১৩ বৈশাখ, ১৪৩১ - ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ - 26 April, 2024
amader protidin

আমদানীর আভাষেই কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম

আমাদের প্রতিদিন
11 months ago
221


দিনাজপুর প্রতিনিধি:

ভারত থেকে বন্ধ রয়েছে পেঁয়াজ আমদানী। এই সুযোগে বাজারে হু হু করে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। এরই মধ্যে পেঁয়াজ আমদানীর আভাষ পাওয়ায় অবশেষে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর ও দিনাজপুর শহরে একদিনের ব্যবধানেই কেজিতে ৫ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম। এদিকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানীর জন্য প্রস্তুত রয়েছে হিলি স্থলবন্দরের আমদানীকারকরা।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাযায়, কৃষকদের ন্যায্যমুল্য নিশ্চিত করতে গত ১৫ মার্চ থেকে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানী বন্ধ করে সরকার। ফলে হিলি স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দর দিয়ে বন্ধ হয়ে যায় বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানী। নির্ভরশীল হয়ে ওঠে দেশীয় পেঁয়াজের ওপর। কৃষকদের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ও মজুদদারদের হাতে চলে যাওয়ায় বাজারে ইচ্ছামতো দাম বাড়াতে শুরু করে ব্যবসায়ীরা। ভরা মৌসুমে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২৫ টাকা দরে বিক্রি হলেও তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। বাজারে অস্বাভাবিকভাবে দাম বৃদ্ধি শুরু হওয়ায় গতকাল রোববার কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার ঘোষনা দেন, এভাবে দাম বাড়তে থাকলে পেঁয়াজ আমদানীর অনুমতি দেয়া হবে।

এই ঘোষনার প্রেক্ষিতে গতকাল রোববার থেকেই বাজারে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের পাইকারী বাজারে শনিবার (১৩ মে) প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হলেও একদিনের ব্যবধানে গতকাল রোববার (১৪ মে) বিক্রি হয় ৬০ টাকা কেজি দরে।

আজ রোববার বিকেলে হিলি স্থলবন্দরের পাইকারী পেঁয়াজ বিক্রেতা আবু তাহের হোসেন বলেন, লোকমুখে শুনছি-ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হবে। এমন খবরে মোকামে দাম কমেছে। আজকে (রোববার) কেজিতে ৫ টাকা কমে দেশীয় পেঁয়াজ বিক্রয় হচ্ছে ৬০ টাকায়। যা শনিবার বিক্রয় করেছি ৬৫ টাকা কেজি দরে।

দিনাজপুর শহরের বাহাদুরবাজার এলাকার পাইকারী পেঁয়াজ বিক্রেতা মাজেদুর রহমান জানান, তিনি আজ  (রোববার) নাটোর থেকে এক ট্রাক পেঁয়াজ নিয়ে এসেছেন। দাম কমেছে। শনিবার প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা দরে বিক্রি করলেও গতকাল রোববার প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ৬০ টাকা দরে। আগামীকাল সোমবার দাম আরও কমতে পারে বলে জানান তিনি।

এদিকে বাজারেও কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। বাহাদুরবাজারের খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা থেকে নেমে গতকাল রোববার বিক্রি হয় ৬০ টাকায়।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানী-রপ্তানীকারক গ্রæপের সভাপতি হারুনর রশিদ জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানীর ব্যাপারে আলাপ আলোচনা চলছে। হিলি স্থলবন্দরের আমদানীকারকরাও প্রস্তুত আছেন। অনুমতি পেলেই ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানীর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। 

অন্যদিকে পেঁয়াজের পাশাপাশি হিলি স্থলবন্দরে কমতে শুরু করেছে কাঁচা মরিচের দাম। একদিনের ব্যবধানে হিলিতে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম কমেছে ২০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক সপ্তাহ আগেও বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম থাকায় কাঁচা মরিচ পাইকারী বাজারে বিক্রি হয়েছিল ১২০ টাকা কেজি দরে। আজ রোববার (১৪ মে) সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় কেজিতে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফরহাদ নামে এক জন ক্রেতা বলেন, শনিবারে মরিচ ১২০ টাকা কেজি কিনেছি। আজ রোববার হাটবার ১০০ টাকা কেজিতে কিনলাম।

কাঁচা মরিচ বিক্রেতা বিপ্লব শেখ বলেন, কাঁচা পণ্য সকালে বাড়ে বিকেলে কমে। আমরা বেশি দামে কিনলেই বেশি বিক্রি করি, আবার কম দামে কিনলে কম দামেই বিক্রি করে থাকি। সরবরাহ বেশি থাকলে দাম কিছুটা কম হয়।

তিনি বলেন,বগুড়া-পঞ্চগড়, ডোমার,নীলফামারীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কাঁচা মরিচের আবাদ বাড়লেও তীব্র তাপদাহের কারণে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কমছিলো। সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় কাঁচা মরিচের দাম কমতে শুরু করছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গতকাল রোববার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ সংক্রান্ত এক সভায় শিগগিরই পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার। তিনি বলেছেন, উৎপাদন ও মজুত বিবেচনায় দেশে এই মুহূর্তে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। অথচ বাজারে দাম কিছুটা বেশি। কৃষি মন্ত্রণালয় বাজার পর্যবেক্ষণ করছে। দাম বাড়তে থাকলে শিগগিরই পেঁয়াজ আমদানির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

 

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়