১৩ বৈশাখ, ১৪৩১ - ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ - 26 April, 2024
amader protidin

‘জার বাতাস শরীর ভেদ করে হাড্ডিখানত নাগেছে’

আমাদের প্রতিদিন
1 year ago
214


পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

হিম শীতল বাতাস আর জারের (ঠান্ডার) তানে ঘর থাকি হামরা বের হবা পারি না। সকাল আর সন্ধ্যায় সময় থাকা জার বাতাস শরীর ভেদ করে হাড্ডিখানত নাগেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার করুণ সুরে কথাগুলো বলেন পঞ্চগড়  সদর উপজেলার কামাতপাড়া গ্রামের মফিজ উদ্দীন উদ্দীন (৬০)। শুধু মফিজ নন, এমন অবস্থা এলাকার অনেকের। হিম বাতাস আর হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলাবাসীর জীবনযাত্রা। পঞ্চগড় সদর উপজেলার হেলিপ্যাড গ্রামের শিরীন ও মালেকা বেগম বলেন, গত কদিন ধরে চলা তীব্র শীতে শরীর নিস্তেজ হয়ে আসছে। সকালে ঘরের বাইরে বের হতে কষ্ট হচ্ছে। ভ্যানচালক মতি জানান, ঘন কুয়াশা আর প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে ভ্যান চালাতে খুব কষ্ট হয়। শীতে যাত্রীরা বের হয় না। ভাড়া পাওয়া যায় না। আয়-রোজগার কমে গেছে। পঞ্চগড় বিপি সরকারি  উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাগীব শাহারীয়ার রিফাত বলেন, তীব্র ঠান্ডার কারণে সকালে স্কুলে যেতে সময়মতো রিকশা ভ্যান পাওয়া যায় না। এই শীতে হেঁটে পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে।

মাটি কাটা শ্রমিকরা। মাটিকাটা শ্রমিক হালিম ও মনছুর বলেন, পেটের ভোগ ঠান্ডা মানে না বারে। ঠান্ডা আর বাতাসের সঙ্গে লড়াই করেই হামাক বাঁচিবা লাগে। হামাক কাহ একটা শীতবস্ত্র দিবার আসেনি। হামরা ঠান্ডায় কষ্টা পাছি।

এ দিকে তীব্র শীতের কারণে শীতজনিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। সকালে পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালে সর্দি, জ্বর, কাশি ও কোল্ড ডায়রিয়ার উপস্বর্গ নিয়ে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে ভিড় করছেন।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মো. মনোয়ারুল হোসেন সময় সংবাদকে বলেন, তীব্র ঠান্ডার কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ সময় সংবাদকে জানান, গত কয়েকদিন থেকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ দিকে জেলার দুস্থ ও শীতার্ত মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বেশকিছু বেসরকারি সংস্থাগুলো শীতবস্ত্র বিতরণ করলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়