা হচ্ছে না। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সহজেই নিয়োগ পাচ্ছেন, অথচ আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও হতাশাজনক। আমরা চাই, আমাদের যোগ্যতা বিবেচনায় নিয়ে অন্তত কিছুসংখ্যক পদে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হোক।’
সাবেক শিক্ষার্থী মুবিন বলেন,
‘বহু কষ্ট করে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছি। নিজ প্রতিষ্ঠানে কাজ করার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখছি—আমাদের কোনো মূল্যায়ন নেই। চাকরির বিজ্ঞপ্তি আসে, আমরা আবেদন করি, কিন্তু নির্বাচিত হই না। অথচ বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটরা সহজেই নিয়োগ পাচ্ছেন। এতে আমাদের মধ্যে হতাশা তৈরি হচ্ছে। আমরা চাই, অন্যদের মতো আমরাও যেন নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যায্য সুযোগ পাই।’
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্তব্য দিতে রাজি হননি। ‘মিটিংয়ে আছি’ বলে সংক্ষিপ্তভাবে জানিয়ে ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।